আহত ও অবসৃত অবস্থায় মাঠ ছাড়তে হয় পূজারাকে। ছবি: পিটিআই।
শেষ কবে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছেন চেতেশ্বর পুজারা? উত্তর দিতে পারলেন না তাঁর সতীর্থেরা। ভারতীয় টেস্ট দলে তিন নম্বরে জায়গা পাকা তাঁর। রাজ্য দলে কোন ভিত্তিতে তাঁর ব্যাটিং অর্ডার পিছিয়ে দেওয়া হবে? দেশ অথবা বিদেশের মাটিতে ওপেনারেরা দ্রুত ফিরে গেলে ঢাল হয়ে দাঁড়ান তিনি। এসসিএ স্টেডিয়ামের নিষ্প্রাণ পিচে ওপেনারেরা ৮২ রান যোগ করার পরে তাঁর জন্য আদর্শ মঞ্চ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু প্যাড পরে তৈরি থাকা পুজারা ড্রেসিংরুম ছেড়ে বেরোলেন না।
শেষমেষ ছয় নম্বরে ক্রিজে আসতে দেখা গেল তাঁকে। বাউন্ডারি দিয়ে ইনিংস শুরু করলেও মাত্র আট ওভার ব্যাট করার পরেই হাঁপিয়ে যান। মাটিতে বসে পড়েন ভারতীয় তারকা। চোখে-মুখে জলের ঝাপটা দিয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হয়। তবুও অসুস্থবোধ করেন। আহত ও অবসৃত অবস্থায় মাঠ ছাড়তে হয় তাঁকে। দলীয় সূত্রের খবর, প্রথম দিনের খেলার শেষ হওয়ার আগেই বাড়ির পথে রওনা দেন পুজারা।
বিপক্ষ অধিনায়ক জয়দেব উনাদকাটকে জানতে চাওয়া হয়, পুজারার মাঠ ছেড়ে বেরোনোর কারণ? উনাদকাটের উত্তর, ‘‘শেষ রাতে গলায় সংক্রমণ হয়েছিল। গলা ফুলে গিয়েছিল ওর। ব্যথাও ছিল।’’ যোগ করেন, ‘‘সকাল থেকে জ্বর আসে। তাই ব্যাটিং অর্ডার পিছনো হয়। চতুর্থ উইকেট পড়ার পরে নিজেই বলেছিল ও মাঠে নেমে দেখতে চায়। কিছুক্ষণ ব্যাট করার পরে চোখে অন্ধকার দেখে। তাই ঝুঁকি না নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরিয়ে আনা হয় ওকে।’’ দ্বিতীয় দিন তিনি কি মাঠে নামতে পারবেন? উনাদকাটের উত্তর, ‘‘আশা করি, আজ রাতে ও সুস্থ হয়ে যাবে।’’
আরও পড়ুন: করোনার জেরে কি বাতিল হবে আইপিএল? শুরু জোর জল্পনা
বিপক্ষ কোচ কার্সন ঘাউড়ি যদিও অন্য তথ্য দিয়ে গেলেন। তাঁর কথায়, ‘‘নিউজ়িল্যান্ড থেকে ফেরার পরে এক দিনও বিশ্রাম পায়নি। জেটল্যাগও পুরোপুরি কাটেনি। তার উপরে বাতাসে আর্দ্রতা কম। ডিহাইড্রেশন হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় দিন ওর ব্যাট করতে সমস্যা হবে না।’’
অভিনব: লক্ষ্মীরতন শুক্লের উদ্যোগে বাংলার সাইক্লিস্টরা রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে লড়াই করা বাংলা দলের উদ্দেশে শুভেচ্ছা-জার্সি তুলে দেন সিএবি কর্তাদের হাতে। রবিবার ইডেনে। —নিজস্ব চিত্র।
নিউজ়িল্যান্ড থেকে ফেরার পরে দু’দিন অনুশীলন করেছেন পুজারা। তাঁকে দেখে এক বারও মনে হয়নি ক্লান্ত। এমনকি নেট শেষ হওয়ার পরে জিমেও সময় কাটালেন। ফিল্ডিং করতেও দেখা যায় তাঁকে। প্রশ্ন তাই থেকেই যাচ্ছে।
তার উপরে দিনের শেষে ঘরের মাঠে মনের মতো পিচ পেয়েও মুখ থুবড়ে পড়েছে সৌরাষ্ট্র। তাতে দলের মনোবল আরও ভেঙে গিয়েছে। ৫৪ রান করে যাওয়া বিশ্বরাজ জাডেজা বলছিলেন, ‘‘পিচ প্রচণ্ড মন্থর। প্রথম দিন থেকেই অসমান বাউন্স স্পষ্ট। বোলারদের স্পাইকে পিচে ক্ষত তৈরি হওয়া জায়গায় বল পড়লে অসম্ভব ঘুরছে। তৃতীয় দিন থেকে এই পিচে ব্যাট করা আরও কঠিন হয়ে যাবে।’’
অরুণ লাল তো বলে দিয়েছেন, ‘‘এই পিচ রঞ্জি ফাইনালের যোগ্য নয়। বোর্ড অনুমোদিত পিচ প্রস্তুতকারক প্রথম দিন থেকেই বলেছেন পিচ শুকনো। কিন্তু এক বারের জন্যও তাঁকে পিচে জল দিতে দেখিনি। বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকতেই পারে। সেটা বিবেচনা করেই তো বেশি করে জল দেওয়া উচিত ছিল।’’ বোর্ড অনুমোদিত পিচ প্রস্তুতকারকের নাম এল প্রশান্ত। কোয়ার্টার ফাইনালে ওড়িশার বিরুদ্ধে ম্যাচেও এমন উইকেট বানিয়েছিলেন, যেখানে প্রথম দিনের পর থেকে হাঁটুর উপরেও উঠছিল না বল।
এসসিএ স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে গুজরাতের বিরুদ্ধে যে পিচে খেলা হয়েছে, সেখানে কিছুটা হলেও বাউন্স ছিল। বিশ্বরাজ বলছিলেন, ‘‘সেই উইকেটের সঙ্গে এই উইকেটের অনেক তফাত। চলতি ম্যাচ সেন্টার উইকেটে হচ্ছে। রাজকোটে এমনিতেই সে ভাবে পেসাররা সাহায্য পায় না। কিন্তু এই ম্যাচে প্রথম দিন থেকেই তো কিছুই হচ্ছে না।’’
এ দিকে, সোমবার হোটেলে ফিরে মনোজ তিওয়ারির একশোতম রঞ্জি ম্যাচের উৎসব পালন করা হয়। মনোজের জন্য আয়োজন করা হয় বিশেষ কেকের। তার উপরে লেখা ছিল, ‘মনোজ তিওয়ারি ওয়ান হান্ড্রেড রঞ্জি ম্যাচ।’ দু’টি ব্যাটে দলের প্রত্যেকের সই সংগ্রহ করে স্মারক হিসেবে তা উপহার দেওয়া হয় প্রাক্তন অধিনায়ককে। মনোজকে কেক খাইয়ে দেন বাংলা দলের কোচ অরুণ লাল। তাঁকে নিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন ঈশান, ঋদ্ধিমানেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy