রাজকোটে ভারতের দাপট। ছবি— পিটিআই।
ফিরে আসা বোধহয় একেই বলে। ওয়াংখেড়ের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ভারতকে মাটি ধরিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। রাজকোটের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচ ‘টিম ইন্ডিয়া’র কাছে ছিল ‘ডু অর ডাই’। শুক্রবার জিততেই হবে, না হলে সিরিজ হাতছাড়া হবে।
দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়াল ভারত। সিরিজ এখন ১-১। শামি-সাইনি-জাদেজাদের দাপটে অস্ট্রেলিয়া শেষ হয়ে গেল ৩০৪ রানে।
সিরিজ এ দিন জিততে হলে অ্যারন ফিঞ্চের দলকে করতে হত ৩৪১ রান। শিখর ধওয়ন, লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহালির ব্যাটিং দাপটে পাহাড় প্রমাণ রান তোলে ভারত। রান তাড়া করতে নেমে বিপজ্জনক ওয়ার্নারকে মাত্র ১৫ রানে ফেরান মহম্মদ শামি।
আরও পড়ুন: ‘স্মরণীয় পার্টনারশিপ’, এটিকে-মোহনবাগান সংযুক্তিকরণ নিয়ে উচ্ছ্বসিত সৌরভ
মনীষ পাণ্ডে এক হাতে বাঁ হাতি ওপেনারের ক্যাচ ধরেন। ফিঞ্চ করেন ৩৩। অস্ট্রেলিয়ার রান তখন ২ উইকেটে ৮২। অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেন স্টিভ স্মিথ ও লাবুশানে। প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে স্মিথ ব্যাট হাতে কিছু করে দেখানোর সুযোগ পাননি। মুম্বইয়ে ওয়ার্নার ও ফিঞ্চ ভারতীয় বোলারদের ধ্বংস করেছিলেন। এ দিন স্মিথ খেললেন ৯৮ রানের দুরন্ত ইনিংস। সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন স্মিথ। কুলদীপের বলে বোল্ড হন তিনি। স্মিথের আগে অবশ্য আউট হন লাবুশানে (৪৬)। আগের ভারত সফরে মোহালিতে টার্নার একা ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। এ দিন পর পর দু’ বলে শামি ফেরান টার্নার ও কামিন্সকে। হ্যাটট্রিক অবশ্য করতে পারেননি বাংলার পেসার। এ দিকে রান রেট বেড়েই চলছিল অজিদের। সেই চাপ সামলানো সম্ভব হয়নি অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে। ৪৯.১ ওভারে শেষ হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রোহিত শর্মা ও শিখর ধওয়নের ব্যাটে বড় রানের ভিত গড়েছিল ভারত। প্রথম পাওয়ারপ্লে-র ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ৫৫ রান তুলেছিলেন দু’ জনে। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকেননি ‘হিটম্যান’। ছয়টি চার-সহ ৪৪ বলে ৪২ করে অ্যাডাম জাম্পার বলে হলেন এলবিডব্লিউ। রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি তিনি।
আরও পড়ুন: দূরদৃষ্টি আর পেশাদারিত্বের অভাবেই কি এটিকের সঙ্গে মিশে যেতে হল মোহনবাগানকে?
রোহিত পঞ্চাশের দোরগোড়া থেকে ফিরেছিলেন। আর শিখর ফেরেন সেঞ্চুরির দরজা থেকে। কেন রিচার্ডসনের বলে ৯৬ রানে ফাইন-লেগে সহজ ক্যাচ দেন মিচেল স্টার্ককে। ৯০ বলের ইনিংসে মারেন ১৩টি চার ও একটি ছয়। বিরাটের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ধওয়ন যোগ করেন ১০৩ রান। তার আগে মুম্বইয়ের পর রাজকোটেও টানা দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করেন শিখর ধওয়ন। ৬০ বলে পঞ্চাশে পৌঁছন তিনি। ক্রমশ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিলেন তিনি। শতরান নিশ্চিতই দেখাচ্ছিল তাঁর। কিন্তু তা ফেলে দিয়ে এলেন বাঁ-হাতি ওপেনার।
আগের ম্যাচের থেকে শিক্ষা নিয়ে এ দিন তিন নম্বরে নেমেছিলেন কোহালি। তাঁকেও ছন্দে দেখাল। সারাক্ষণ সচল রাখলেন স্কোরবোর্ড। ৫০ বলে পৌঁছলেন পঞ্চাশে। কিন্তু ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৭৮ রানে। ফের অ্যাডাম জাম্পার শিকার হন তিনি। অ্যাশটন আগার লং-অফে ক্যাচ ধরে ভারসাম্য হারানোর সময় ছুড়ে দিলেন মিচেল স্টার্ককে। তাঁর ৭৬ বলের ইনিংসে ছিল ছয়টি চার।
শিখর ফেরার পরই আউট হয়েছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। এই সিরিজ ভাল গেল না তাঁর। দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হন। ১৭ বলে সাত রান করে অ্যাডাম জাম্পার বলে বোল্ড হন। রান পেলেন না ছয়ে নামা মণীশ পাণ্ডেও (২)। কোহালি আউটের পর কেন রিচার্ডসনের বলে অ্যাশটন আগারকে ক্যাচ দেন তিনি।
পাঁচে নামা লোকেশ রাহুল অবশ্য আগ্রাসী ইনিংস উপহার দিলেন। ৩৮ বলে পৌঁছন পঞ্চাশে। শেষ ওভারে হন রান আউট। ৫২ বলে ৮০ রানের ইনিংসে মারেন ছয়টি চার ও তিনটি ছয়। একদিনের ক্রিকেটে হাজার রান পেরিয়ে গেলেন তিনি।
একদিনের ক্রিকেটে তাঁর শেষ তিন ইনিংসের রান ছিল যথাক্রমে ১০২, ৭৭ ও ৪৭। সেই মেজাজেই ব্যাট করলেন। দেখিয়ে দিলেন, ওপেনিং না করলেও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবেও কতটা কার্যকরী হতে পারেন তিনি। ষষ্ঠ উইকেটে রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে যোগ করেন মূল্যবান ৫৮ রান। যা ভারতকে পৌঁছে দেয় ৩৪০ রানে। ১৬ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন জাদেজা। অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার জাম্পা (৩-৫০)। রিচার্ডসন নেন দুই উইকেট।
ওয়াংখেড়ের ওয়ানডে অনেক প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়েছিল ভারতকে। শুরুতে ঝড় তুলতে পারছিলেন না ব্যাটসম্যানরা। অহেতুক সমীহ করা হচ্ছিল বিপক্ষ বোলারদের। প্রচুর ডট বল খেলছিলেন ব্যাটসম্যানরা। যা নিয়ে কথা উঠেছিল দলের মধ্যেই। পরের দিকে রানের গতি বাড়ানো যাচ্ছিল না। নীচের দিকের ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা তো ছিলই। এ দিন দাপটের সঙ্গে জিতল ভারত। সেই সঙ্গে নিন্দুকদেরও থামিয়ে দিল কোহালির দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy