রুপোজয়ী মারিয়া। ছবি রয়টার্স
মানবিকতার অসাধারণ নিদর্শন দিলেন মারিয়া আন্দ্রেজিক। পোল্যান্ডের এই জ্যাভলিন থ্রোয়ার টোকিয়ো অলিম্পিক্সে জেতা নিজের রুপোর পদক নিলামে তুলে আট মাসের এক শিশুর চিকিৎসার জন্য অর্থ জোগাড় করলেন। তবে সেই পদক তাঁর হাতছাড়া হচ্ছে না। যে সংস্থা নিলামে সেই পদক কিনেছিল তারা সেটি মারিয়াকে ফিরিয়ে দিয়েছে।
মারিয়ার নিজের জীবনের গল্পও শিহরিত করার মতো। ২০১৬ রিয়ো অলিম্পিক্সে চতুর্থ হয়েছিলেন মারিয়া। এর পরেই তিনি হাড়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। ২০১৮-তে সুস্থ হয়ে উঠে নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েন অলিম্পিক্স পদক জিততে। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে ৬৪.৬১ মিটার জ্যাভলিন ছুড়ে রুপো জিতে নেন তিনি।
দেশে ফিরে ফেসবুকের মাধ্যমে পোল্যান্ডের আট মাসের অসুস্থ শিশু মিলোসেচের খবর পান মারিয়া। আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড হাসপাতালে মিলোসেচের হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার করাতে সাধারণ মানুষের থেকে অর্থ জোগাড় করা হচ্ছিল। মোট আড়াই লক্ষ পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা) দরকার ছিল। এর পরেই নিজের পদক নিলাম করার সিদ্ধান্ত নেন মারিয়া। ফেসবুকে লেখেন, ‘এই সিদ্ধান্ত নিতে আমার বেশি সময় লাগেনি। এই প্রথম বার কারও জন্য অর্থ জোগাড়ের উদ্যোগে অংশ নিলাম। জানতাম যেটা করছি ঠিক করছি। মিলোসেকের অবস্থা দেখে সত্যিই খুব খারাপ লেগেছিল। তাই আমিও সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছি’।
পোলান্ডের এক সংস্থা জাবকা নিলামে এক লক্ষ ৩০ হাজার পাউন্ড দিয়ে সেই পদক কিনে নেয়। এরপরেই তারা সেই পদক ফিরিয়ে দেয় মারিয়াকে। সংস্থার উদ্দেশে মারিয়া লিখেছেন, ‘জাবকার ঋণ আমি কোনওদিন শোধ করতে পারব না। এই পদক আসলে লড়াই, বিশ্বাস এবং প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যাওয়ার স্মারক। এখন থেকে এটা আর একটা লড়াইয়ের চিহ্ন হিসেবে থেকে যাবে’। পরে এক টেলিভিশন চ্যানেলে মারিয়া বলেছেন, “পদকের আসল মূল্য থাকে মনের ভিতরে। পদক তো কেবল একটা বস্তু। কিন্তু বাকিদের জীবনে এই জিনিস অনেক খুশি নিয়ে আসতে পারে। আলমারিতে ধুলো পড়ার চেয়ে যদি এটি কারওর জীবন বাঁচাতে পারে তাহলে সব থেকে ভাল। সেই কারণেই এটা নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, মিলোসেকের চিকিৎসার প্রায় পুরো অর্থই জোগাড় হয়ে গিয়েছে। শুধু মারিয়া নন, দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ ওই শিশুর চিকিৎসার জন্য অর্থ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy