সফল: জাতীয় শুটিংয়ে সোনা জিতে এই ছবি টুইট করলেন মনু (মাঝে)।
অনুপ্রেরণার কথা জানতে চাইলেই তিনি উল্লেখ করেন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার বাবা ও ফৌজি দাদুর কথা। শুটিংয়ে টোকিয়ো অলিম্পিক্সের যোগ্যতাও ইতিমধ্যেই অর্জন হয়ে গিয়েছে তাঁর।
ভারতের সেই শুটিং প্রতিভা মনু ভাকেরের প্রিয় ইভেন্ট ১০ মিটার এয়ার পিস্তল। ব্যক্তিগত ও মিক্সড টিম বিভাগে টোকিয়ো অলিম্পিক্স থেকে তাঁর সোনার সম্ভাবনা জানতে চাইলে হরিয়ানার মেয়ে আত্মবিশ্বাসী মেজাজে বলে দেন, ‘‘অলিম্পিক্স থেকে পদক আনতে গেলে দরকার পরিশ্রম ও পরিকল্পনা। সেটা ঠিকঠাক হলে আসতেই পারে সাফল্য। তার জন্যই দিনরাত এক করে পরিশ্রম করে যাচ্ছি।’’
হরিয়ানার ঝজ্জর জেলার সপ্তদশী মনুর দাদু চৌধরি রাজকরণ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। ৩ জাঠ রেজিমেন্টের হয়ে চিন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মোট তিনটি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। পরিবারের কথা জানিয়ে মনু এ বার বলতে শুরু করেন, ‘‘দাদু শুটার ছিলেন। তাঁর প্রেরণাতেই আমার এই খেলায় চলে আসা। বাবারও উত্তাল সমুদ্রে জীবন কাটানোর একাধিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাবা ও দাদু, দু’জনের কাছ থেকেই প্রতিকূল অবস্থাকে কী ভাবে নিজের অনুকূলে আনতে হয়, সে সম্পর্কে হাজারো গল্প শুনেছি। শিখেছি, শুটিংয়ে সফল হতে গেলে দরকার মানসিক দৃঢ়তা। এটা এখনও আরও বাড়াতে হবে আমাকে।’’
তার জন্য কী ধ্যান করেন? এ বার হেসে ফেলেন ভারতীয় শুটিংয়ের এই বিস্ময়-কন্যা। বলেন, ‘‘ধ্যান আমি তখনই করি, যখন আমার মন বিক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। না হলে শুটিংয়ে মনোনিবেশ করার জন্য আমার বিশেষ কিছু পদ্ধতি রয়েছে। আইপডে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ধুন ঠাসা থাকে। ওগুলোও আমার মন একাগ্র করে তোলার জন্য অনেক পদ্ধতির মধ্যে একটা।’’
মঙ্গলবারই জাতীয় শুটিংয়ে সিনিয়র ও জুনিয়র বিভাগে জোড়া সোনা জিতেছেন মনু। ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি নিয়ম করে অংশ নিতেন বক্সিং, স্কেটিং, টেনিসে। এই তিনটি খেলাতেই তিনি জাতীয় স্তরে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শুটিংকেই বেছে নেন তিনি। আর তার পরে সাফল্যই কথা বলছে মনুর হয়ে। গত এক বছর ধরেই ছুটছে তাঁর বিজয়রথ। আন্তর্জাতিক শুটিং স্পোর্ট ফেডারেশনের (আইএসএসএফ) প্রতিযোগিতায় সর্বকনিষ্ঠ ভারতীয় হিসেবে ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে সোনা জিতেছেন। জিতেছেন বিশ্বকাপ ফাইনালসের সোনাও। এ ছাড়াও গত এক বছরে যুব অলিম্পিক্স, কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপ ও আইএসএসএফ-এর দিল্লি, বেজিং ও রিয়ো দে জেনেইরো ও পুতিয়েন বিশ্বকাপ থেকেও সোনা জিতে ফিরেছেন মনু। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে ১০মিটার এয়ার পিস্তলে মিক্সড ডাবলস ও ব্যক্তিগত বিভাগের সঙ্গে ২৫ মিটার পিস্তল বিভাগেও নামতে পারেন মনু।
টোকিয়ো থেকে পদক জেতার লড়াইয়ে তাঁর আগে কারা রয়েছেন জানতে চাইলে বলেন, ‘‘শুটিংয়ে কেউ কারও আগে বা পিছনে নেই। প্রতিযোগিতার দিনে যে নিজের সেরাটা দিতে পারবে, বরফশীতল মস্তিষ্ক নিয়ে যে নিখুঁত নিশানায় লক্ষ্যভেদ করবে, সেই পদক নিয়ে ফিরবে।’’ যোগ করেন, ‘‘পুতিয়েনে বিশ্বকাপ থেকে সোনা জয় অত্যন্ত কঠিন ছিল। সেখানে যখন সোনা জিততে পেরেছি, তা হলে আশ্বস্ত থাকতে পারি ঠিক পথেই চলেছি।’’
অলিম্পিক্সের আগে গত দু’বছরে এই সাফল্য আপনার মাথা ঘুরিয়ে দেবে না তো? এ বার গম্ভীর গলায় মনু বলেন, ‘‘সাফল্য যেমন দেখেছি, তেমন এই দু’বছরে ব্যর্থতাও দেখেছি। যা আমাকে মানসিক ভাবে অনেক পোক্ত করেছে। এশিয়ান গেমসেই সোনা পাইনি। তখন অনেক মহল থেকেই বলা হয়েছিল, আমাকে নিয়ে নাকি বাড়াবাড়ি হচ্ছে। বিশ্বকাপ বা বিশ্বকাপ ফাইনালসে সোনা জেতার মুহূর্ত নয়। অলিম্পিক্সে ভাল ফল করার জন্য আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে এশিয়ান গেমসের ওই ব্যর্থ হয়ে ফেরার মুহূর্তগুলোও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy