ঐক্যবদ্ধ: হাঁটু মুড়ে বসে বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জেসন হোল্ডার-সহ ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের। শুক্রবার তৃতীয় টেস্ট শুরু হওয়ার আগে এমনই দৃশ্য দেখা গেল ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে। ছবি: এপি
অ্যান্ড্রু স্ট্রসের প্রয়াত স্ত্রী রাথ স্ট্রসের স্মরণে লাল টুপি পরেই নেমেছিল ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটারদের জার্সির পিছনে নাম লেখাও ছিল লাল রঙে। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে স্ট্রসের স্ত্রীর মৃত্যু হয়। তাঁর নামেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা খুলেছেন স্ট্রস। এই ম্যাচ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ দান করা হবে রাথ স্ট্রস ফাউন্ডেশনে। সেই অর্থ ব্যবহার করা হবে ক্যানসারে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য।
শুক্রবার শুরু হওয়া দ্বিতীয় টেস্টে সব চেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল, জেমস অ্যান্ডারসন ও জোফ্রা আর্চারকে দলে ফেরানো নিয়ে। দু’জনকে রেখেই দল গড়লেন জো রুট। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। দিনের শেষে চার উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের রান ২৫৮। ১২২ রানে চার উইকেট হারানোর পরে জস বাটলার ও অলি পোপের জুটি ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে জো রুটের দলকে। ১৩৬ রানের অপরাজিত জুটি গড়ে দিন শেষ করেন পোপ ও বাটলার। পোপ অপরাজিত ৯১ রানে। ৫৬ রানে ব্যাট করছেন বাটলার।
ম্যাচে সব চেয়ে বড় চমক অবশ্যই রাহকিম কর্নওয়ালের দলে ফেরা। ছয় ফুট ছয় ইঞ্চি উচ্চতা। ১৩৯ কেজি ওজন ২৬ বছর বয়সি অফস্পিনারের। অনেকেরই মনে হবে ক্রিকেটার-সুলভ চেহারা নয়। এ দিন ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে প্রমাণ করে দিলেন চেহারা দিয়ে যাচাই করা উচিত নয়। স্লিপে তাঁর দুরন্ত ক্যাচ, সবাইকে চমকে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। রস্টন চেজকে কাট করতে গিয়ে ছন্দে থাকা ইংল্যান্ড ওপেনার ররি বার্নস ধরা পড়েন স্লিপ অঞ্চলে। এক হাতে দুরন্ত ক্যাচ নিয়ে ইংল্যান্ড ওপেনারকে ফেরান কর্নওয়াল। ৫৭ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন বার্নস।
আইসিসি-র পরিবর্তিত নিয়মে তৃতীয় টেস্ট শুরু হলেও বল পালিশ করা নিয়ে তর্ক চলছেই। থুতু দিয়ে বল চকচকে রাখার প্রথায় নিষেধাজ্ঞা আসার পর থেকে সুইং সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না। বর্তমান ক্রিকেটবিশ্বে সুইংয়ের সেরা শিল্পী জেমস অ্যান্ডারসন জানিয়ে দিলেন, ঘাম দিয়ে বল পালিশ করার প্রথা নিয়ে আরও আলোচনা হওয়া উচিত। বলছিলেন, ‘‘কেন সুইং কম হচ্ছে তা নিয়ে পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয় ঘামের সাহায্যে বল পালিশ করা হলে তা সুইং করবে কি না। আমি কিন্তু বলব, এ বিষয়ে অনেক বেশি চর্চা প্রয়োজন।’’
অ্যান্ডারসন হয়তো কৃত্রিম পদার্থের ব্যবহারের ইঙ্গিত করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আপাতত ঘাম দিয়ে কাজ চলছে। সুইং করছে অল্প-বিস্তর। কিন্তু একটা বিষয়ে দেখা দরকার, ব্যাটসম্যানেরা যেন অতিরিক্ত কোনও সুবিধা না পায়। কোনও ম্যাচে সুইং না-ই করতে পারে। কিন্তু ভাল লাইন ও লেংথ সব পরিস্থিতিতেই কার্যকরী।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘শেষ টেস্ট ম্যাচে আমাদের পেসাররা কেউ এক্সপ্রেস গতিতে বল করেনি। ভাল জায়গায় বল রেখেছিল। সুইং কম করলে, সঠিক লাইন ও লেংথই পেসারদের অস্ত্র।’’
স্কোরকার্ড
ইংল্যান্ড ২৫৮-৪
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ইংল্যান্ড (প্রথম ইনিংস)
ররি বার্নস ক কর্নওয়াল বো চেজ ৫৭•১৪৭
ডম সিবলি এলবিডব্লু রোচ ০•৫
জো রুট রান আউট চেজ ১৭•৫৯
বেন স্টোকস বো রোচ ২০•৪৩
অলি পোপ ব্যাটিং ৯১•১৪২
বাটলার ব্যাটিং ৫৬•১২০
অতিরিক্ত ১৭
মোট ২৫৮-৪ (৮৫.৪)
পতন: ১-১ (সিবলি, ০.৬), ২-৪৭ (রুট, ২১.৩), ৩-৯২ (স্টোকস, ৩৪.৬), ৪-১২২ (বার্নস, ৪৭.৪)।
বোলিং: কেমার রোচ ১৮.৪-২-৫৬-২, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ১৮-৪-৪৭-০, জেসন হোল্ডার ২০-৫-৪৫-০, রাখিম কর্নওয়াল২১-৪-৭১-০, রস্টন চেজ ৮-২-২৪-১।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy