উৎসব: ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠা দিবসে পতাকা উত্তোলন করছেন (বাঁ-দিক থেকে) বিকাশ পাঁজি, ষষ্ঠী দুলে, চন্দন দাস ও তুষার রক্ষিত। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ইস্টবেঙ্গলের ১০২তম প্রতিষ্ঠা দিবসেই চুক্তি-বিতর্ক মিটে যাওয়ার ইঙ্গিত। সূত্রের খবর, লাল-হলুদের প্রাক্তন সচিব ও আইনজীবী পার্থসারথি সেনগুপ্তের মধ্যস্থতায় লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা অনেকটাই নমনীয় হয়েছেন। চূড়ান্ত চুক্তিতে বেশ কয়েকটি শর্ত পরিবর্তন করার প্রস্তাব দিয়ে এসসি ইস্টবেঙ্গলের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল শিবাজি সমাদ্দার ইতিমধ্যেই ই-মেল করে ক্লাব কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন।
চূড়ান্ত চুক্তিতে কী কী পরিবর্তন হতে চলেছে?
এক) আগের শর্ত অনুযায়ী ৯০ দিনের নোটিশ দিয়ে একতরফা ভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারত লগ্নিকারী সংস্থা। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতীক ও অন্যান্য সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া হবে কি না, তার কোনও উল্লেখ ছিল না। নতুন শর্ত অনুযায়ী লগ্নিকারী সংস্থা যদি নিজেরা বিচ্ছেদ ঘটায়, তা হলে সব কিছু ক্লাবকে বিনাশর্তে ফিরিয়ে দেবে তারা। দুই)ভবিষ্যতে দু’পক্ষই নতুন লগ্নিকারী আনতে পারে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড অব ডিরেক্টরেরা। যা আগের চুক্তিতে ছিল না। পরিবর্তিত চুক্তিতে এই শর্ত যোগ করা হচ্ছে। তিন) আগের চুক্তি অনুযায়ী ইস্টবেঙ্গল যদি সব শর্ত পূরণ করতে না পারে, সে ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব ২৪ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে দেওয়ার কথা ছিল। এমনকি এসসি ইস্টবেঙ্গল পরিচালন সমিতির অধিকার থাকবে বোর্ডে ক্লাবের প্রতিনিধিদের বরখাস্ত করার। প্রস্তাবিত নতুন চুক্তি অনুযায়ী ইস্টবেঙ্গলের অংশীদারিত্ব কোনও ভাবেই কমবে না। বোর্ড থেকে ক্লাবের প্রতিনিধিদেরও সরানো যাবে না। তবে ইস্টবেঙ্গল যদি শর্তপূরণে ব্যর্থ হয়, সে ক্ষেত্রে লগ্নিকারী সংস্থা আর অর্থ বিনিয়োগ করবে না। চার) লাল-হলুদ কর্তারা শুরু থেকেই বলছিলেন, ময়দান সেনাবাহিনীর। তাই তাঁদের অধিকার নেই ক্লাবের মাঠ, তাঁবু ও অন্যান্য সম্পত্তি কাউকে দেওয়ার। লগ্নিকারী সংস্থার তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ইস্টবেঙ্গলকে সম্মতিপত্র (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) দিলেই হবে। সেনাবাহিনীর থেকে অনুমতি লগ্নিকারী সংস্থাই নেবে। পাঁচ) সদস্যদের ক্লাব তাঁবু ব্যবহার করা নিয়েও আগের চুক্তিতে আপত্তি ছিল লগ্নিকারী সংস্থার। এখন তারা প্রস্তাব দিয়েছে, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফে প্রতি তিন মাস অন্তর সদস্যদের তালিকা জমা দিতে হবে। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত যা যা নিয়ম ছিল সদস্যদের জন্য, সেটাই বহাল থাকবে। ছয়) ইস্টবেঙ্গল যদি আগের বকেয়া মেটাতে না পারে, সে ক্ষেত্রে সদস্যদের চাঁদা থেকে প্রাপ্ত অর্থ জমা থাকবে এসসি ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের কাছে। সাত) ইস্টবেঙ্গল ক্লাব চিরাচরিত প্রতীক (মশাল) ব্যবহারের দাবি জানিয়েছিল। সেই ব্যাপারেও অনেকটা নমনীয় হয়েছেন লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা। ই-মেলে সিইও লিখেছেন, ইস্টবেঙ্গল কর্তারা লিখিত ভাবে তাঁদের দাবি জানান, শ্রী সিমেন্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হরিমোহন বাঙুরই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। ক্লাবের এক শীর্ষকর্তা বললেন, “আশা করছি, একসঙ্গে কাজ করে ক্লাবকে ভাল জায়গায় নিয়ে যাব।”
রবিবার সকালে ময়দানে ক্লাব তাঁবুতে দুই প্রাক্তন অধিনায়ক বিকাশ পাঁজি ও তুষার রক্ষিত পতাকা উত্তোলন করে ১০২তম প্রতিষ্ঠা দিবসের সূচনা করেন। উচ্ছ্বসিত এসসি ইস্টবেঙ্গলের কোচ রবি ফাওলার গণমাধ্যমে লিখেছেন, “প্রতিষ্ঠা দিবসে এসসি ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তাঁদের ছাড়া ফুটবল হয় না। আপনাদের জন্যই ক্লাব এই
উচ্চতায় পৌঁছেছে।”
লিগের সূচি: রবিবার কলকাতা লিগের ক্রীড়াসূচি প্রকাশ করল আইএফএ। ১৭ অগস্ট প্রথম ম্যাচে পিয়ারলেস খেলবে খিদিরপুরের বিরুদ্ধে। মহমেডানের খেলা ১৮ অগস্ট সাদার্ন সমিতির বিরুদ্ধে। এসসি ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচ ২৪ অগস্ট। প্রতিপক্ষ ভবানীপুর। এটিকে-মোহনবাগানের প্রথম ম্যাচ ২৯ অগস্ট জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে। রবিবার শহরে এলেন রয় কৃষ্ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy