চিরকালীন: বিশ্বকাপ জয়ের পরে ওয়াংখেড়ের সেই ঐতিহাসিক দৃশ্য। ফাইল চিত্র
তাঁর অধরা স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল ২০১১-র ২ এপ্রিল। ওয়াংখেড়েতে সেই রাতে বিশ্বকাপ জিতে বিরাট কোহালিদের কাঁধে চড়ে পুরো মাঠ ঘুরেছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। লরিয়াস পুরস্কারে সেটাই গত কুড়ি বছরের সেরা মুহূর্তের পুরস্কার জিতে নিল। আর স্টিভ ওয়ের হাত থেকে পুরস্কার নেওয়া সচিন বলে দিলেন, তাঁর বিশ্বকাপ স্বপ্নের যাত্রা আসলে শুরু হয়েছিল ১৯৮৩-তে। যখন কপিল দেবের হাত ধরে প্রথম ভারতবাসী স্বাদ পেয়েছিল বিশ্বজয়ের। যখন বলছেন, এক দিকে দাঁড়িয়ে স্টিভ ওয়। অন্য দিকে বরিস বেকার।
সচিনের তখন বয়স মাত্র দশ। লর্ডসে কপিলের দৈত্যদের বিশ্বকাপ জয়ের স্মরণীয় সেই রাতের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। ‘‘আমার ক্রিকেট যাত্রা আসলে শুরু হয়েছিল তিরাশিতেই। সেই বছরেই ভারত প্রথম বিশ্বকাপ জেতে। তার কী তাৎপর্য তখন হয়তো ভাল করে বুঝতে পারিনি। সকলে আনন্দ করছে দেখে আমিও বিজয়োৎসবে মেতেছিলাম,’’ বলে সচিন যোগ করছেন, ‘‘তবে এটুকু বুঝতে পারছিলাম যে, আমাদের দেশ দারুণ স্মরণীয় কিছু একটা ঘটিয়েছে। সেই প্রথম স্বপ্ন দেখেছিলাম, একদিন আমাকেও এ রকম কিছুর অংশ হতে হবে। এ ভাবেই শুরু হয়েছিল আমার ক্রিকেট যাত্রা।’’
সচিনের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয় ষষ্ঠ বার খেলতে নেমে। তার আগের পাঁচটি বিশ্বকাপেই স্বপ্নভঙ্গ হয়ে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। খুব কাছাকাছি এসেছিলেন ২০০৩ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে। কিন্তু সে বারও দুরন্ত অস্ট্রেলিয়ার সামনে চূর্ণ হয় ভারতীয় দল। ২০১১-তে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ওয়াংখেড়েতে বিশ্বকাপ জেতে ভারত। ধোনির সেই ছক্কা মেরে জেতানো যেমন ঢুকে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের রূপকথায়, তেমনই স্মরণীয় হয়ে রয়েছে কোহালিদের কাঁধে চড়ে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে সচিনের ওয়াংখেড়ে প্রদক্ষিণ। টিভি-র সামনে এসে কোহালির সেই বিখ্যাত মন্তব্য, ‘‘চব্বিশ বছর ধরে দেশের ক্রিকেটকে কাঁধে করে নিয়ে ঘুরেছেন যিনি, তাঁকে আজ আমাদের কাঁধে তুলে ঘোরানোর রাত।’’ সে রাতের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল নিশ্চয়ই সচিনের। তাই আবেগে ভেসে বললেন, ‘‘বাইশ বছর ধরে একটা স্বপ্নকে তাড়া করেছিলাম। অবশেষে সেটা সফল হতে দেখেছিলাম ওয়াংখেড়েতে। আমার জীবনের সব চেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত ওটাই। বলে বোঝানো যাবে না, বিশ্বকাপ ট্রফিটা হাতে ধরতে পেরে কতটা খুশি হয়েছিলাম।’’ এখানেই না থেমে যোগ করেন, ‘‘আবারও প্রমাণ পেলাম, একটা খেলার আবেদন কত শক্তিশালী হতে পারে। এখনও মনে হয়, কেউ যেন জীবনের পথেই জাদু সৃষ্টি করেছে। এখনও ওই মুহূর্তটা দেখলে অবিশ্বাস্য এক অনুভূতি হয়।’’ পরে নিজেই টুইট করে এই পুরস্কার নিজের দেশ, সতীর্থ এবং ভক্তদের উৎসর্গ করেছেন সচিন। লিখেছেন, ‘‘এমন বাঁধনহারা ভালবাসা এবং সমর্থনের জন্য সকলকে ধন্যবাদ। এই পুরস্কার আমি ভারতবর্ষকে, সতীর্থদের এবং দেশে-বিদেশে ভারতীয় ক্রিকেটের সকল ভক্তকে উৎসর্গ করছি।’’
১৯৮৯ সালে পাকিস্তানে ১৬ বছরের কিশোর হিসেবে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল সচিনের। তার পর থেকে ২৪ বছর ধরে তিনিই ছিলেন গোটা দেশের প্রিয়তম খেলোয়াড়। এখনও ক্রীড়াপ্রেমীরা কিন্তু ভোলেননি ‘স-চি-ন, স-চি-ন’ ধ্বনি। ব্যাটিংয়ের প্রায় সব রেকর্ডই এখনও তাঁর দখলে। টেস্ট এবং ওয়ান ডে মিলিয়ে ৩৪,৪৫৭ রান, একশোটি সেঞ্চুরি। দু’ধরনের ক্রিকেটেই সর্বোচ্চ মোট রানের অধিকারী তিনি। টেস্টে ১৫,৯২১ রান, ওয়ান ডে-তে ১৮,৪২৬ রান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy