Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

জখম দর্শকের জন্য প্রার্থনা নায়কের

ত্তেজনায় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের র‌্যাম্প থেকে পড়ে গেলেন বাটানগরের মোহনবাগান সমর্থক রিন্টু সরকার! পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর তৎপরতায় তাঁকে প্রথমে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। পরে সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় বাইপাস সংলগ্ন অন্য একটি হাসপাতালে। 

মার্কাস জোসেফ ড্রেসিংরুমে ফিরে শুনেছিলেন এই দুর্ঘটনার কথা। ফাইল চিত্র

মার্কাস জোসেফ ড্রেসিংরুমে ফিরে শুনেছিলেন এই দুর্ঘটনার কথা। ফাইল চিত্র

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ০৫:০০
Share: Save:

প্রথমার্ধের শেষ দিকে মার্কাস জোসেফ যখন পেনাল্টি থেকে গোল করে গোকুলমকে এগিয়ে দিচ্ছেন, ঠিক তখনই অঘটন। উত্তেজনায় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের র‌্যাম্প থেকে পড়ে গেলেন বাটানগরের মোহনবাগান সমর্থক রিন্টু সরকার!

পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর তৎপরতায় তাঁকে প্রথমে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। পরে সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় বাইপাস সংলগ্ন অন্য একটি হাসপাতালে। রাতের খবর, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।

শনিবারের ডুরান্ড ফাইনালের নায়ক মার্কাস জোসেফ ড্রেসিংরুমে ফিরে শুনেছিলেন এই দুর্ঘটনার কথা। হোটেলে যাওয়ার পথে গোকুলমের ক্যারিবিয়ান তারকা সাংবাদিকদের কাছ থেকে খোঁজ নিচ্ছিলেন আহত সমর্থকের সম্পর্কে। যুবভারতী ছেড়ে যাওয়ার আগে বলে গেলেন, ‘‘মোহনবাগানের এক সমর্থক পড়ে গিয়ে জখম হয়েছেন। শুনে খারাপ লাগছে। আজ রাতে আমার রুমমেট আন্দ্রে এঁতিয়েনের সঙ্গে উৎসব করব ঠিকই। কিন্তু সেই উৎসবের আগে রাতে ওই সমর্থকের জন্য প্রার্থনা করব যেন তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। আমাদের খেলার প্রেরণা তো ওঁরাই।’’ যা শুনে হাততালি দেন তাঁর সামনে থাকা সবুজ-মেরুন সমর্থকেরাও। জোড়া গোল করে মোহনবাগানকে হারিয়ে ক্যারিবিয়ান মার্কাস তাই এ বারের ডুরান্ড ফাইনালের নায়ক শুধু নন। জিতে নিয়েছেন মোহনবাগান সমর্থকদের হৃদয়ও।

ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোর বাসিন্দা হলেও ব্রায়ান লারা বা ডোয়েন ব্র্যাভোকে কখনও সামনা সামনি দেখেননি মার্কাস। কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলনে নেচে ফেললেন ডোয়েন ব্র্যাভোর সেই বিখ্যাত নাচ ‘চ্যাম্পিয়ন’। তার পরে হাসতে হাসতেই বলে ফেললেন, ‘‘আমাদের স্টপার আন্দ্রে এঁতিয়েন আমার দেশের ফুটবলার। ওকে ম্যাচের আগে বলেছিলাম আজ জিততেই হবে। তুই রক্ষণটায় তালাচাবি দিয়ে দে। মোহনবাগান গোল দেওয়ার পরেও ওকে গিয়ে বলেও এসেছিলাম। কাপ জিতে তাই ড্রেসিংরুমেও ওর সঙ্গে এই ম্যাচটা এক বার নেচেছি।’’

ডুরান্ডে প্রতি ম্যাচে গোল করেছেন। গোটা প্রতিযোগিতায় ১১ গোল তাঁর। কিন্তু ১৫ গোলের লক্ষ্য তো পূর্ণ হল না? শুনে হাসেন মার্কাস। বলেন, ‘‘তারাদের লক্ষ্য করে এগোলে, তবেই না আকাশ ছুঁতে পারবেন। ১১ গোলও খারাপ নয়।’’

বাবা লেরিক জোসেফ ফুটবলার। মা মেরিলিন পিটার্স ক্রিকেট খেলতেন ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোর হয়ে। দুই ছেলে ছয় বছরের মেকাই ও চার বছরের মালাকাইও ফুটবলের পাঠ নেয় বাবাকে বাড়িতে পেলে। তাই তাঁর পাওয়া ডুরান্ডের সেরা ফুটবলার ও সর্বোচ্চ গোলদাতার ট্রফিটা মার্কাস উৎসর্গ করে দেন দুই ছেলেকেই। বলেন, ‘‘এই দুই পুরস্কার আমার দুই ছেলের জন্য।’’

কেরল প্রিমিয়ার লিগের পরে ডুরান্ড কাপ। পরবর্তী লক্ষ্য কী? উত্তর মার্কাসের মুখে যেন তৈরিই। বলে দেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানকে পর পর দুই ম্যাচে হারিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি আমরা ওদের ভয় পাই না। এ বার সামনে আই লিগ। সেখানেও ট্রফিটার সঙ্গে সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে চাই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy