Advertisement
E-Paper

৩৬ অলআউটের মাঝরাতেই শুরু মিশন মেলবোর্ন

বিরাটের ফোন নিয়ে শ্রীধর: তখন মাঝরাত। সাড়ে বারোটার কাছাকাছি বাজে।

কারিগর: শাস্ত্রীয় মন্ত্রেই গ্লানি ঝেড়ে ফেলে রাহানেদের প্রত্যাবর্তন। ফাইল চিত্র

কারিগর: শাস্ত্রীয় মন্ত্রেই গ্লানি ঝেড়ে ফেলে রাহানেদের প্রত্যাবর্তন। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:০৭
Share
Save

অ্যাডিলেডে ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার পরে ভারতের কোচিং স্টাফ-এর কাটে বিনিদ্র রাত। মাঝরাতের দিকে অধিনায়ক বিরাট কোহালি যোগাযোগ করেন ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধরের সঙ্গে। কিছুক্ষণ পরেই দলের ‘থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক’ একজোট হয়। শুরু হয় ‘মিশন মিলবোর্ন’-এর পরিকল্পনা। সেখান থেকেই সিরিজ জয়ের পথে এগোনোর নীল নকশা তৈরি করে ফেলে ভারতীয় শিবির। আর অশ্বিনের সঙ্গে ইউটিউব চ্যানেলে শ্রীধরের কথোপকথনে এ রকমই নানা অজানা বিষয় উঠে হল।

বিরাটের ফোন নিয়ে শ্রীধর: তখন মাঝরাত। সাড়ে বারোটার কাছাকাছি বাজে। যে রাতে আমরা অ্যাডিলেড টেস্টে হারি। বিরাট কোহালি আমাকে মেসেজ করল, ‘‘কী করছ তুমি?’’ আমি তো চমকে যাই সেটা দেখে। ভাবলাম, এই সময়ে বিরাট মেসেজ করছে কেন? আমি ওকে বললাম, ‘‘হেড কোচ (রবি শাস্ত্রী), আমি, বি অরুণ ও বিক্রম রাঠৌর একসঙ্গে বসে আছি। ও বলল, ‘‘আমিও তোমাদের সঙ্গে যোগ দিতে আসছি।’’ বললাম, ‘‘কোনও ব্যাপার নয়, চলে এস।’’ ও আসার পরে আমরা আলোচনা শুরু করলাম। তখন থেকেই ‘‘মিশন মেলবোর্ন’’-এর নকশা তৈরি হতে শুরু করে। রবি শাস্ত্রী একটা কথা বললেন, ‘‘এই ৩৬-টাকে একটা ব্যাজের মতো পরে থাকতে হবে। এই ৩৬টাই এই টিমকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’

জাডেজার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে শ্রীধর: আমরা প্রথম দিকে কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরে আমরা আলোচনা শুরু করলাম অ্যাডিলেডে হারের পরে কী কী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিরাট পরের দিন সকালে অজিঙ্ককে ডাকল। আমাদের মধ্যে খুব ভাল আলোচনা হয়েছিল। ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার পরে সাধারণত ব্যাটিং আরও শক্তিশালী করার দিকেই জোর দেয় একটা দল। কিন্তু রবি শাস্ত্রী, বিরাট ও অজিঙ্ক ঠিক করল, আমাদের বোলিংয়ে আরও শক্তি বাড়াতে হবে। এই জন্য বিরাটের (কোহালি অ্যাডিলেড টেস্টের পরেই দেশে ফিরে আসেন পিতৃত্বের ছুটি নিয়ে) বদলে রবীন্দ্র জাডেজা দলে এল। এটা একেবারে সেরা চাল ছিল।

বক্সিং ডে টেস্টে স্টিভ স্মিথকে আউট করার পরিকল্পনা নিয়ে অশ্বিন: টস হারার পরে রবি ভাই আমার কাছে এসে ডাকলেন, ‘‘অ্যাশ’’। আমি পোশাক পরছিলাম তখন। কিছুটা অবাক হয়ে যাই। বললাম, ‘‘হ্যাঁ রবি ভাই।’’ রবি ভাই নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে গর্জন করে বললেন, ‘‘প্রথম ১০ ওভারে বল করতে হবে।’’ আমি বললাম, প্রথম দশ ওভারে বল করতে হবে মেলবোর্নে? রবি ভাই বললেন, ‘‘আমি জিঙ্কসের (অজিঙ্ক রাহানে) সঙ্গে কথা বলেছি, পিচে ভিজে ভাব আছে, হয়তো বল ঘুরতে পারে।’’ ওঁর কথা মতো শুরুর দিকেই আমায় বোলিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বল করতে গিয়ে দেখি, পিচে পড়ে তা ঘুরছে। নিজেকে বললাম, ‘‘হচ্ছেটা কী।’’ (মেলবোর্নে প্রথম ইনিংসে আট বলে শূন্য রানে অশ্বিনের বলে
আউট হন স্মিথ)।

শ্রীধর: যখন অশ্বিন বল করতে এল মেলবোর্নে প্রথম সেশনে আমরা তখন কোচের জন্য নির্দিষ্ট থাকা বক্সে ছিলাম। আমরা তিন জন বসে আছি। আমাদের সঙ্গে ছিল ভিডিয়ো বিশ্লেষক হরি। রবি ভাই এসে গর্জে উঠল, ‘‘আমি জিঙ্কসকে বলেছি অ্যাশকে শুরুর দিকে বোলিং করাতে। স্মিথের বিরুদ্ধে ও কিছুটা মানসিক লড়াইয়ের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে (অ্যাডিলেড টেস্টে অশ্বিন আউট করেছিলেন স্মিথকে)। বল নিশ্চিত ভাবে কিছুটা সাহায্য করবে। এটা তো লাল বল। গোলাপি বল নয়। আমি অপেক্ষা করছি। অশ্বিনকে প্রথম ৪০ মিনিটের মধ্যে বল করতে দেখতে চাই।’’ বলার পরে উত্তেজিত ভাবে হাততালি দিচ্ছিলেন উনি। অশ্বিনকে বল করতে দেখে বোলিং কোচ (বি অরুণ) খুব উত্তেজিত হয়ে পড়লেন। বললেন, ‘‘এ বার কিছু একটা নিশ্চয়ই হবে।’’ অশ্বিনের প্রথম বলটা লাফিয়ে উঠল। আমার হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। প্রথমেই ভাবলাম, ‘‘এই উইকেটে ঋষভ পন্থ অশ্বিনের বোলিংয়ে উইকেটকিপিং কী ভাবে করবে? ও চাপে আছে। সিরিজে প্রথম টেস্টে খেলছে। এটাই আমার মাথায় ঘুরছিল। আমি ওকে তখন বলতে চাইছিলাম, ২-৩ ই়ঞ্চি পিছনে দাঁড়াতে। সাহাকে (ঋদ্ধিমান) ডেকে এই কথাটা বললামও। আশা করছিলাম লাঞ্চের আগে আমরা চার উইকেট তুলে নেব।

ব্রিসবেনে সিরাজের ৫ উইকেট নিয়ে শ্রীধর: দু’বছর আগে সিরাজ আমায় ফোনে মজা করে বলেছিল, ‘‘স্যর কবে আমায় ভারতীয় দলে ডাকবেন?’’ যখনই ও ভারত ‘এ’-র হয়ে উইকেট পেত, আমায় ফোন করে বলত, ‘‘স্যর কখন ডাকবেন আমায়?’’ আমি মনে মনে নিজেকে বলতাম, ‘‘ও এমন ভাবে আমায় বলছে, যেন কাকে ডাকব আর কাকে ডাকব না সেটা আমার হাতে।’’ কিন্তু যে ভাবে বাবার মৃত্যুর পরে ও মানসিক দৃঢ়তা দেখিয়েছে তাকে কুর্নিশ করছি।

Cricket Team India Adelaide test Melbourne Test

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।