ফাইল চিত্র।
আইপিএলের বাকি থাকা ৩১ ম্যাচ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভাগ্য নির্ধারণ করতে আজ, শনিবার মুম্বইয়ে জড়ো হচ্ছেন বোর্ডের শীর্ষ কর্তারা। অতিমারির ধাক্কায় হালফিলে বাকি সব বৈঠক জুমের মাধ্যমে সারলেও শনিবার আরব সাগরের পারে উপস্থিত থাকছেন কয়েক জন শীর্ষ কর্তা। বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যেমন শুক্রবারই উড়ে গিয়েছেন মুম্বই। এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই বৈঠক।
মোটামুটি ভাবে ধরে নেওয়া যায়, আইপিএলের বাকি থাকা অংশ এবং কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ, দু’টি প্রতিযোগিতাই হবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। ভারতের করোনা পরিস্থিতি আগামী দু’তিন মাসে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে, সেই নিশ্চয়তা কে দেবে! তা ছাড়া কোভিডের তৃতীয় স্রোত আছড়ে পড়বে কি না, তা-ও জানা নেই। যে ভুল কর্তারা করেছিলেন আইপিএল ভারতে ফিরিয়ে এনে, তার পুনরাবৃত্তি চাইবেন না তাঁরা। দেশের ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও আইপিএল চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।নিজেদের বিলাসবহুল জৈব সুরক্ষিত বলয়ে ভাইরাস হানা দেওয়ায় মাঝপথে আইপিএল স্থগিত করে দিতেই হয়। তা ছাড়া আইপিএল ভারতীয় বোর্ডের প্রতিযোগিতা। বিশ্বকাপ আইসিসি ইভেন্ট। তাই শুধু ভারতীয় বোর্ডের ইচ্ছায় বিশ্বকাপ আয়োজন করা যাবে না। মরুদেশে বিশ্বকাপ করার ব্যাপারে আগ্রহী হতে পারে আইসিসি-ও। নিয়ামক সংস্থার সদর দফতর এখন সেখানেই, তা ছাড়া আমিরশাহিতে করোনা পরিস্থিতি যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে। আপাতত অবশ্য আমিরশাহিকে বিকল্প কেন্দ্র হিসেবে বেছে রেখে মরিয়া চেষ্টা করা হতে পারে বিশ্বকাপ ধরে রাখার।
ক্রিকেটীয় দিক থেকে উদ্বেগ তৈরি করা তথ্য হচ্ছে, যদি দু’টি প্রতিযোগিতা পর-পর হয়, তা হলে দু’মাসের মধ্যে ৭৬টি ম্যাচ হবে আমিরশাহির তিনটি কেন্দ্র আবু ধাবি, দুবাই এবং শারজায়। এর মধ্যে রয়েছে আইপিএলের ৩১টি ম্যাচ, বিশ্বকাপের ৪৫টি ম্যাচ। বাইশ গজের স্বাস্থ্য নিয়ে আশঙ্কা অমূলক নয়।
ভারতীয় বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের অঙ্ক অনুযায়ী, ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর একমাত্র ফাঁকা সময় রয়েছে। আইপিএলের বাকি ৩১ ম্যাচ করতে হলে এই সময়েই করতে হবে। ওদিকে, বিরাট কোহালিদের ইংল্যান্ড সফরে পঞ্চম তথা শেষ টেস্ট ম্যাঞ্চেস্টারে শেষ হচ্ছে ১৪ সেপ্টেম্বর। চেতেশ্বর পুজারা এবং হনুমা বিহারীকে বাদ দিয়ে টেস্ট দলে যাঁরা আছেন, প্রায় প্রত্যেক ভারতীয় ক্রিকেটার আইপিএলের দলগুলির প্রথম একাদশের প্রধান ক্রিকেটার। চার মাসের ইংল্যান্ড সফরের পরে অন্তত দিন চার-পাঁচেকের বিশ্রাম না দিয়ে তাঁদের খেলতে বলাটা চূড়ান্ত অমানবিক হবে। তাই মনে করা হচ্ছে, ২০ সেপ্টেম্বরের আগে ‘আইপিএল পার্ট টু’ শুরু করা কঠিন। শেষও করতে হবে ১০ অক্টোবরের মধ্যে কারণ বিশ্বকাপের আগে ক্রিকেটারদের অন্তত দশ দিনের বিশ্রাম দিয়ে তরতাজা অবস্থায় নামাতে চাইবে সব দেশ। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহেই শুরু হওয়ার কথা বিশ্বকাপ, যার সূচি এখনও ঘোষণা করেনি আইসিসি।
দ্বিতীয় যে সমস্যার সামনে পড়তে হবে সৌরভদের, তা হচ্ছে, বিদেশি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ। বিশ্বকাপের ঠিক গায়ে গায়ে ক্রিকেটারদের এমন নিংড়ে নেওয়া আইপিএল সূচিতে নামতে দেবে কোনও দেশ? বেশির ভাগ দলেরই ছয়-সাতটি করে ম্যাচ বাকি রয়েছে গ্রুপ পর্বেই। যারা প্লে-অফ, ফাইনাল খেলবে তাদের জন্য থাকবে আরও বেশি ম্যাচ। ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড বলতে শুরু করেছে, তারা ক্রিকেটারদের পাঠাতে চায় না। ইংল্যান্ডের সাদা বলের ক্রিকেটের প্রায় সব তারকা খেলেন আইপিএলে। কলকাতা নাইট রাইডার্সে রয়েছেন অইন মর্গ্যান, সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদে জনি বেয়ারস্টো, জেসন রয়, চেন্নাই সুপার কিংসে মইন আলি, স্যাম কারেন, দিল্লি ক্যাপিটালসে ক্রিস ওক্স, টম কারেন, রাজস্থান রয়্যালসে জস বাটলার, জফ্রা আর্চার, বেন স্টোকস। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগও চলার কথা সেই সময়ে। শেষ হবে ১৯ সেপ্টেম্বর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের বিরাট চাহিদা আইপিএলে। সব ছক্কার ফেরিওয়ালারা আসেন ক্যারবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে। ক্রিস গেল, আন্দ্রে রাসেল, শিমরন হেটমায়ার, নিকোলাস পুরানদের ছাড়া কে দল নামাতে চাইবে? কেকেআর যেমন। এমনিতেই তাঁদের খেলা দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার জোগাড়। তার উপরে রাসেলকে ছাড়া যদি নামতে হয়, নাইট ভক্তরা টিভি খোলার সাহসও পাবেন বলে মনে হয় না।
ক্রিকেটভক্তরা নিশ্চয়ই একটা জিনিস দেখতে চাইবেন। আইপিএল হোক, কিন্তু বিশ্বকাপের প্রস্তুতি জলাঞ্জলি দিয়ে নয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy