আশাবাদী: ঋষভে (ডানদিকে) আস্থা রয়েছে বিরাটের। টুইটার, ফাইল চিত্র
এক বিশ্বকাপে লক্ষ্যচ্যুত হয়ে আর একটা বিশ্বকাপের জন্য দলকে তৈরি করে নিতে চান বিরাট কোহালি। যে দল গডার ক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মের উপরেই জোর দিয়েছেন ভারত অধিনায়ক। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালেই ছিটকে যেতে হয়েছে দলকে। সামনের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে নামার আগে ভারত অধিনায়ক কোহালি পরিষ্কার করে দিচ্ছেন, তাঁদের লক্ষ্যই এখন আর একটা বড় পরীক্ষার আগে দলকে নতুন ভাবে তৈরি করা। যেখানে সুযোগ দেওয়া হবে নতুন প্রজন্মকে।
ফ্লরিডায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নামার আগে কোহালি বলেছেন, ‘‘সামনের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। আবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপও শুরু হচ্ছে। আমরা আবার দলটাকে নতুন করে তৈরি করার চেষ্টা করছি। সব সময় যে আপনার ইচ্ছেমতো সব ঘটবে, এমন তো নয়। তাই আবার নতুন করে ভাবতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে, দলকে তৈরি করতে হবে যাতে আরও একটা বিশ্বখেতাবের জন্য ঝাঁপানো যায়।’’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকেই বেশ কয়েক জন নতুন মুখকে দেখে নিতে পারবে ভারত। যেমন দলে আছেন রাহুল চাহার, দীপক চাহার, নবদীপ সাইনি, শ্রেয়স আইয়ার, ওয়াশিংটন সুন্দররা। যদিও প্রথম ম্যাচে বাইরেই থেকেছেন চহার ভাইয়েরা।
কোহালি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শুধু ঋষভ পন্থই নন, অনেক তরুণ ক্রিকেটারের সামনেই সুযোগ থাকবে নিজেকে প্রমাণ করার। ‘‘দল হিসেবে আমাদের কিছু প্রয়োজনীয়তা আছে। সেটা মাথায় রেখে আমরা এগোবো। তরুণদের সামনে অনেক সুযোগ থাকবে। ওদের এগিয়ে এসে নিজের জায়গা পাকা করতে হবে। এ বারে আমাদের দলে দু’জন ফিনিশার নেই। এম এস এবং হার্দিক পাণ্ড্য। দলে যারা আছে, তারা এ বার সুযোগ পেয়েছে নিজেদের ক্ষমতা দেখানোর,’’ বলেছেন ভারত অধিনায়ক।
আসন্ন কয়েকটি সিরিজ যে তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য বড় মঞ্চ হতে চলেছে, তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন কোহালি। পাশাপাশি ভারত অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘যারা তিন ধরনের ক্রিকেটেই মানিয়ে নিতে পারে, তাদের আমি খুব পছন্দ করি। কিন্তু এমন অনেক ক্রিকেটার আছে, যারা বিশেষ একটা ব্যাপারে দক্ষ। তখন তারা ওই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠে। সে ক্ষেত্রে তখন আমাদের দেখতে হয়, দলের কী প্রয়োজন।’’
এই তরুণ প্রতিভাদের মধ্যে অন্যতম ঋষভ। ধোনির উত্তরসূরি হিসেবে ঋষভকেই যে তিন ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে প্রথম পছন্দ হিসেবে বিচার করা হচ্ছে, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান এম এস কে প্রসাদ। ফলে চলতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর দিল্লির উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার প্রথম বড় মঞ্চ হতে চলেছে। কোহালির কথায়, ‘‘এটা ঋষভের কাছে দারুণ বড় সুযোগ। এ বার আন্তর্জাতিক মঞ্চে ওকে নিজের দক্ষতা তুলে ধরতে হবে।’’
সেখানেই না থেমে কোহালি আরও বলেছেন, ‘‘ওর ক্ষমতা সম্পর্কে আমরা প্রত্যেকেই ওয়াকিবহাল। এবং ভারতীয় দলের ধারাবাহিক পারফর্মার হিসেবে ওকে দেখতে চাই।’’ বিরাটের বিশ্লেষণ, ‘‘ধোনির দীর্ঘ অভিজ্ঞতা দলের পক্ষে বরাবরই খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। কিন্তু তা মাথায় রেখেই বলছি, যে সমস্ত নতুন ক্রিকেটারেরা খেলার সুযোগ পেয়েছে, তাদের কাছে এটা বিরাট বড় সুযোগ নিজেদের প্রমাণ করার। আমার বিশ্বাস, ওরাও সে ভাবেই বিষয়টাকে দেখছে।’’
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নিউজ়িল্যান্ডের কাছে হারের পরে শনিবারই ফের নতুন অভিযান শুরু হল ভারতীয় দলের। কিন্তু কোহালি মেনে নিয়েছেন, বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার তিক্ত স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেননি। তিনি বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল থেকে বিদায়ের পরে প্রথম কয়েকটি দিন ছিল অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। প্রত্যেক দিন ঘুম থেকে ওঠার পরে মন ভারী হয়ে থাকত। কিন্তু এই ব্যর্থতাও জীবনের অঙ্গ। আমরা সকলেই পেশাদার। ফলে এগিয়ে যেতেই হবে। এটা সমস্ত দলের ক্ষেত্রেই সমান ভাবে প্রযোজ্য।’’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তাঁর দল যে ইতিবাচক ক্রিকেট খেলবে, তা শুনিয়ে দিয়েছেন ভারত অধিনায়ক। তিনি বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপের পরে আবার মাঠে নেমে সকলেই খুব চনমনে ছিল। দল হিসেবে এই ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে নতুন লড়াইয়ের জন্য তৈরি হওয়াই সেরা উপায় নিজেদেরকে আবার সেরা ছন্দে ফিরিয়ে আনার। যত দ্রুত সম্ভব, আমাদের আবার পুরনো অভ্যাসে ফিরে যেতে হবে।’’
ফ্লরিডায় দু’টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হচ্ছে এ বার। কোহালি মনে করেন, আমেরিকাতে আরও বেশি মাত্রায় ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি, এখানকার মানুষকে ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার প্রয়োজন রয়েছে। এখানে যত বেশি ম্যাচ হবে, তাতে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তাই বাড়বে। মানুষও ক্রিকেট নিয়ে বেশি আলোচনা করবেন।’’ কোহালি আরও যোগ করেন, ‘‘ক্রিকেট দেখতে মাঠে ১৫-২০ হাজার মানুষ আসছেন। এই সংখ্যাটা আমাদের কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আশা করি, ভবিষ্যতে আমেরিকার স্থানীয় মানুষজনও ক্রিকেটের টানে মাঠে আসবেন। সামগ্রিক ভাবে ক্রিকেট সম্পর্কে এখানকার মানুষের মধ্যে উৎসাহ তৈরি করা দরকার।’’
বরং ভারত অধিনায়ক মনে করেন, আমেরিকার মতো দেশে টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটের ক্রিকেট অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমেরিকার মানুষ যে সংস্কৃতির সঙ্গে অভ্যস্ত, তাতে এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেট তাঁদের কাছে অনেক বেশি আকর্ষণীয় এবং চিত্তাকর্ষক হয়ে উঠবে। ক্রিকেটের স্বার্থে আমাদেরও এই দায়িত্ব নিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy