Advertisement
E-Paper

দাদার ধমকেই জেতার খিদে তৈরি হয়, বললেন কাইফ

৩২৬ রান তাড়া করতে গিয়ে ১৪৬ রানে পাঁচ উইকেট হারায় ভারত।

জয়োল্লাস: হাতের মুঠোয় ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি। মাঠের মধ্যেই কাইফকে জড়িয়ে ধরলেন সৌরভ। সঙ্গে সতীর্থরা। ফাইল চিত্র

জয়োল্লাস: হাতের মুঠোয় ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি। মাঠের মধ্যেই কাইফকে জড়িয়ে ধরলেন সৌরভ। সঙ্গে সতীর্থরা। ফাইল চিত্র

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০৬:২১
Share
Save

উপমহাদেশের বাইরে ট্রফি জিতে ফেরার অনুভূতি কী রকম হতে পারে, তা ভুলেই গিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। ২০০২ ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জিতে সেই অনুভূতি ফিরিয়ে আনেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। লর্ডসে ইংল্যান্ডকে দুই উইকেটে হারিয়ে অধিনায়ক সৌরভের সেই উৎসব ক্রিকেটভক্তদের মনে গেঁথে গিয়েছে। সে ম্যাচেই ভারতীয় ক্রিকেটে উত্থান হয় দুই নতুন তারার। যুবরাজ সিংহ ও মহম্মদ কাইফ।

৩২৬ রান তাড়া করতে গিয়ে ১৪৬ রানে পাঁচ উইকেট হারায় ভারত। সৌরভ নিজে শুরুতে ৪৩ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেললেও ব্যর্থ হন সচিন তেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড়েরা। ট্রফি জেতানোর দায়িত্ব এসে পড়ে দুই তরুণ ব্যাটসম্যানের কাঁধে। ১৮ বছর আগে এই ১৩ জুলাইয়ে যদি তাঁরা হাল ছেড়ে দিতেন, তা হলে এই দিনটা কেউ মনে রাখত না। কিন্তু কাইফ ও যুবরাজের ১২১ রানের জুটি ভারতীয় ড্রেসিংরুমে জয়ের বিশ্বাস ফেরায়। ৬৩ বলে ৬৯ রান করে ফিরে যান যুবরাজ। ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে ট্রফি নিশ্চিত করেন কাইফ।

কী রকম ছিল সে দিনের অনুভূতি? জয়ের পরে কখন থামে উৎসব? যুবরাজের সঙ্গে জুটি গড়ার সময় দু’জনের মধ্যে কী কথা হয়? আনন্দবাজারকে ফোনে বিস্তারিত জানালেন কাইফ। তিনি বলেন, ‘‘ফাইনালে আমরা প্রচুর রান দিয়ে ফেলি। সে সময় ৩২৬ রান তাড়া করার কথা কেউ ভাবত না। বিরতিতে ড্রেসিংরুমে ফেরার পরে প্রত্যেককে ডাকে দাদা। আমাদের ধমকও দেয়, প্রশ্ন করে কেন এ রকম বোলিং হল।’’ কাইফ যোগ করেন, ‘‘একই সঙ্গে বলে, ‘ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। উইকেট ভাল। এখান থেকে অবশ্যই জেতা যায়। চেষ্টা করব প্রথম ১৫ ওভারের মধ্যে বিনা উইকেটে ৮০ রান তোলার। নতুন বলের বিরুদ্ধে উইকেট ছুড়ে না দিলেই কাজ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।’ ওপেন করতে নেমে ৬০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে দাদাই কিন্তু জয়ের ভিত তৈরি করেছিল।’’

সচিন, দ্রাবিড় দ্রুত ফিরে যাওয়ার পরে যুবরাজের সঙ্গে ম্যাচ জেতানোর দায়িত্ব নিতে হয় তাঁকে। কী কথা হয়েছিল দু’জনের মধ্যে? কাইফ বলে দিলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে অদ্ভুত জেদ কাজ করেছিল। যুবিকে বলেছিলাম, এই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। আমরা ছোট শহরের ছেলে, নিজেদের প্রমাণ করতে গেলে বড় কিছু করতে হবে। এমনিতে দাদা বরাবরই তরুণ ক্রিকেটারদের উপরে আস্থা রাখত। দাদার সেই আস্থার মর্যাদা দিতে চেয়েছিলাম শেষ ম্যাচে।’’ যোগ করেন, ‘‘কপিল পাজিকে দেখেছিলাম ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপ জিতে লর্ডসের ব্যালকনিতে কাপ তুলতে। সেই দৃশ্য ছিল প্রত্যেকের অনুপ্রেরণা। চেয়েছিলাম দাদাকেও যেন লর্ডস থেকে খালি হাতে না ফিরতে হয়।’’

আপনারা যে জিততে পারেন, তা কখন মনে হল? কাইফের উত্তর, ‘‘শেষ ওভারের দ্বিতীয় বল পর্যন্ত নিশ্চিত ছিলাম না। কারণ, জ়াহির আউট হলে ব্যাট করত নেহরাকে। আর ও কী রকম ব্যাট করত, সবাই জানে (হাসি)। তৃতীয় বলে কভারে ঠেলে দৌড়তে শুরু করে জ়াহির। আমিও কোনও দিকে তাকাইনি। যদি দেখতাম কভারে বল আটকে গিয়েছে, তা হলে হয়তো রান আউট হয়ে যেতাম।’’

ওভারথ্রোয়ে দু’টি রান নেওয়ার পরেই উৎসব শুরু হয় ভারতীয় ড্রেসিংরুমে। জামা উড়িয়ে উৎসব শুরু করেন ভারত অধিনায়ক। এমনকি মাঠে নেমে কাইফের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন সৌরভ। কাইফ বলছিলেন, ‘‘সেই মুহূর্তে মনে হয়েছিল, আমি হয়তো আর বেঁচে ফিরতে পারলাম না (হাসি)। কোমরেও বেশ চোট পেয়েছিলাম। যদিও সেই ব্যথা আনন্দের।’’

সাফল্যের রাতেই লন্ডনের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে উৎসব করেন সৌরভ, কাইফেরা। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার বলছিলেন, ‘‘টেমসের সামনে গিয়ে প্রত্যেকে ছবি তুলি। সেখানেও চিৎকার করে গান হয়। পাশে একটি পানশালায় ডিনার করি। সেখানে আমাদের অভিনন্দন জানান স্থানীয় ক্রিকেট সমর্থকেরা। হোটেলে ফিরেও সারা দিনের কোনও ক্লান্তি গায়ে লাগেনি।’’

কাইফ মনে করেন, এই সিরিজ জয়ের পর থেকেই ভারতীয় দলকে বিদেশের মাটিতেও সমীহ করতে শুরু করে বিপক্ষ। তাঁর কথায়, ‘‘ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ শুধু আমার জীবনই বদলে দেয়নি। ভারতীয় ক্রিকেটকেও নতুন দিশা দেখিয়ে গিয়েছে।’’

সোমবার ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ জয়ের ১৮তম বার্ষিকীর পূর্তিতে টুইট করে নিজেদের অনুভূতির কথা জানান যুবরাজ সিংহ, হরভজন সিংহেরা। যুবরাজ লেখেন, ‘‘তখন আমরা তরুণ। অফুরন্ত জেতার খিদে ছিল আমাদের মধ্যে। দলগত প্রয়াসে একটি দল কোথায় পৌঁছতে পারে, তা দেখিয়েছিলাম আমরা।’’ হরভজন লেখেন, ‘‘কী জয় ছিল আমাদের।’’

Mohammad Kaif Yuvraj Singh 2003 Natwest Trophy Cricket India England

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়।

  • সঙ্গে পান রোজ আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই -পেপার পড়ার সুযোগ।

  • এখন না পড়তে পারলে পরে পড়ুন, 'সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে।

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

SAVE 1%*
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।