প্রস্তুতি ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স।—ছবি সংগৃহীত।
লর্ডসেই শুধু বোলারদের দাপট দেখা যাচ্ছে না। অ্যাশেজের প্রস্তুতি হিসেবে সাউদাম্পটনে নিজেদের মধ্যে যে অনুশীলন ম্যাচ খেলছে অস্ট্রেলিয়া, তাতেও দেখা যাচ্ছে পেসারদের শাসন। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে লর্ডসে প্রথম দিন আর সাউদাম্পটনের দুটো দিন দেখে একটা জিনিস পরিষ্কার— সুইংয়ের সামনে দিশাহারা দেখিয়েছে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের। প্রথম দিন ইংল্যান্ড শেষ হয়ে যায় ৮৫ রানে। আর সাউদাম্পটনে প্রথম দু’দিনে পড়েছে ৩২ উইকেট।
এই সুইং বোলিংয়ের পিছনে যেমন আয়ারল্যান্ডের টিম মুরতাঘ আর অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স, তেমনই রয়েছে ডিউকস বল। সবুজ পিচ, ইংল্যান্ডের আবহাওয়ার পাশাপাশি ডিউকস বলের সুইং ঘাতক হয়ে উঠেছে ব্যাটসম্যানদের জন্য।
ইংল্যান্ডের মাটিতে ডিউকস বলেই টেস্ট খেলা হয়। যে বলে সুইং অনেক বেশি পাওয়া যায় বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যে কারণে মনে করা হচ্ছে, আসন্ন অ্যাশেজে যদি পিচে হাল্কা ঘাসও থাকে, তা হলে এই ডিউকস বল ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলে দিতে পারে। মুরতাঘ এবং কামিন্স— দু’জনেই তুলে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। লর্ডসে দ্বিতীয় দিনে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা কিছুটা রানে ফিরলেও অস্ট্রেলিয়া শিবিরে ডেভিড ওয়ার্নার ছাড়া আর কাউকে স্বচ্ছন্দ দেখায়নি সুইং বলের সামনে। দু’দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণে চার দিনের প্র্যাক্টিস ম্যাচ শেষ আড়াই দিনে।
ব্র্যাড হাডিন একাদশের হয়ে ২৪ রানে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন কামিন্স। অন্য দিকে গ্রেম হিক একাদশের হয়েও পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন মিচেল মার্শ। স্টিভ স্মিথের মতো ব্যাটসম্যানও সামলাতে পারেননি কামিন্সকে। গত কয়েক মাস সাদা বলে সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলা কামিন্স এখন তৈরি নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য। অ্যাশেজের আগে দারুণ ছন্দে থাকা এই ফাস্ট বোলার বলেছেন, ‘‘আমরা ক্রিকেট খেলছি ম্যাচে প্রভাব ফেলার আর জেতার জন্য। সে-ই কাজটা অ্যাশেজেও করতে চাই। বাড়িতে বসে দেখছিলাম, ডিউকস বল কতটা সুইং করছে। যা দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠাটা এক জন পেসারের পক্ষে খুবই স্বাভাবিক। আশা করব, অ্যাশেজে এমন উইকেট পাব যেখানে বল সুইং করবে আবার সিম মুভমেন্টও থাকবে।’’
ডিউকস বল কেন এত পছন্দ পেসারদের? অস্ট্রেলিয়া নিজেদের দেশে খেলে কোকাবুরা বলে। ভারতে খেলা হয় এসজি বলে। এই দুটো বলের চেয়ে ডিউকসের পালিশ অনেক বেশি এবং ইংল্যান্ডের মাটিতে সেই পালিশ অনেকটা বেশি সময় থাকে। ডিউকস, কোকাবুরা বা এসজি বলের সেলাইয়ে হয়তো সামান্য তফাত থাকে, কিন্তু পালিশ বেশি ঝকঝকে হওয়ার কারণে ডিউকস বল ইংল্যান্ডের পরিবেশে বেশি সুইং করে।
প্রস্তুতি ম্যাচে এই সুইং সামলাতেই নাজেহাল হয়ে গিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা। দু’ইনিংসে স্মিথ করেন নয় এবং আট রান। একই রকম ব্যর্থ মার্কাস হ্যারিস (৬ ও ১৫), জো বার্নস (১৮ ও ০), ট্রাভিস হেড (১ ও ০), পিটার হ্যান্ডসকম্ব (২)। একমাত্র ওয়ার্নার করেন ৯৪ বলে ৫৮।
অস্ট্রেলিয়ার প্রচারমাধ্যমে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, অ্যাশেজের আগে এই রকম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে কী লাভ হল স্মিথদের? ওয়ার্নার অবশ্য মনে করেন, টেস্টের আগে এ রকম কঠিন পরিস্থিতিতে খেলে তাঁদের উপকারই হবে। অস্ট্রেলিয়ার বাঁ হাতি ওপেনার বলেন, ‘‘একটা উইকেটে যে চার রকম সমস্যা যে তৈরি হতে পারে, তা কেউ আশা করে না। সাউদাম্পটনে যেমন বল উঁচু হয়েছে, নিচু হয়েছে। আবার দু’দিকে কাট করেছে, সুইংও হয়েছে। কিন্তু তার পরেও বলব, এই পরিবেশে খেলে টেস্টের জন্য তৈরি হওয়াটা বেশ ভাল ব্যাপার। তা হলে সব কিছুর জন্যই তৈরি থাকা যাবে।’’
রিকি পন্টিং আবার আরও একটা সমস্যার কথা বলে সতর্ক করে দিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়াকে। যে সমস্যার নাম হল, বেন স্টোকস। পন্টিং বলেছেন, ‘‘স্টোকস এখন অনেক পরিণত হয়েছে। বিশ্বকাপে বোঝা গিয়েছে, ও পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলছে। স্টোকস এখন নিজের ক্ষমতা বুঝতে পারছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy