Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Atharva Ankolekar

বাসে কন্ডাক্টরি করে বড় করেছেন মা, সেই ছেলে এশিয়াসেরা করলেন ভারতকে

আর্থিক অবস্থা ভাল নয় অথর্বদের। তাঁর ভাইও ক্রিকেট খেলে। মুম্বইয়ের অনূর্ধ্ব ১৪ দলের সদস্য সে। ক্রিকেটার হওয়ার জন্য দাদা অথর্বকে কঠিন লড়াই করতে হয়েছে।

উইকেট নেওয়ার পরে আনকোলেকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সতীর্থরা। ছবি: ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিমের ফেসবুক পেজ থেকে।

উইকেট নেওয়ার পরে আনকোলেকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সতীর্থরা। ছবি: ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিমের ফেসবুক পেজ থেকে।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:৫৮
Share: Save:

কলম্বোর প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে অথর্ব আনকোলেকরের হাতে ম্যাচ সেরার ট্রফিটা দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারেননি মা বৈদেহী। ছেলের এমন সাফল্যের দিনে তাঁর মনে পড়ে যাচ্ছিল অথর্বের বাবার কথা। ন’বছর আগে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান বিনোদ আনকোলেকর। অথর্বের তখন মাত্র ১০ বছর বয়স। তাঁর ভাই আরও ছোট। সংসার চালানোর জন্য বাস কন্ডাক্টরের কাজ নেন বৈদেহী। দ্বীপরাষ্ট্রের মাটিতে বাংলাদেশকে হারানোর পরে অর্থবের গর্বিত মা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আজ ওর বাবা যদি থাকতেন, তা হলে খুব খুশি হতেন। অথর্বের জন্য আজ আমরা সবাই গর্বিত।’’

ছেলের খেলা দেখার জন্য শনিবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেছিলেন বৈদেহী। ছুটি মঞ্জুরও হয়। বাড়িতে ফিরে আর এক বিড়ম্বনায় পড়েন তিনি। যে চ্যানেলে এশিয়া কাপ ফাইনাল ম্যাচের সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছিল, সেই চ্যানেলটাই যে দেখা যায় না বৈদেহীর টিভি সেটে। বাধ্য হয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বসে ছেলের এশিয়া জয় দেখেন বৈদেহী। শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনার মধ্যে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। কলম্বোর প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে মাত্র পাঁচ রানে বাংলাদেশকে হারায় ভারত। পাঁচ উইকেট নিয়ে নায়ক বাঁ-হাতি স্পিনার আনকোলেকর।

ফাইনালের বল গড়ানোর আগে থেকেই উত্তেজনায় ফুটছিলেন বৈদেহী। তিনি বলছিলেন, ‘‘আমি গণপতি বাপ্পার কাছে প্রার্থনা করছিলাম, আজকের দিনটা যেন ওর হয়।’’ মায়ের প্রার্থনা রেখেছেন সিদ্ধাদাতা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ভারত। জেতার জন্য বাংলাদেশের যখন ১২ রান দরকার, তখন মা চাইছিলেন ছেলের হাতেই যেন বল তুলে দেওয়া হয়। বৈদেহী বলছিলেন, ‘‘বাংলাদেশের হাতে আর দুটো উইকেট। আমি মনে প্রাণে চাইছিলাম, অথর্বকেই যেন বল করতে ডাকা হয়। এই মুহূর্তটার জন্যই তো অপেক্ষায় ছিল অথর্ব।’’

আরও পড়ুন: নায়িকা? মডেল? না, এই সুন্দরীর আসল পরিচয় জানলে চমকে যাবেন

আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে সুযোগ তরুণদের? দেখে নিন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের সম্ভাব্য একাদশ

আর্থিক অবস্থা ভাল নয় অথর্বদের। তাঁর ভাইও ক্রিকেট খেলে। মুম্বইয়ের অনূর্ধ্ব ১৪ দলের সদস্য সে। ক্রিকেটার হওয়ার জন্য দাদা অথর্বকে কঠিন লড়াই করতে হয়েছে। ক্রিকেট কিট কেনার মতো অবস্থা ছিল না। জুতো কেনারও ক্ষমতা ছিল না তাঁদের। বৈদেহী বলছিলেন, ‘‘ওর জুতো কেনার মতো টাকা আমাদের ছিল না। অন্যরা সাহায্য করতেন। দিন কয়েক আগে অথর্ব ফোন করে আমাকে বলল, ভাইয়ের জন্য জুতো কেনার দরকার নেই। শ্রীলঙ্কায় প্রতি দিন যে টাকা পেয়েছে, তা দিয়ে ভাইয়ের জন্য ও জুতো কিনে দেবে।’’

কঠিন ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে এশিয়াসেরা হওয়ায় দেশে খুশির আবহ। দেশকে চ্যাম্পিয়ন করলেও ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত মা। তিনি বলছিলেন, ‘‘ভাল চাকরি পেলে আমার চিন্তা কাটবে। আজকের দিনে চাকরি খুব দরকার। একটা চাকরির প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু, অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে খেলা থাকায় সেই চাকরি ফিরিয়ে দিতে হয়।’’

তবে অথর্বের পাখির চোখ এখন আর চাকরি নয়, তাঁর লক্ষ্য জাতীয় দলের জার্সি। আর তার জন্য চাই কঠোর পরিশ্রম। জীবনযুদ্ধে জয়ী তরুণের কাছে যা কঠিন নয় কোনও ভাবেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Atharva Ankolekar India Under 19 Asia Cup
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy