গত কয়েক বছরে ভারতীয় টেনিসে সিঙ্গলস খেলোয়াড় বলতে ইউকি ভামব্রি এবং রামকুমার রমানাথনের উপরই প্রচারের বেশির ভাগ আলোটা এসে পড়ত। গত বছর থেকে দ্রুত উঠে আসা আর একটি নাম প্রজ্ঞেশ গুণেশ্বরন। চেন্নাইয়ের ২৯ বছর বয়সি তারকা গত মরসুমে দুরন্ত ফর্মে ছিলেন। বিশ্বের ২৩ নম্বর ডেনিস শাপোভালভকে এটিপি টুর ম্যাচে হারিয়ে চমকে দিয়েছিলেন। দেশের এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড়ও এখন তিনিই। তবে একটা সময় চোট-আঘাতে এতটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে, ভেবেছিলেন টেনিস ছেড়েই দেবেন।
কী ভাবে সেখান থেকে উঠে আসলেন তিনি? ‘‘খুব কঠিন ছিল সময়টা। কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছিল না। তার পরে ২০১৫ সালে ভেবেছিলাম শেষ একটা সুযোগ নিয়েই দেখি। যদি সফল না হই টেনিস ছেড়ে দেব। প্রথমে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে তিনশোর মধ্যে আসাই লক্ষ্য রেখেছিলাম। প্রচুর পরিশ্রম করেছি। তার পরে ধীরে ধীরে সাফল্য আসতে শুরু করল,’’ ইন্ডিয়ান ওয়েলস এবং মায়ামি মাস্টার্সে নামার প্রস্তুতি নেওয়ার ফাঁকে চেন্নাই থেকে আনন্দবাজারকে বলেন প্রজ্ঞেশ। চলতি মরসুমেই প্রজ্ঞেশ বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম একশোয় চলে আসেন। গত এক দশকে সোমদেব দেববর্মন এবং ইউকির পরে তৃতীয় ভারতীয় খেলোয়াড় হিসেবে যে কৃতিত্ব দেখান তিনি। তার পরে গত সোমবার কেরিয়ার সেরা ৯৪ নম্বরে উঠে এসেছেন। তার এই উত্থানের পিছনে জার্মানির ওয়াসকে টেনিস অ্যাকাডেমির অবদান কতটা, যেখানে তিনি ২০১১ থেকে অনুশীলন করছেন? ‘‘প্রচুর অবদান রয়েছে। অনেক দিন হল আমি এই অ্যাকাডেমির সঙ্গে যুক্ত। আমার এগিয়ে যাওয়ার পথে ঠিক কী কী প্রয়োজন, সেটা ওখানকার প্রশিক্ষকরা খুব ভাল করে জানেন। যে রকম পরিকল্পনা ওখান থেকে করে দেওয়া হয়, সেটাই আমি মেনে চলি।’’ পাশাপাশি আরও এক জনকে প্রজ্ঞেশ কৃতিত্ব দিচ্ছেন তাঁর ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য। প্রজ্ঞেশ বলেন, ‘‘আমাকে এই জায়গায় উঠে আসতে দারুণ ভাবে সাহায্য করেছেন ট্রেনার ক্রিশ্চিয়ান বস। প্রায় ১৫ বছর ওঁকে চিনি। নেদারল্যান্ডসের অলিম্পিক্স দলের সঙ্গে আছেন তিনি এখন। উনি আমার ফিটনেস ফেরানোর যে নকশা তৈরি করে দিয়েছিলেন সেটা হুবহু অনুসরন করে গিয়েছি।’’
শুধু পেশাদার টুরেই নয়, প্রজ্ঞেশ ভারতীয় ডেভিস কাপ দলেরও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। মাসখানেক আগে কলকাতায় ইটালির বিরুদ্ধে ভারতীয় দলের হয়েও নেমেছিলেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতা কেমন? ‘‘ইটালির বিরুদ্ধে কলকাতায় আমি ভাল খেলতে পারিনি। তবে এই টাই থেকে অনেক কিছু শিখেছি। এই শিক্ষাগুলো ভবিষ্যতে কাজে লাগাব। দেশের প্রতিনিধিত্ব করা সব সময়ই আলাদা একটা ব্যাপার। আমার কাছে এটা বিরাট সম্মানের।’’ কলকাতায় সবচেয়ে বেশি কী ভাল লাগল? ‘‘ডেভিস কাপের জন্য ব্যস্ত থাকায় সে ভাবে কলকাতায় কোথাও যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তবে শুনেছি কলকাতা মিষ্টির জন্য খুব বিখ্যাত,’’ বলেন প্রজ্ঞেশ।
বাঁ হাতি খেলোয়াড় প্রজ্ঞেশের আক্রমণাত্মক টেনিসের প্রচুর প্রশংসা শোনা যায় টেনিস মহলে। তিনি কি কাউকে অনুসরণ করেন? তাঁর আদর্শ কে? প্রশ্ন করতেই হেসে ফেলে প্রজ্ঞেশ বলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন খেলোয়াড় প্যাট রাফটারের খেলা খুব ভাল লাগত। জানি না তাঁর কারণ কী। হয়তো ওঁর সার্ভ অ্যান্ড ভলি স্টাইলে খেলার জন্য।’’
যে ভাবে তিনি এগোচ্ছেন সেটা ধরে রাখতে পারলে আগামী দু’বছরে কোন লক্ষ্য স্থির করেছেন? প্রজ্ঞেশ বলেন, ‘‘চোট-আঘাত সামলে নিয়মিত খেলতে পারা এবং দু’বছরে প্রথম ৫০ জনের মধ্যে আসাটাই প্রথম লক্ষ্য। যদি সব কিছু ঠিকঠাক থাকে তা হলে বিশ্বাস করি প্রথম ২০-৩০ জনের মধ্যেও আসতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy