নজরে: কেভিনের সঙ্গে দুরন্ত জয়ের নায়ক পল (ডান দিকে)।
বাবাকে ক্রিকেট খেলতে দেখতেন ছোট থেকে। যদিও পেশাদার ক্রিকেটার ছিলেন না। প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি করার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলতেন শখে। রাগবির রেফারি হিসেবেও পরিচিতি ছিল বাবার। দাদাও দেশের হয়ে রাগবি খেলে জনপ্রিয়। ছোটবেলায় তাই রাগবির প্রতিই আকর্ষণ বেশি ছিল পল স্টার্লিংয়ের। কিন্তু ইংল্যান্ডে ঘুরতে গিয়েই ক্রিকেটের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়ে গেল। স্কুল ক্রিকেটে দারুণ খেলে মিডলসেক্সে সুযোগ পান। ২০০৮ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় স্টার্লিংয়ের।
মঙ্গলবার বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় ওয়ান ডে ম্যাচে জয়ের নায়ক সেই স্টার্লিংই। ১২৮ বলে ১৪২ রানের দুরন্ত ইনিংস ক্রিকেটবিশ্বকে উপহার দেন আয়ারল্যান্ডের ওপেনার। অধিনায়ক অ্যান্ড্রু ব্যালবাইরিনের সঙ্গে ২১৪ রানের জুটি গড়ে ৩২৯ রান তাড়া করে আয়ারল্যান্ড। ৯ বছর আগে বিশ্বকাপের ম্যাচে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ঠিক ৩২৯ রান তাড়া করেই ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্রুততম সেঞ্চুরি করে (৫০ বলে) আয়ারল্যান্ডকে জিতিয়েছিলেন কেভিন ও’ব্রায়ান। সেই সতীর্থই স্টার্লিংদের অনুপ্রেরণা। তিনি শিখিয়েছেন, বিপক্ষে বড় নাম থাকলেও ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই।
সাউদাম্পটনে সিরিজের শেষ ওয়ান ডে ম্যাচে ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনিও। কেভিনের সঙ্গেই এদিন যোগাযোগ করল আনন্দবাজার। দলে তরুণ ক্রিকেটারদের তিনিই এখন মেন্টর। নিজের আগ্রাসন ছড়িয়ে দিয়েছেন দলের মধ্যে। সাউদাম্পটন থেকে কেভিন বললেন, ‘‘রান তাড়া করার আগে ড্রেসিংরুমে কথা হয় স্টার্লিংয়ের সঙ্গে। তখন থেকেই খুব আত্মবিশ্বাসী ছিল। বলে গিয়েছিল, উইকেট ভাল। স্বাভাবিক ক্রিকেট খেললেই ম্যাচ বেরিয়ে যাবে। আর স্টার্লিংয়ের স্বাভাবিক ক্রিকেট মানেই আগ্রাসন।’’
খুব একটা ভুল বলেননি কেভিন। ২০১১ বিশ্বকাপে ইডেনে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ৭২ বলে ১০২ রানের ইনিংস জিতিয়েছিল আয়ারল্যান্ডকে। ২০১৫ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৮৪ বলে ৯২ রান করে ফের জয়ের নায়ক তিনি। কী করে এতটা আগ্রাসী হয়ে উঠলেন স্টার্লিং? কেভিনের জবাব, ‘‘রাগবি খেলে নিজের শক্তি বাড়ায় ও। ছোট থেকেই রাগবি খেলতে পছন্দ করে পল। আমরাও ওয়ার্ম আপের সময় ফুটবলের পরিবর্তে রাগবি খেলি। সেখানে পলের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নেওয়া প্রায় অসম্ভব। এমনকি পারলে সারা দিন জিমে সময় কাটাতে পারে। আর ভালবাসে নানা রকম মাংস খেতে।’’
৩৬ বছর বয়সি কেভিন এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সাবলীল। কিন্তু আগামী বিশ্বকাপ খেলবেন কি না, নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছেন না। তাই এখন থেকেই তরুণ ক্রিকেটারদের মেন্টর হিসেবে কাজ করতে শুরু করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আয়ারল্যান্ডে বিশেষজ্ঞ কোচ নেই। আমাদের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারদেরই দায়িত্ব নিতে হয় জুনিয়র ক্রিকেটার তুলে আনার। আমি, (উইলিয়াম) পর্টারফিল্ডরা চেষ্টা করি জুনিয়র স্তরের ম্যাচ দেখার। কেউ ভাল খেললে অধিনায়ককে এসে বলি। আমি চাই আয়ারল্যান্ডও ক্রিকেটবিশ্বে দাপটের সঙ্গে এগিয়ে যাক। জন্য সিনিয়র ক্রিকেটারেরা অবশ্যই সাহায্য করবে।’’
এ বছর থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রত্যেকটি ওয়ান ডে ম্যাচ বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ। তাই সিরিজের শেষ ম্যাচের গুরুত্ব প্রথম ম্যাচের মতোই সমান। দশ পয়েন্ট পেয়ে যাত্রা শুরু করল আয়ারল্যান্ড। বিশ্বকাপ জয়ী দলের বিরুদ্ধে এই ঐতিহাসিক জয় দলের মনোবল অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে বলে ধারণা কেভিনের। জয়ের পরে বিপক্ষ অধিনায়ক অইন মর্গ্যান অভিনন্দন জানিয়ে গিয়েছেন তাঁর প্রাক্তন সতীর্থকে। কেভিন বলছিলেন, ‘‘অইন বরাবরই ভদ্র ক্রিকেটার। ওর সঙ্গে বহু ম্যাচে খেলেছি। অন্যের সাফল্যকে বরাবর মর্যাদা দেয়। জেতার পরে আমাকে এসে বলে গেল, তোমাদের হার-না-মানা আচরণ দেখে আমরা মুগ্ধ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy