বিতর্ক: সেই ম্যাচে অ্যানফিল্ডে গ্যালারিতে উপচে পড়া দর্শক। ফাইল চিত্র
গত মার্চে হওয়া দু’টি খেলার জন্যই ইংল্যান্ডে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এতটা তীব্র হয়েছে এবং অনেক মানুষ মারা গিয়েছেন। ইংল্যান্ডে মারণ-ভাইরাস নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এমন এক বিজ্ঞানী, অধ্যাপক টিম স্পেক্টর প্রচুর তথ্যের নিরিখে এমনটাই সিদ্ধান্তে এসেছেন। যে দু’টি খেলাকে তিনি চিহ্নিত করেছেন তার একটি হল গ্লস্টারশায়ারের বিখ্যাত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা ‘চেল্টেনহ্যাম ফেস্টিভ্যাল’ (১৬ মার্চ থেকে ১৯ মার্চ, মোট চার দিন ধরে চলেছিল) এবং অন্যটি অ্যানফিল্ডে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুল-আটলেটিকো দে মাদ্রিদ ম্যাচ। স্পেক্টরের বক্তব্য, এই দু’টি খেলার জন্য করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে যায় এবং যার পরিণতি প্রচুর জীবনহানি।
ব্রিটিশ সরকারও এখন বিজ্ঞানী টিমের মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। মার্চের শুরুতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন স্বয়ং সংক্রমণ নিয়ে খুব কড়াকড়ির আদেশ দেননি। সেই সময়ে ঠাসা দর্শকদের সামনেই ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে খেলাধুলো চলতে থাকে।
তত দিনে কিন্তু ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে ফাঁকা গ্যালারি রেখে ম্যাচের আয়োজন করছিল। তার আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি হওয়া আটলান্টা বনাম ভ্যালেন্সিয়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ ঘিরে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখে পড়েছিল ইটালি। । আটলান্টা যেখানকার ক্লাব, সেই বার্গামোর জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ মানুষ এই ম্যাচটি দেখতে মিলানের সান সিরো স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়েছিলেন। ভ্যালন্সিয়াকে সমর্থন করতে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ স্পেন থেকে এসেছিলেন মিলানে। এক মাসের মধ্যে দেখা যায়, ইটালিতে করোনা সংক্রমণের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে বার্গামো। শুধু তাই নয়, ভ্যালেন্সিয়া ক্লাবের ৩৫ শতাংশ ফুটবলারও সংক্রমিত হয়েছিলেন।
ইংল্যান্ডে ১০ মার্চ চেল্টেনহ্যামে ঘোড়দৌড়ের উৎসব শুরুর আগেই প্রকাশ্য সমাবেশ নিয়ে সাবধান করেছিলেন অনেকে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে ব্রিটিশ সংস্কৃতি সচিব অলিভার ডাউডেন সব সাবধানতা উড়িয়ে দেন। উৎসবে যোগ দেন ২ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ। আর অ্যানফিল্ডে মহম্মদ সালাহদের ম্যাচে দর্শক হয়েছিল ৫২ হাজার। করোনায় মারাত্মক ভাবে সংক্রমিত দেশ স্পেন থেকে তিন হাজারের বেশি দর্শক খেলা দেখতে এসেছিলেন লিভারপুলে। যাঁরা ম্যাচের পরেও স্থানীয় পানশালায় অবাধে সকলের সঙ্গে মেলামেশা করেন।
একটি সমীক্ষায় স্পষ্ট দেখা গিয়েছে, ইংল্যান্ডে সব চেয়ে সংক্রমিত জায়গাগুলির দু’টি হল লিভারপুল ও চেল্টেনহ্যাম। এই দুই অঞ্চলে যাঁরা সংক্রমিত হয়েছিলেন, মোটামুটি ভাবে তাঁদের বয়স ২০ থেকে ৬৯-এর মধ্যে। অনুমান, এই বয়স বিভাগের দর্শকেরাই সে দিন খেলা দেখতে গিয়েছিলেন অ্যানফিল্ডে। দিন দুই আগেই ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এই খবর যে, অ্যানফিল্ডের কাছাকাছি হাসপাতালে ৪১ জনের মৃত্যু হয় করোনায়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ দেখতে যাওয়ার কারণেই এমন ঘটে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy