ত্রিফলা: গতিতেই বাজিমাত। বাংলার তিন পেসার মুকেশ (বাঁ দিকে), নীলকণ্ঠ এবং ঈশান। শনিবার। সিএবি মিডিয়া
এক সময় কোনও পরিকল্পনাই কাজ করছিল না। এক দিক থেকে নীলকণ্ঠ দাস উইকেটের সোজাসুজি বল করে রান আটকাচ্ছিলেন। অথচ দ্রুত উইকেট ফেলার কাজটি করতে পারছিলেন না। তার উপরে ওড়িশার সব চেয়ে অভিজ্ঞ জুটি তখন ক্রিজে।
মুকেশ কুমার বল শুরু করার আগে স্লিপ ছেড়ে মিড-অফে চলে যান প্রাক্তন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। হাতে বল নিয়ে কিছু একটা বলেন। উইকেট পেতে শুরু করেন মুকেশ। বঙ্গ পেসারকে কী নির্দেশ দিলেন প্রাক্তন অধিনায়ক? ম্যাচ শেষে আনন্দবাজারকে মনোজ বলেন, ‘‘মুকেশরা তরুণ। কী ভাবে এ ধরনের ম্যাচে বিপক্ষকে চাপে রাখতে হয়, তা শিখছে। এই ওড়িশা দলের বিরুদ্ধে আগে খেলেছি বলেই জানি, বিপ্লব (সামন্তরায়) ও শুভ্রাংশুর (সেনাপতি) ইনসুইং খেলতে সমস্যা হয়। তাই মুকেশকে বলি ক্রিজের গভীরতা কাজে লাগা। কখনও পপিং ক্রিজের বাইরে থেকে বল কর। কখনও আম্পায়ারের গা ঘেষে বল করে দেখ।’’ যোগ করেন, ‘‘মুকেশের বড় গুণ, ও কথা শোনে। নির্দেশ মেনে বল করার ফলই পেয়েছে ও।’’ মুকেশের ইনসুইং বুঝতে না পেরে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান বিপ্লব ও উইকেটকিপার রাজেশ ধুপের।
মনোজের নির্দেশ মেনে মুকেশও খুশি। বলছিলেন, ‘‘উইকেট থেকে কোনও সাহায্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু মনোজদা আমার সাহস ফেরায়। নীলুদাও (নীলকণ্ঠ দাস) বলের দু’দিক পালিশ করে ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও করে।’’
নীলকণ্ঠকে প্রশ্ন করা হয়, কেন তিনি বলের দু’দিক পালিশ করলেন, যেখানে রিভার্স সুইং পাওয়ার জন্য এক দিক পালিশ করাই যথেষ্ট? অভিজ্ঞ পেসারের উত্তর, ‘‘অনেক ব্যাটসম্যান বলের পালিশ দেখে বোঝার চেষ্টা করে কোন দিকে সুইং করবে। সেটা আটকানোর জন্যই এই পরিকল্পনা। প্রথম ডিভিশনে বেশ কয়েক বার এটা করে সফল হয়েছি। রঞ্জিতেও তা করতে পেরে খুশি।’’
তিন পেসারের মধ্যে সব চেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন ঈশান পোড়েল। শত চেষ্টা করেও বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের পরাস্ত করতে পারছিলেন না। যখন উইকেট খরা চলছিল। জুটি বেঁধে বল করার পরিকল্পনা নেয় পেসাররা। নীলকণ্ঠের দায়িত্ব ছিল রান আটকানোর। আক্রমণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মুকেশকে। ঈশান বিপক্ষকে ভয় পাওয়ানোর দায়িত্ব নেন বাউন্সারের সাহায্যে। ঈশান বলছিলেন, ‘‘ভারতীয় দলও এ ভাবেই পরিকল্পনা সাজায়। কেউ আক্রমণ করে, কেউ রান আটকানোর কাজ করে।’’ যোগ করেন, ‘‘সব চেয়ে ভাল বিষয়, আমাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। মুকেশ উইকেট পাচ্ছে, আমি কেন পাচ্ছি না, এ ধরনের চিন্তা মাথায় আসে না। বরং মুকেশ পরপর দু’টি উইকেট পাওয়ার পরে স্বস্তি পেয়েছি। আমার সতীর্থই যদি দলের কাজ সহজ করে দেয়, তা হলে আমরাই তো লাভবান হব।’’
আগে অশোক ডিন্ডার সঙ্গে জুটি গড়ে বল করতেন ঈশান। ডিন্ডাই ছিলেন তরুণ পেসারদের শিক্ষক। তাঁর অভাবে মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে না? ঈশানের উত্তর, ‘‘কখনও একজনের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। এই পর্যায়ে খেলতে হলে প্রত্যাশার চাপ থাকবে। সেটা নিয়েই চলতে হবে। এই পর্যায়ে প্রত্যাশার চাপ নিতে না পারলে আমার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy