Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Sandpaper Gate Scam

ধ্যান আর মনোবিদে প্রত্যাবর্তন স্মিথদের

বল বিকৃতি কাণ্ডের আগেও স্টিভ স্মিথ এবং ডেভিড ওয়ার্নারের দক্ষতা নিয়ে কারও মনে কোনও সংশয় ছিল না।

সাক্ষী: বিমর্ষ স্মিথদের ঘুরে দাঁড়াতে দেখেছেন শ্রীরাম। ফাইল চিত্র

সাক্ষী: বিমর্ষ স্মিথদের ঘুরে দাঁড়াতে দেখেছেন শ্রীরাম। ফাইল চিত্র

কৌশিক দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২০ ০৩:৫৯
Share: Save:

বল বিকৃতি কাণ্ড থেকে স্টিভ স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নারদের রূপকথার প্রত্যাবর্তন। কলঙ্কের ছায়া থেকে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের বেরিয়ে আসা। সব কিছুই খুব কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। সেই অস্ট্রেলিয়া দলের স্পিন বোলিং পরামর্শদাতা শ্রীধরন শ্রীরাম খোলামেলা সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজারকে। যেখানে উঠে এল স্মিথ-ওয়ার্নার প্রসঙ্গ থেকে করোনাভাইরাস আতঙ্ক— সব কিছুই।

সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: আমার কাছে কোচিং জীবনের সব চেয়ে বড় পরীক্ষার মুহূর্ত ছিল যখন জাস্টিন ল্যাঙ্গার অস্ট্রেলীয় দলের নতুন কোচ হয়ে এলেন (২০১৮ সালে বল বিকৃতি কাণ্ডের পরে ড্যারেন লেম্যানের জায়গায়)। ল্যাঙ্গারের সঙ্গে প্রথমেই আমি যাই ইংল্যান্ডে। ল্যাঙ্গারকে আগে থেকে জানতাম না। তাই প্রচণ্ড নার্ভাস ছিলাম। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত আমাদের জুটি সফল হয়েছে। পরিকল্পনা মতো আমরা এগোতে পেরেছি।

স্মিথ-ওয়ার্নার কাহিনি: বল বিকৃতি কাণ্ডের আগেও স্টিভ স্মিথ এবং ডেভিড ওয়ার্নারের দক্ষতা নিয়ে কারও মনে কোনও সংশয় ছিল না। সবাই জানত, ওরা কত বড় ক্রিকেটার। দীর্ঘদিন ধরে ক্রিকেট খেলেছে। খেলাটার সব কিছুই ওদের হাতের তালুর মতো চেনা। আমরা ভাল করেই জানতাম, ওরা ফিরে আসবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা। ঠিক তাই হল।

ওয়ার্নারদের লড়াই: ওই পরিস্থিতিতে ফিরে আসার মুখে যে কোনও ক্রিকেটারই নার্ভাস থাকবে। স্মিথ-ওয়ার্নারও ছিল। কিন্তু আমাদের কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার দারুণ একটা পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছিলেন ড্রেসিংরুমে। দলে ওদের প্রত্যাবর্তনের রাস্তাটা তাই মসৃণ ছিল। শুধু কোচই নন, আমাদের দলের বাকি ক্রিকেটারও স্মিথ-ওয়ার্নারকে স্বাগত জানিয়েছিল মন থেকে। ফলে দলের সঙ্গে ওদের মিশে যেতে কোনও সমস্যাই হয়নি।

দর্শক-রোষ সামলানো: কোনও সন্দেহ নেই, ফিরে আসার পরে মাঠে নেমে ওদের চূড়ান্ত দর্শক বিদ্রুপের মুখে পড়তে হয়েছে। আমি সেটা দেখেওছি। কিন্তু এটাও দেখেছি, কী ভাবে ওরা সেই বিদ্রুপ সামলে পারফর্ম করে গিয়েছে। ওদের নিজস্ব একটা পদ্ধতি তো ছিলই। তা ছাড়া আরও একটা ব্যাপার আছে। অস্ট্রেলীয় বোর্ডের মনোবিদ ডক্টর মাইকেল লয়েড এবং তাঁর দল খুব সাহায্য করেছিল। এই মনোবিদ দলটা খুবই ভাল। ওদের পরামর্শ কাজে দিয়েছে। তা ছাড়া ওরা দু’জনই নিয়মিত ধ্যান করে। মানসিক কাঠিন্য বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছে। আর তা ছাড়া ওদের মানসিক শক্তি এবং ফিরে আসার জন্য যে তীব্র আকাঙ্ক্ষা— সেটাও স্মিথ-ওয়ার্নারদের ওই কঠিন সময়ে সাহায্য করেছে।

করোনা আতঙ্কের ধাক্কা: নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাঁকা মাঠে যে ম্যাচটা হয়েছিল, তখন আমি দলের সঙ্গে ছিলাম না। দেশে ফিরে এসেছিলাম। তার পরে তো এখন সব বন্ধ। এই মুহূর্তে সারা পৃথিবীর যা অবস্থা, তাতে খেলাধুলো কখনওই প্রাধান্য পেতে পারে না। এটা অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটাররা সবাই বোঝে। ওরা যথেষ্ট পরিণত। শুধু নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রাখাই নয়, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বোধ বাড়াতেও ক্রিকেটাররা চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর আমি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর ফাঁকে নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করছি।

অস্ট্রেলিয়ার স্পিন-কথা: হ্যাঁ, আমাদের হাতে এখন অনেক দারুণ, দারুণ, স্পিনার আছে। নেথান লায়ন, অ্যাডাম জ়াম্পা, অ্যাশটন অ্যাগারের মতো। আমার ভাগ্য ভাল, ওদের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা খুব ভাল। তাই কাজ করতে সমস্যা হয় না। আমি ওদের বোলিংয়ের খুঁটিনাটি জানি। কী করলে ওদের বোলিং আরও ধারালো হবে, সেটা ওদের বোঝাই। প্রত্যেক সিরিজের আগে আলাদা করে প্রস্তুতি নিই। এ ছাড়া ট্রয় কুলি, ক্রেগ হাওয়ার্ডরাও অ্যাকাডেমিতে দারুণ কাজ করছে। ভিডিয়ো অ্যানালিস্টদের কাছ থেকেও প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছি সব সময়। অস্ট্রেলিয়ার স্পিন বোলিং উত্থানের পিছনে একটা ভাল সাপোর্ট টিম কাজ করছে।

লাবুশেনের বিস্ময়-ব্যাটিং: মার্নাস লাবুশেন সব সময় রান করার জন্য ক্ষুধার্ত। ওর এই রান-খিদে দেখলে অবাক হয়ে যেতে হয়। স্পিনের বিরুদ্ধে খুব ভাল ব্যাট করে ও। লাবুশেন সব সময় ব্যাটিং নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে ভালবাসে। নতুন, নতুন জিনিস কাজে লাগাতে ভয় পায় না। এই গুণটা কিন্তু খুব কম ক্রিকেটারের মধ্যেই দেখা যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Sandpaper Gate Scam Australia Cricket
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE