নোভাক জোকোভিচ। ছবি: রয়টার্স।
দানিল মেদভেদেভ বলেছিলেন যে, নোভাক জোকোভিচ প্রতি ম্যাচে আগের থেকে উন্নতি করেন। তাই ২০২১ সালে ইউএস ওপেনের ফাইনালে তাঁকে হারালেও, এ বার আরও কঠিন লড়াই লড়তে হবে। রুশ টেনিস তারকার কথাই সত্যি হল। জোকার জিতলেন। হাসতে হাসতে জিতলেন। বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে জোকোভিচ জিতলেন ৬-৩, ৭-৬ (৭-৫), ৬-৩ গেমে। ২৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেন তিনি। ছুঁলেন মার্গারেট কোর্টকে।
দু’বছর আগে আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে মেদভেদেভের কাছেই হারতে হয়েছিল জোকোভিচকে। সেই ম্যাচের বদলা নেওয়া বাকি ছিল ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিকের। ২৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের লড়াইয়ে নেমে প্রথম সেটের শুরুতেই মেদভেদেভের সার্ভিস ব্রেক করে দেন জোকোভিচ। সেই সেট তিনি জিতে নেন ৬-৩ ব্যবধানে। মেদভেদেভকে প্রথম সেটে দাঁড়াতেই দিলেন না ৩৬ বছরের জোকোভিচ।
দ্বিতীয় সেট গড়াল টাইব্রেকারে। এক ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ধরে ওই সেটে লড়লেন জোকোভিচ এবং মেদভেদেভ। একে অপরের সার্ভিস ভাঙতে পারছিলেন না। লম্বা র্যালি খেললেন। জোকোভিচ এগিয়ে গেলেন নেটের কাছে। বিপদে পড়ছিলেন মেদভেদেভ। কিন্তু কখনও বেসলাইন ছেড়ে এগোলেন না। জোকোভিচ এবং মেদভেদেভ বেসলাইন থেকে খেলতে ভালবাসেন। কিন্তু ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী জানেন কখন এগোতে হবে। জেতার জন্য সব কিছু করতে তৈরি থাকেন তিনি। করলেনও। সুযোগ পেলেই নেটের কাছে এগিয়ে গেলেন, ড্রপ শট খেললেন। ভুলও করলেন। দ্বিতীয় সেটে দু’বার ডবল ফল্টও করলেন জোকোভিচ। পায়ে টান লাগছিল। কিন্তু তাতে হাল ছাড়েননি।
ফাইনালের মঞ্চে লড়াইয়ের মাঝে কোর্টে পড়ে গিয়েছিলেন মেদভেদেভ। নেট টপকে এসে তাঁর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন জোকোভিচ। কিন্তু মাটিতে শুয়ে থাকা মেদভেদেভে হাত ধরলেন না। লড়াই শেষের আগে প্রতিপক্ষের সঙ্গে হাত মেলাতে রাজি নন রুশ টেনিস তারকা। ২৫ বছরের তরুণ গোটা ম্যাচে বেসলাইন ধরে দৌড়ে গেলেন। একই রকমের টেনিস খেলে গেলেন। যে খেলার ধরন বুঝতে একটুও অসুবিধে হয়নি জোকোভিচের। এক সময় এক সঙ্গে অনুশীলন করতেন তাঁরা। মেদভেদেভকে নিজের বন্ধু মনে করেন জোকোভিচ। সেই বন্ধুকে হাত বাড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মেদভেদেভ নিজের লড়াই একাই লড়তে চান। তিনি অন্য কারও হাত ধরবেন না। লড়লেন কিন্তু জিততে পারলেন না।
উল্টো দিকে থাকা জোকোভিচ জেতার জন্য সব কিছু করতে পারেন। দ্বিতীয় সেটের পর বিরতি নিয়েছিলেন তিনি। ফিরে এলেন দ্রুত ম্যাচ শেষ করার মানসিকতা নিয়ে। গ্র্যান্ড স্ল্যামে জোকোভিচ প্রথম দু’টি সেটে জিতে গেলে তাঁকে হারানো অসম্ভব। এত বছরের কেরিয়ারে প্রথম সেট জেতার পর মাত্র এক বার হেরেছেন জোকোভিচ। এ দিনও তাঁর জয় নিশ্চিত ছিল। সেমিফাইনালে কার্লোস আলকারাজ়কে হারালেও জোকোভিচের বিরুদ্ধে এক প্রকার উড়ে গেলেন মেদভেদেভ।
দু’মাস আগে উইম্বলডনের ফাইনালে আলকারাজ়ের বিরুদ্ধে হেরে গিয়েছিলেন জোকোভিচ। সেই ম্যাচে হারের পর থেকে টানা ১২টি ম্যাচ জিতলেন তিনি। এই বছর তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেন তিনি। গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের তালিকায় রাফায়েল নাদাল (২২) এবং রজার ফেডেরারকে (২০) আগেই পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন জোকোভিচ। এ দিন ছুঁয়ে ফেললেন পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে সব থেকে বেশি সিঙ্গলসে গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালকিন মার্গারেটকে। পরের মরসুমে তাঁকেও টপকে জেতে পারেন জোকোভিচ। তাঁর বয়স যে কমছে। সময়ের সঙ্গে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন তিনি। মেদভেদেভরা ফাইনালে উঠছেন শুধু জোকোভিচের বিরুদ্ধে খেলার জন্য। মাঝে একটি, দু’টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম হয়তো অন্যরা জিতছেন, কিন্তু জোকোভিচ এখনও বাকিদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy