Present status of the 1983 world cup winning team of India dgtl
1983 World Cup
1983 World Cup Winning Team: কেউ মৃত, কেউ রাজনীতিক, ১৯৮৩ সালের সেই বিশ্বজয়ী ভারতীয় দলের সদস্যরা আজ কে কোথায়
১৯৮৩ সালের ২৫ জুন। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথম বার বিশ্বকাপ জিতল কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল। এর পর কেটে গিয়েছে ৩৮ বছর।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২১ ১৩:৩৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
১৯৮৩ সালের ২৫ জুন। ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন এক ইতিহাস লেখা হল। প্রবল পরাক্রমী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথম বার বিশ্বকাপ জিতল কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল। এর পর কেটে গিয়েছে ৩৮ বছর। সেই দলের এক সদস্যের সম্প্রতি মৃত্যুও হয়েছে। কী করছেন বাকিরা? দেখে নেওয়া যাক।
০২১২
সুনীল গাওস্কর: ফাইনাল ১২ বলে ২ রান করে আউট হয়ে গিয়েছিলেন সুনীল। অ্যান্ডি রবার্টসের বলে ক্যাচ ধরেন উইকেটরক্ষক জেফ দুজোঁ। ১৯৮৭ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন সুনীল। তার পর থেকেই ধারাভাষ্যকারের কেরিয়ার বেছে নিয়েছিলেন। বিতর্কিত ধারাভাষ্যের জন্য বার বার খবরে এসেছেন সুনীল। এখনও সেই কাজই করছেন। মাঝে অবশ্য একটি মারাঠি ছবিতে অভিনয় করেছেন। মুম্বইয়ের শেরিফ হয়েছেন। একটি মারাঠি গানও গেয়েছেন তিনি।
০৩১২
কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত: স্কোরকার্ডে সবচেয়ে বেশি রান শ্রীকান্তেরই। ৫৭ বলে ৩৮। ম্যালকম মার্শালের বলে এলবিডব্লু হয়েছিলেন শ্রীকান্ত। এখন তিনিও ধারাভাষ্যকার। পাশাপাশি ২০২০-র জানুয়ারিতে অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অব স্পোর্টস প্যানেলেরও সদস্য হয়েছেন শ্রীকান্ত।
০৪১২
মহিন্দর অমরনাথ: ৮৩’র বিশ্বকাপের জয়ী দলের ভাইস ক্যাপ্টেন। ম্যান অব দ্য ম্যাচও হয়েছিলেন অমরনাথ। বিশ্বকাপের ফাইনালে ৮০ বল খেলে ২৬ রান করেছিলেন ঠিকই। তার সঙ্গে সাত ওভার বল করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেটও নিয়েছিলেন অমরনাথ। ২০০৫ সালে লালা অমরনাথ ক্রিকেট অ্যাকাডেমি খুলেছিলেন মহিন্দর। আপাতত তাঁর অনেকটা সময় জুড়ে থাকে তাঁর ক্রিকেট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কাজ। দিনের বেশ খানিকটা সময় সেই ক্রিকেট অ্যাকাডেমি নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। নিজেই মাঠে নেমে ছোটদের খেলা শেখান।
০৫১২
যশপাল শর্মা : সদ্য প্রয়াত হয়েছেন যশপাল। বয়স হয়েছিল ৬৬। ৮৩-র ফাইনালে ৩২ বলে ১১ রান করেছিলেন। অবসর নেন নয়ের দশকের শুরুতেই। তার পর কিছু দিন আম্পায়ার হিসেবে কাজ করেছেন। ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেছেন যশপাল। ২০১১ সালে তিনি নির্বাচক থাকাকালীনই বিশ্বকাপ জেতে ভারত।
০৬১২
সন্দীপ পাটিল: সে দিনের স্কোরকার্ডে তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের অধিকারী। ২৯ বলে ২৭ রান করেন। তবে ৮৩’র বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফেরার পর হঠাৎই বলিউডে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন সন্দীপ। রূপোলি পর্দায় মুখ দেখানোর সুযোগ ছাড়তে চাননি। ‘কভি আজনবি থে’ ছবিতে পূনম ধিলোঁ এবং দেবশ্রী রায়ের বিপরীতে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। তবে সেই ছবি বক্স অফিসে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়। পাতিলের অভিনয়ও সমালোচিত হয়। তিন বছর পর ১৯৮৬ সালে প্রথম সারির ক্রিকেট থেকে অবসর নেন পাতিল। তার পর কিছু দিন ভারতীয় ‘এ’ দলের প্রশিক্ষক ছিলেন। এক মারাঠি পত্রিকার সম্পাদকের ভূমিকাও পালন করেছেন দীর্ঘ দিন। আপাতত বন্যপ্রাণীদের নিয়ে মেতে আছেন। মুম্বইয়ের সঞ্জয় গাঁধী ন্যাশনাল পার্কের সঙ্গে যুক্ত তিনি। তারা নামে একটি চিতাবাঘ দত্তকও নিয়েছেন তিনি।
০৭১২
কপিল দেব: ৮৩’র বিশ্বকাপে ফাইনালে ৮ বলে ১৫ রান করেছিলেন কপিল। বিশ্বকাপ জয়ের এক বছর পর জাতীয় ক্রিকেট দলের নেতৃত্ব থেকেও ‘আউট’ হয়ে গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য ১৯৮৫ সালে তাঁকে পুরনো দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হয়। কপিল ক্রিকেট থেকে অবসর নেন ১৯৯৪ সালে। তার পর ১৯৯৯ থেকে ২০০০ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রশিক্ষক ছিলেন। আইপিএলএর ধাঁচে তৈরি আইসিএলের চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন একবার। আপাতত তিনি হরিয়ানার ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। মাঝে মধ্যে লেখালিখিও করেন। তাঁর শেষ বই ‘দ্য শিখ’। সেটি অবশ্য ২০১৯-এ প্রকাশিত হয়েছিল। সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। হার্টে অস্ত্রোপচারও হয় কপিলের।
০৮১২
কীর্তি আজাদ: ফাইনালে ৩ বলে ০ করেন তিনি। ডান হাতি অফ স্পিনার কীর্তি তিন ওভার বল করে কোনও উইকেট পাননি। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভাগবত ঝা আজাদের পুত্র কীর্তী অবসরের পর রাজনীতিতে যোগ দেন। প্রথমে বিজেপির টিকিটে বিধায়ক পরে ভোটে জিতে লোকসভার সাংসদও হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন। লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে হেরে যান কীর্তি।
০৯১২
রজার বিনি: ফাইনালে ৮ বলে ২ রান করেছিলেন বিনি। ১০ ওভার বল করে পেয়েছিলেন একটি উইকেট। তবে ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের নেপথ্যে বিনির যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, তা স্বীকার করেছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। অবসরের পর একটি টিভি চ্যানেলে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞের ভূমিকা পালন করেছেন। ২০১২ সালে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের নির্বাচক হিসেবেও নিয়োগ করা হয় তাঁকে। তবে বিনি আপাতত কর্নাটকের রাজ্য ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত।
১০১২
মদন লাল: ২৭ বলে ১৭ রান করেছিলেন মদন লাল। ফাইনালে ১২ ওভারে ৩ উইকেট নেন তিনি। বিশ্বকাপ জয়ের চার বছর পরই ১৯৮৭ সালে অবসর নিয়েছিলেন। তার পর দীর্ঘ দিন ক্রিকেট প্রশিক্ষকের কাজ করেছেন। দিল্লিতে তাঁর নিজস্ব ক্রিকেট প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমি আছে। ২০১০ সালে আরও একটি ক্রিকেট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি।
১১১২
সৈয়দ কিরমানি: ৮৩’র স্কোর কার্ডে কিরমানির রান ৪৩ বলে ১৪। কিরমানিও বিশ্বকাপ জয়ের তিন বছরের মাথায় অবসর নেন। সন্দীপ পাটিল বলিউডের যে ছবিতে অভিনয় করেছিলেন, সেই ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয় কিরমানিকেও। তিনি সেই প্রস্তাব ফেরাননি। পরে আরও দু’টি ছবিতে স্বভূমিকায় পর্দায় মুখ দেখান কিরমানি। এখন বিভিন্ন চ্যানেলে মাঝে মধ্যেই ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হিসেবে আলোচনায় বসতে দেখা যায় তাঁকে।
১২১২
বলবিন্দর সান্ধু: ফাইনালে ৩০ বলে ১১ রান করেছিলেন বলবিন্দর। ৯ ওভার বল করে নিয়েছিলেন ২টি উইকেট। মাত্র কয়েক বছরের ক্রিকেট কেরিয়ারে ৮৩-র বিশ্বকাপ জয়ই সবচেয়ে বড় সাফল্য় সান্ধুর। ১৯৮৬ সালে অবসর নেওয়ার পর বেশ কিছু দিন ক্রিকেট প্রশিক্ষণের কাজ করেছেন। মুম্বইয়ের রঞ্জি দলের কোচ হওয়ার জন্য আবেদনও করেছিলেন। সেই আবেদন গৃহীত হয়নি। এখন নিজের ক্রিকেট অ্যাকাডেমি নিয়ে ব্যস্ত আছেন।