মুহূর্ত: সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে টাই-ব্রেকারের শেষ শট মারতে এসে ব্যর্থ কিলিয়ান এমবাপে। ছবি রয়টার্স।
বিশ্বফুটবলের তাঁরা কিংবদন্তি। কিন্তু টাইব্রেকার বা পেনাল্টিতে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছেন। জ়িকো, মিশেল প্লাতিনি, রবের্তো বাজ্জো, ডেভিড বেকহ্যাম, আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো, ওয়েন রুনি থেকে নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র), ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, লিয়োনেল মেসি— দীর্ঘ তালিকায় নবতম সংযোজন কিলিয়ান এমবাপে।
ইউরো ২০২০-তে সোমবার রাতে টাইব্রেকারে ফরাসি তারকার শট বাঁচিয়েই সুইৎজ়ারল্যান্ডকে শেষ আটে নিয়ে যান গোলরক্ষক ইয়ান সোমের। কেন তারকারা বার বার ব্যর্থ হয়েছেন টাইব্রেকার বা পেনাল্টিতে গোল করতে? তাঁরা কী মানসিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করেছিলেন?
ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার আই এম বিজয়ন বললেন, “আমি কখনওই পেনাল্টি মারতে যেতাম না। ভয়ে রীতিমতো পা কাঁপত। টাইব্রেকারেও চেষ্টা করতাম শট না মারার।” এর পরেই যোগ করলেন, “নব্বইয়ের দশকে বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফি খেলছি। আমার রাজ্য কেরলের বিরুদ্ধেই ম্যাচ ছিল। চাপ সামলাতে না পেয়ে টাইব্রেকারে বল সোজা ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলাম।”
পেনাল্টি ও টাইব্রেকারের সময় ফুটবলাররা যাতে নিজেদের চাপমুক্ত রেখে লক্ষ্যে স্থির থাকতে পারেন, তার জন্য বিশ্বের প্রায় সব দলেই বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। সদ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী চেলসির সাফল্যের নেপথ্যে অবদান রয়েছে এক ভারতীয়র। তিনি, কেরলের বিনয় মেনন। চেলসির ক্লাবের ওয়েলনেস কনসালট্যান্ট ও মাইন্ড স্ট্র্যাটেজিস্ট তিনি। ফুটবলারদের মানসিক ভাবে শক্তিশালী করে তোলাই কাজ বিনয়ের।
চার বছর আগে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের সময় ভারতীয় ফুটবল দলের সঙ্গে ছিলেন মেন্টাল কন্ডিশনিং ট্রেনার স্বরূপ সাভানোর। এই মুহূর্তে তিনি যুক্ত আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি দল পঞ্জাব কিংসের সঙ্গে। আনন্দবাজারকে তিনি বললেন, “মানসিক ভাবে শক্তিশালী অনেক ফুটবলারই পেনাল্টি বা টাইব্রেকারে গোল করতে ব্যর্থ হন। সেই সময়েই হয়তো তিনি চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই আবেগ থাকে। আমাদের কাজ হল, কঠিন পরিস্থিতিতে আবেগ ও চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য খেলোয়াড়দের তৈরি করা।”
কী সেই পদ্ধতি? স্বরূপ বললেন, “পেনাল্টি বা টাইব্রেকারের সময় উত্তেজনার কারণে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। কী ভাবে তা কমাতে হবে তার জন্য বিশেষ শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করানো হয়। চাপমুক্ত থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয়ত, পেনাল্টি বা টাইব্রেকার যখন মারতে যান কোনও ফুটবলার, তাঁর মাথায় নানা ধরনের চিন্তা এসে ভিড় করে। ভাবতে শুরু করেন, স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শকের সামনে যদি গোল করতে না পারি, কী হবে? যা মনকে অস্থির করে তোলে। ফলে লক্ষ্যে স্থির থাকা কঠিন হয়ে যায়।” আরও বললেন, “আমার কাজ হচ্ছে, নেতিবাচক ভাবনা-চিন্তা মনের মধ্যে ঢুকতে না দেওয়া। এর জন্যও নানা ধরনের অনুশীলন রয়েছে। নিয়মিত তা করতে হয়।” গোলরক্ষকদের অনুশীলন পদ্ধতি কি আলাদা? “অবশ্যই, প্রত্যেক বিভাগের ফুটবলারদের জন্য-আলাদা অনুশীলনসূচি তৈরি থাকে,” বললেন স্বরূপ। স্পেন বনাম ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের উদাহরণ দিয়ে তিনি যোগ করলেন, “ক্রোয়েশিয়ার প্রথম গোলটার কথা মনে করুন। মনঃসংযোগের ব্যাঘাত ঘটার কারণেই ওই ভাবে গোল খেয়েছে উনাই সিমোন। এই কারণেই গোলরক্ষকদের চাপমুক্ত থাকা অত্যন্ত জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy