ম্যাচ শেষের পর এইচএস প্রণয় এবং লক্ষ্য সেন। ছবি: পিটিআই।
ব্যাডমিন্টনে জোড়া ধাক্কার পরে প্যারিস অলিম্পিক্সে নতুন আশার নাম এখন লক্ষ্য সেন। এ দিন নিজের দেশেরই এইচ এস প্রণয়কে ২১-১২, ২১-৬ উড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন তিনি। অবাছাই হিসেবে অলিম্পিক্সে নেমেছেন লক্ষ্য। কিন্তু আগের ম্যাচেই অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন জোনাটন ক্রিস্টিকে হারিয়েছেন। আর মাত্র দু’টি ম্যাচ জিতলে অভিষেকেই পদক জিততে পারবেন তিনি।
শেষ আটে চিনা তাইপের চৌ তিয়েন চেনের বিরুদ্ধে শুক্রবারেই নামছেন ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের নতুন মুখ। ৩৪ বছর বয়স হলেও চৌ কিন্তু যোদ্ধা। কোলোন ক্যানসারের প্রাথমিক পর্ব থেকে সুস্থ হয়ে কোর্টে ফিরেছেন। অলিম্পিক্সের আগে পুরো শরীরের ডাক্তারী পরীক্ষা করিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই প্রাথমিক পর্বের ক্যানসার ধরা পড়ে। তাতেও প্যারিসে আসা কেউ আটকাতে পারেনি। অস্ত্রোপচার করিয়ে নেমে পড়েছেন। এই অলিম্পিক্সের আর এক প্রেরণামূলক কাহিনি তিনি।
লক্ষ্যের সঙ্গে চার বারের সাক্ষাতে তিন বার জিতেছেন চৌ। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, প্যারিসে অনেক আগ্রাসী ব্যাডিমন্টিন খেলছেন লক্ষ্য। অনেক ঝরঝরে দেখাচ্ছে। জোনাটন ক্রিস্টিকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসেও টগবগ করছেন। জায়ান্ট কিলার হিসেবে ইতিমধ্যেই ব্যাডমিন্টন দুনিয়ায় পরিচিতি হয়ে গিয়েছে তাঁর। বৃহস্পতিবার চৌ-কেও কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলবেন বলে আশা করা যায়। তবে মোক্ষম সময়ে স্নায়ুর চাপ নিতে পারেন কি না, সেটাও দেখার।
লক্ষ্য জিতলেও পতন হল সাত্ত্বিক-চিরাগ জুটির। মালয়েশিয়ার অ্যারন চিয়া এবং সো উই ইকের বিরুদ্ধে প্রথম গেমে জিতে দারুণ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ২১-১৩, ১৪-২১, ১৬-২১ ফলে হেরে গেলেন সাত-চি। যাঁদের নিয়ে অনেকে স্বপ্ন দেখেছিলেন। চিয়া-সো জুটি টোকিয়োয় ব্রোঞ্জ জিতেছিল। ২০২২-এ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে এত আলগা শট খেলে পার পাওয়া কঠিন। নাকি নক-আউটের ম্যাচে পড়তেই ‘চোক’ করে গেলেন তাঁরা? চর্চা চলতে থাকবে। হারের পরে মিক্সড জ়োনে যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে এলেন, তখনও সাত-চি জুটিকে বেশ নড়বড়ে দেখাল। গলা কাঁপছে, অন্যমনস্ক হয়ে দু’একবার প্রশ্ন শুনতে পেলেন না। এত আশা করে এসেছিলেন অলিম্পিক্সে পদক জিতবেন বলে। স্বপ্নভঙ্গের পরে এমন হতেই পারে। আবার মাঝেমধ্যে মনে হচ্ছে, দিনটাই কি তা হলে এমন ছিল? কোর্টে, কোর্টের বাইরে ছন্দ খুঁজে বেড়ালেন তাঁরা? আর কপালও খারাপ যে, পোর্ত দে লা শ্যাপেল এরিনায় এত দিন ভারতীয় সমর্থন খুব জোরালো ছিল। কিন্তু এ দিন সাত্ত্বিক-চিরাগ যখন পিছিয়ে পড়েছে, যখন জনতা তাঁদের টেনে তুলতে পারত, তখন গ্যালারি খুব সরব ছিল না। মালয়েশিয়ার গর্জন অনেক বেশি শোনা যাচ্ছিল। সেই সময় ‘ভারত মাতা কী জয়’ আর ‘জিতেগা ভাই জিতেগা’ খুব একটা শোনা গেল না। কোর্টের মতো গ্যালারিতেও এ দিন রাজ করল চিন, মালয়েশিয়া।
ওদিকে, ইন্ডিয়া হাউসে এসে প্রকাশ পাড়ুকোন খুব প্রশংসা করেছেন ছাত্র লক্ষ্য সেনের। বলেছেন, ‘‘লক্ষ্য ভাল ফর্মে আছে, ভাল খেলছে। অলিম্পিক্সের জন্য খুব ভাল প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। এবং, খুবই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দেখাচ্ছে।’’ প্রণয়কে হারানোর পরে মিক্সড জোনে এলেও বেশি ক্ষণ দাঁড়ালেন না লক্ষ্য। শুধু বলে গেলেন, ‘‘আমি খুশি নিজের খেলা নিয়ে। এ ভাবেই চালিয়ে যেতে চাই।’’
তখন কে জানত, একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাতের দিকে সিন্ধুর বিদায়ী বিলাপ শুনতে হবে! খেলা যেমন দু’হাত ভরে দেয়, তেমন নিঃস্ব করে দিয়েও চলে যায়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy