ফুরফুরে: ডুরান্ড ফাইনালের আগে হাসিখুশি মোহনবাগানের ফুটবলারেরা। বৃহস্পতিবার যুবভারতী সংলগ্ন হোটেলের সুইমিংপুলে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
একজন চাইছেন খেতাব জেতার পর যুবভারতীতেই ক্যারিবিয়ান ক্যালিপসোর তালে নেচে উৎসব পালন করতে। অন্যজন অবশ্য ট্রফি জেতার পর নাচতে চান হোটেলে গিয়ে। মাঠের নাচ তাঁর একেবারেই পছন্দ নয়। শনিবার ডুরান্ড কাপ ফাইনালের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে গোকুলমের দশ নম্বর জার্সির মালিক মার্কাস জোসেফ বনাম মোহনবাগানের দশ নম্বর জোসেবা বেইতিয়া খেতাব জেতার পর কী ভাবে তা সেলিব্রেট করবেন তা জানিয়ে দিলেন পাশাপাশি মাঠে দাঁড়িয়েই।
প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতা ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর স্ট্রাইকার মার্কাস বলে দিলেন, ‘‘ট্রফি জিতে ডোয়েন ব্র্যাভোর সেই ‘চ্যাম্পিয়ন ডান্স’ নাচতে চাই এবং সেটা মাঠেই নাচব ঠিক করে রেখেছি। মোহনবাগান রক্ষণকে চ্যালেঞ্জ জানাতে আমরা তৈরি।’’ এর কিছুক্ষণ পরেই স্প্যানিশ বেইতিয়া হাসতে হাসতে বলে দিলেন, ‘‘আমি মাঠে নাচা পছন্দ করি না। হোটেলে নাচতেই আমি বেশি ভাল লাগে। খেতাব জিতে সেটাই করব। যে কোনও নাচই আমার পছন্দ।’’
বুধবারের ১২০ মিনিটের দুটি সেমিফাইনাল দেখার পরে অনেকেই মনে করছেন মোহনবাগান বনাম গোকুলমের মধ্যে ফাইনালের লড়াইয়ের দুই প্রধান মুখ বেইতিয়া এবং মার্কাস। বাইশ জন খেললেও দু’দলের দুই স্প্যানিশ কোচই নির্ভর করছেন তাঁদের দলের ‘পিভট’ ওই দুই ফুটবলারের উপর। এবং কী আশ্চর্য বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই খেলোয়াড় একে অন্যকে সেরা বলছেন। ডুরান্ডের চার ম্যাচে নয় গোল করা ব্রায়ান লারার দেশের মার্কাস যেমন বলে দিলেন, ‘‘মোহনবাগানের বেইতিয়া হল ব্যান্ডমাস্টার। ওই পুরো দলটাকে মাঝমাঠ থেকে খেলায়। ওর উপর বিশেষ নজর রাখবে আমাদের ডিফেন্ডাররা।’’ তেমনই স্টেডিয়াম সংলগ্ন হোটেলে সাঁতার কেটে এসে বেইতিয়ার মন্তব্য, ‘‘বুধবার রাতে আমাদেরও খেলা ছিল। তাই মিনিট পনেরো মাত্র গোকুলমকে দেখেছি। ওদের দলের সেরা ফুটবলার মার্কোস। গোলের সামনে ভয়ঙ্কর। ’’
সেমিফাইনালে রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে মোহনবাগানের মসৃণ ও পাসিং ফুটবলের পিছনে প্রধান অবদান ছিল বেইতিয়ার। পেন্ডুলামের মতো দুলে নিখুঁত পাস বাড়িয়ে ম্যাচের লাগাম ধরে রেখেছিলেন তিনিই। সালভা চামোরোর সঙ্গে বেইতিয়ার কম্বিনেশন নতুন মাত্রা দিচ্ছে কিবু ভিকুনার দলকে। লিয়োনেল মেসির ভক্ত বলেই মিডিয়ো হয়েও বেছে নিয়েছেন দশ নম্বর জার্সি। সাধারণত বিভিন্ন ক্লাবে যে নম্বরটি পরেন স্ট্রাইকাররা। কানে কালো দুল পরে থাকা সবুজ-মেরুনের নতুন তারকা অবশ্য অকপটেই জানিয়ে দিলেন, ‘‘দশ নম্বর জার্সি আমি স্পেনের ক্লাবেও পরেছি। কিন্তু মেসির জার্সি পরলেও গোল করা আমার কাজ নয়। সেটা ভেবে খেলিও না। গোল করার জন্য তো চামোরো আর সুহেররা আছে। আমার কাজ বল ধরে গোলের জন্য ওদের সাহায্য করা। সেটা করতে পারলেই আমি খুশি হব,’’ স্বীকার করে নিলেন, বহু দিন ট্রফি জয়ের স্বাদ পাননি বলে ফাইনালের আগে উত্তেজনা অনুভব করছেন। ‘‘কবে শেষ ট্রফি জিতেছি মনে করতে পারছি না। এটিকেতে খেলে যাওয়া বন্ধু তিরির কথা শুনেই ভারতে খেলতে এসেছি। প্রথম ট্রফি জেতার জন্য আর একটা ম্যাচ জিততে হবে। দারুণ উত্তেজনা অনুভব করছি ভিতরে ভিতরে।’’ বেইতিয়া বলছিলেন ড্রেসিংরুমের দরজায় হেলান দিয়ে। আর বটগাছের ঝুরির মতো চুল নিয়ে মার্কাসের মন্তব্য, ‘‘এটা গোকুলমে আমার দ্বিতীয় বছর। এ দেশে খেলতে এসে কোনও ট্রফি পাইনি। এই ট্রফিটা চাই। সেরা গোলদাতার ট্রফিটা নিশ্চিত করে ফেলেছি। এ বার আর একটা ট্রফি জিততে হবে। তার পরে হবে নাচ।’’ বলতে বলতে কোচ ফার্নান্দো ভালেরার পাশে গিয়ে দাঁড়ান মার্কাস। দু’জনের মুখেই তখন চওড়া হাসি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy