ইসলামাবাদে অনূর্ধ্ব-১২ এশিয়ান টেনিসের যোগ্যতা অর্জন পর্বে খেলতে গিয়েছে খুদে ভারতীয়রা। —প্রতীকী চিত্র
নিরামিষ খাবার, কিছু না বলতেই অনুশীলনের ব্যবস্থা, কড়া নিরাপত্তা, ভারতের ছয় খুদে খেলোয়াড়কে রাজার হালে রেখেছে পাকিস্তান। এরা ইসলামাবাদে অনূর্ধ্ব-১২ এশিয়ান টেনিসের যোগ্যতা অর্জন পর্বে খেলতে গিয়েছে।
আরব চাওলা, ওজাস মেহলাওয়াত এবং রুদ্র বথাম রয়েছে ছেলেদের দলে। মেয়েদের দলে রয়েছে মায়া রেবতী, হরিতশ্রী বেঙ্কটেশ এবং জাহ্নবী কাজলা। ছেলেদের দলের কোচ হিসেবে রয়েছেন আশুতোষ সিংহ। মেয়েদের কোচ নমিতা বল।
প্রাক্তন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন আশুতোষ ২০০৭ সালে পাকিস্তানে ‘ফ্রেন্ডশিপ সিরিজ’ খেলতে গিয়েছিলেন। তিনি আপ্লুত। জানিয়েছেন, তাঁদের জার্সিতে ভারতের জাতীয় পতাকা রয়েছে। সেটা দেখা মাত্রই তাঁদের নিয়ে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনা পাকিস্তানে পা রাখার আগে থেকেই।
আশুতোষ বলেন, ‘‘দোহা বিমানবন্দরে আমাদের জার্সিতে ভারতের তেরঙা দেখার পরেই কিছু লোকজন হইচই শুরু করে দিয়েছেন। জানলাম ওঁরা পাকিস্তানি। আমরা যে ইসলামাবাদ যাচ্ছি, সেটা জেনে ওঁরা খুব খুশি। আমরা ভারতীয় খেলোয়াড় জানা মাত্রই সবাই আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেন।’’
পাকিস্তানে পৌঁছনো মাত্র কী অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেটা জানিয়ে আশুতোষ বলেন, ‘‘বিমানবন্দরে অভিবাসন দফতরে আমাদের পৌঁছনোর আগে থেকেই পাকিস্তান টেনিস ফেডারেশন সব কাগজপত্র প্রস্তুত করে রেখেছিল। আমাদের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, আমাদের অতিথি হিসেবে পেয়ে পাকিস্তান খুব খুশি।’’
পাকিস্তান মানেই নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক থাকে। কিন্তু তাঁদের ক্ষেত্রে ছবিটি সম্পূর্ণ ভিন্ন জানিয়ে আশুতোষ বলেন, ‘‘আমরা নিরাপত্তা নিয়ে একটুও ভাবছি না। এমনকি যাদের নিয়ে এসেছি, তাদের মা-বাবারাও আর চিন্তিত নন। আকিল খান-সহ পাকিস্তানের সব বড় টেনিস খেলোয়াড়ই আমাদের বন্ধু। এরা সব সময় রাজনীতি থেকে টেনিসকে দূরে রাখে।’’
অভিভূত নমিতাও। বলেন, ‘‘আমাদের ছোটখাটো বিষয়ের দিকেও ওঁরা খেয়াল রাখছেন। আমাদের দলে জাহ্নবী নিরামিষ খায়। শুধু ওর জন্যই রোজ নিরামিষ খাবারের বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনুশীলনের জন্য টেনিস কোর্টের ব্যবস্থা করার কথা আমাদের। কিন্তু ওঁরাই সব করে দিচ্ছেন।’’
এখানেই শেষ নয়। নমিতা জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের যে দিন পৌঁছনোর কথা ছিল, তার এক দিন আগে আমরা চলে এসেছি। নিয়ম অনুযায়ী, সে দিনের হোটেল ভাড়া আমাদের দেওয়ার কথা। কিন্তু আয়োজকরা জানিয়েছেন, আমাদের একটা পয়সাও দিতে হবে না। পাকিস্তানে এসে যে সম্মান, ভালবাসা পাচ্ছি, তাতে আমরা অভিভূত। দিনে ১০ বার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে আমাদের কোনও অসুবিধে হচ্ছে কি না, কোনও কিছুর দরকার কি না।’’
পাকিস্তান টেনিস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট সেলিম সৈফুল্লা অবশ্য এতে খুশি নন। তাঁর খুব ইচ্ছে, ভারতের সিনিয়র দলকেও আমন্ত্রণ জানানো। বলেন, ‘‘ভারত যথেষ্ট শক্তিশালী দল। ওদের সঙ্গে খেললে আমাদের খেলোয়াড়রা উপকৃত হবে। এখন ছোটদের দল এসেছে। ওদের সঙ্গে খেলে আমাদের ছোটরাও লাভবান হবে। আমরা ওদের যাবতীয় খেয়াল রাখছি। একটাই অনুরোধ, ভারতীয় দল যেখানে যাবে, আমাদের যেন জানিয়ে যায়।’’
অনূ্র্ধ্ব-১২ স্তরে ভারতের এক নম্বর খেলোয়াড় আরব। তার বাবা জিতেন্দ্র চাওলা বলেন, ছেলেকে পাকিস্তানে পাঠানো নিয়ে তাঁর কোনও দিনই আপত্তি ছিল না। তিনি জানান, ‘‘অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু আমি জানতাম, আমাদের ছেলে-মেয়েরা ওখানে জাতীয় অতিথি হয়ে যাচ্ছে। তাই সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আরবও খুব উৎসাহী ছিল ওখানে যাওয়ার জন্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy