নজরে: মোহনবাগান কোচের সেরা অস্ত্র বেইতিয়া। —ফাইল চিত্র।
স্প্যানিশ আর্মাডা বনাম পাহাড়ের টাট্টু ঘোড়া!
সমতল বনাম পাহাড়।
বর্তমান বনাম প্রাক্তন মোহনবাগান কোচের একে অন্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার তীব্র বাসনা।
মোহনবাগান বনাম আইজল এফসি-র আই লিগের উদ্বোধনী ম্যাচের নির্যাস যেন লুকিয়ে ঘুরছে এই তিন আর্বতেই।
কিবু ভিকুনার দলের স্ট্রাইকার থেকে রক্ষণ—সব জায়গাতেই স্পেনীয় ফুটবলারের উপরে নির্ভরশীল সবুজ-মেরুন। সালভা চামারো, জোসেবা বেইতিয়া, জুলেন কলিনাস, ফ্রান মোরান্তের পালতোলা নৌকার সওয়ারি হয়েছেন এ বার।
আর শনিবারের প্রতিপক্ষ স্ট্যানলি রোজারিওর দলের ১১ জনের ন’জনই পাহাড়ি ছেলে। যাঁদের দৌড় আর অফুরন্ত প্রাণশক্তি হার মানাতে পারে যে কোনও দলকে। গতবারই পাহাড়ি টাট্টু ঘোড়াদের দৌরাত্ম্যে সমস্যায় পড়েছিল মোহনবাগান। পাহাড়ে গিয়ে জিতলেও কলকাতায় ড্র করেছিলেন শিল্টন পালরা।
সবুজ-মেরুনে কাদের উপরে নজর
• গত বছর আই লিগে: পঞ্চম।
• চলতি বছরে: ডুরান্ড কাপ ও কলকাতা লিগে রানার্স, বাংলাদেশে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে বিদায় সেমিফাইনাল থেকে।
• কোচ: অতীতে স্পেনের ওসাসুনার যুব দল ও পোলান্ডের ক্লাবে প্রশিক্ষকের দায়িত্বে থাকা কিবু ভিকুনা।
• প্রধান অস্ত্র: স্পেনের রিয়াল সোসিদাদ ‘বি’ দলে খেলে আসা জোসেবা বেইতিয়া। ঠিকানা লেখা পাস বাড়ানোর সঙ্গে নিখুঁত ফ্রি-কিক অস্ত্র এই ফুটবলারের।
• চমক: শেখ সাহিল। বঙ্গসন্তান এই রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার তাঁর কভারিং, ট্যাকলের জন্য নজর কেড়েছেন কলকাতা লিগে।
• শেষ বার আই লিগ জয়: ২০১৪-১৫ মরসুমে।
শক্তির বিচারে খাতায় কলমে এগিয়ে মোহনবাগান। তবুও চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে কিবুর। স্পেনীয় কোচ গত পাঁচ মাস দলকে কোচিং করিয়ে সাফল্য দিতে পারেননি। কলকাতা লিগ, ডুরান্ড কাপ এবং বাংলাদেশের শেখ কামাল কাপে ব্যর্থ হয়েছেন বেইতিয়ারা। আই লিগ তাঁর কাছে অগ্নিপরীক্ষা। প্রথম ম্যাচ জিততে মরিয়া তিনি। শুক্রবার কিবুর মুখ থেকে বেরিয়েছে, ‘‘মোহনবাগান যেখানে খেলে সেখানে চ্যাম্পিয়ন হতে চায়। আমরা কুড়িটা ম্যাচ খেলেছি এ পর্যন্ত। এখানে আসার আগে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। দলের খেলায় আমি সন্তুষ্ট। তা সত্ত্বেও এই ম্যাচ কঠিন।’’ কেন এমন বলছেন পোলান্ডে দীর্ঘদিন কোচিং করিয়ে আসা কোচ? উত্তরটা দিয়েছেন কলকাতার দুই প্রধান ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানে কোচিং করিয়ে যাওয়া কোচ স্ট্যানলি। আইজল কোচ বলেছেন, ‘‘মোহনবাগান শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। ছয় জন বিদেশি। আমাদের দু’জন। তা সত্ত্বেও অন্য জায়গায় সুবিধা পাব। কারণ মাঠ আমাদের। মোহনবাগান শুনেছি একদিনও কৃত্রিম মাঠে অনুশীলন করেনি। তা ছাড়া স্টেডিয়াম ভর্তি থাকবে আমাদের সমর্থকে।’’
আরও পড়ুন: ব্যকরণ না জানলে বিপদে লুকিয়ে গোলাপি বলে
আইজলের হৃদপিন্ড দলের অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসা অনূর্ধ্ব ২০ বছর বয়সী এক ঝাঁক তরুণ ফুটবলার। ডেভিড, আইজ্যাক, লালরেমসাংগা, রোচাজেলা, লালনুনফেলা, আয়ূশ দেব ছেত্রীরা ইতিমধ্যেই তাঁদের শক্তি দেখিয়েছেন মিজোরাম লিগে। পাহাড়ের সব চেয়ে কঠিন ও আকর্ষণীয় লিগে তারা শীর্ষে।
মোহনবাগানের প্রধান শক্তি বেইতিয়ার সেট পিস দক্ষতা। জুলেন কলিনাস, সালভা চামোরোদের গোলের সামনে ক্ষিপ্রতা। ব্রিটো পিএম বা লালরাম চুলোভার উইং দিয়ে আক্রমণ। উল্টোদিকে আইজলের শক্তি তরুণ ফুটবলারদের অফুরন্ত দম। প্রতিপক্ষকে নব্বই মিনিট এক ইঞ্চি জমি না ছাড়ার অদম্য ইচ্ছাশক্তি।
এ দিন দুপুরে মূল স্টেডিয়ামে অনুশীলন করিয়ে রাতে ফুটবলারদের আইজলের খেলার ভিডিয়ো দেখান কিবু। বারবার বলেছেন ‘‘ওদের কিছুতেই দৌড়তে দেওয়া যাবে না।’’ ফোন করে জানা গেল, উইং এবং ডাউন দ্য মিডল দিয়ে পাহাড়ি ছেলেদের দৌড় আটকানোর ভাবনা নিয়ে রণনীতি তৈরি করছেন কিবু। পাশাপাশি মাঠ নিয়েও চিন্তিত তিনি। বলেওছেন, ‘‘আমরা কৃত্রিম ঘাসে একটা ম্যাচও খেলিনি। সেটা বড় সমস্যা। ফুটবলারদের পেশিতে টান ধরতে পারে। এই মাঠে খেলা কঠিন।’’
আলফ্রেড জারিয়ান আর রিচার্ড কিসাগ্গা—এই দুই বিদেশি রয়েছেন আইজলে। বাকি ফুটবলারদের অধিকাংশ গত বছর দলে ছিলেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দলকে উদ্বুদ্ধ করতে চাইছেন স্ট্যানলি। বলেছেন, ‘‘শুধু ফুটবলারদের কাছে নয়, আমার কাছেও চ্যালেঞ্জ। দেখাতে হবে শক্তিশালী দল সামনে পড়লেও তরুণরা তাদের হারাতে পারে।’’
শনিবার আই লিগে
আইজল এফসি: মোহনবাগান (ডি স্পোর্টসে সম্প্রচার দুপুর ২.০০)
গোকুলম: নেরোকা (কালিকট ৭.০০)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy