পর্যবেক্ষণ: মঙ্গলবার অনুশীলনের ফাঁকে মোতেরার উইকেট দেখলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুট (ডান দিক), সঙ্গে স্টুয়ার্ট ব্রড, বেয়ারস্টোরা। বিসিসিআই।
ইংল্যান্ড ক্রিকেট মহলে তাঁকে দেখা হয় উদীয়মান এক প্রতিভা হিসেবে। অনেকেই তাঁকে ডাকেন ‘নতুন মন্টি’ বলে। তবে এই নতুন মন্টি বাঁ-হাতি স্পিনার নন। ডান হাতি অফস্পিন বোলার। নাম অমর ভির্দি। পূর্বসূরি মন্টি পানেসরের সঙ্গে চেহারার দারুণ মিল থাকার জন্যই নতুন মন্টি হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। যাঁকে নেট প্র্যাক্টিসে খেলেই এখন অশ্বিন, অক্ষর পটেলদের বোলিংয়ের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিচ্ছেন
ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানেরা।
বৃহস্পতিবার থেকে মোতেরায় শুরু হচ্ছে ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের শেষ টেস্ট। সেখানেও ঘূর্ণি পিচে খেলতে হবে বলেই ধরে নিচ্ছে ইংল্যান্ড। যে কারণে নেটে চলছে স্পিনের বিরুদ্ধে বিশেষ মহড়া। নেট বোলার হিসেবে দলের সঙ্গে থাকা অমরের দায়িত্বও অনেক বেড়ে গিয়েছে। ইংল্যান্ড শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মঙ্গলবার দীর্ঘ সময়ে জো রুট, জ্যাক ক্রলিদের বল করেছেন বাইশ বছর বয়সি এই অফস্পিনার।
অমরের পূর্বপুরুষ পঞ্জাবের বাসিন্দা। সেখান থেকে তাঁর বাবা চলে গিয়েছিলেন কিনিয়া। আফ্রিকা মহাদেশ থেকে তার পরে গ্রেট ব্রিটেনে পাড়ি জমান তিনি। সেখানেই জন্ম এবং এর পরে সারে কাউন্টির হয়ে খেলে উত্থান অমরের। যখন তিনি খেলা শুরু করেন, ইংল্যান্ডের হয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মন্টি। ফলে অমরের সামনে উদাহরণের অভাব ছিল না। যদিও ভারতের হরভজন সিংহের বোলিং খুবই পছন্দ বলে এর আগে জানিয়েছিলেন অমর।
সারের কোচিং ডিরেক্টর অ্যালেক স্টুয়ার্ট এবং পরবর্তী কালে হেড কোচ বিক্রম সোলাঙ্কির অনেকটাই হাত আছে অমরের উত্থানের পিছনে। দু’জনের মুখেই বার বার শোনা গিয়েছে এই তরুণ শিখ স্পিনারের প্রশংসা। কাউন্টি ক্রিকেটে নজর কাড়ার পরে গত বছর তাঁকে ইংল্যান্ডের ৩০ জনের প্রাথমিক দলেও রাখা হয়। এই মুহূর্তে অমর ভারতের মাটিতে রুটদের প্র্যাক্টিসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইংল্যান্ড ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত কেউ কেউ মনে করেন, অমর প্রথম একাদশেও চলে আসার ক্ষমতা রাখেন। কোনও ভাবে কি এই অফস্পিনারকে শেষ টেস্টে খেলতে দেখা যেতে পারে? প্রশ্নের জবাবে ইংল্যান্ডের মিডিয়া ম্যানেজার এ দিন বলেন, ‘‘অমর এখানে দলের সঙ্গে আছে নেট বোলার হিসেবে। এই মুহূর্ত পর্যন্ত বলতে পারি, টেস্ট দল যাদের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হবে, তাদের মধ্যে ওর নাম নেই।’’
পিছিয়ে থাকলেও শেষ টেস্ট জিতলে সিরিজ ২-২ ড্র করে ফিরবে ইংল্যান্ড। যেটা এখন তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য বলে জানালেন ইংল্যান্ডের ওপেনার জ্যাক ক্রলি। যিনি আমদাবাদের দিনরাতের টেস্টে ইংল্যান্ডের হয়ে একমাত্র হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। শেষ টেস্টে কী রকম পিচ আশা করছেন? এ দিন ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে এসে ক্রলি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, আগের দুটো টেস্টে যে রকম উইকেট পেয়েছি, এ বারও সে রকম হবে।’’
অর্থাৎ ঘূর্ণি। যে কারণে স্পিনের বিরুদ্ধে অনেকটা সময় অনুশীলনে ব্যস্ত থাকেন রুটরা। কী ভাবে সামলাবেন অশ্বিন-অক্ষরের জুটিকে? নতুন কোনও কৌশল কি নিয়েছেন? ক্রলির জবাব, ‘‘ওরা নিঃসন্দেহে দারুণ বোলার। আগে থেকে ওদের বিরুদ্ধে রণনীতি ঠিক করে নামা কঠিন। ব্যাট করার সময় দেখতে হয়, বল কতটা ঘুরছে, পিচ কী রকম। তার পরে নিজের কৌশল তৈরি করতে হয়।’’ তবে ক্রলি মনে করছেন, এ বার লাল বলে খেলা বলে ব্যাটসম্যানদের একটু সুবিধে হলেও হতে পারে। ইংল্যান্ড ওপেনারের মন্তব্য, ‘‘গোলাপি বলটা একটু দ্রুত ব্যাটসম্যানের কাছে চলে আসে। লাল বলে আশা করি সে রকমটা
হবে না।’’
বেশ কয়েক বছর আগে ক্রলি নিজে ভারতে এসে স্পিনের বিরুদ্ধে কোচিং নিয়ে গিয়েছিলেন। স্পিনের বিরুদ্ধে ক্লাস করেছিলেন। সেখান থেকে কী শিখেছিলেন? ইংল্যান্ড ওপেনার বলেন, ‘‘আমার লক্ষ্য ছিল নিজের রক্ষণ মজবুত করা। স্পিনের বিরুদ্ধে রক্ষণাত্মক টেকনিক একটা বড় অস্ত্র।’’
তবে এ দিন নেটে স্পিনের বিরুদ্ধে সুইচ হিট, রিভার্স সুইপও মারতে দেখা যায় রুট, ক্রলিদের। যা ভারতীয় স্পিনারদের ছন্দ নষ্ট করার কাজে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। বোঝাই যাচ্ছে, শেষ টেস্টে মরিয়া হয়েই ঝাঁপাতে চলেছে রুটের ইংল্যান্ড।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy