Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
KL Rahul

রাহুলের মতো পুজারাও পারবে না, হুঙ্কার ত্রয়ীর

কর্নাটকের কে এল রাহুল, মণীশ পাণ্ডে এবং করুণ নায়ারের মতো তারকার বিরুদ্ধে সাফল্যের পরে বাংলার পেস-ত্রয়ীর সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ।

ত্রিফলা: মুকেশ-ঈশান-আকাশ। তিন পেসারকে সামনে রেখেই রঞ্জি ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলা। ফাইল চিত্র

ত্রিফলা: মুকেশ-ঈশান-আকাশ। তিন পেসারকে সামনে রেখেই রঞ্জি ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলা। ফাইল চিত্র

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২০ ০৪:৪৭
Share: Save:

রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে ওঠার পরের দিন বিশ্রামেই কাটালেন বাংলার পেস ত্রয়ী। কিন্তু চোখ রাখলেন গুজরাত বনাম সৌরাষ্ট্র ম্যাচের দিকে। চা-বিরতির আগে পর্যন্ত পার্থিব পটেল ও চিরাগ গাঁধীর জুটি ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিল গুজরাতকে। কিন্তু শেষ সেশনে জয়দেব উনাদকাটের ঝড়ে উড়ে গেল গুজরাত। পার্থিবদের ৯২ রানে হারিয়ে রঞ্জি ফাইনালে বাংলার মুখোমুখি সৌরাষ্ট্র।

কর্নাটকের কে এল রাহুল, মণীশ পাণ্ডে এবং করুণ নায়ারের মতো তারকার বিরুদ্ধে সাফল্যের পরে বাংলার পেস-ত্রয়ীর সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি, চেতেশ্বর পুজারা। যাঁর ধৈর্য অপরিসীম। রান করার কোনও তাড়া নেই। বোলারদের ক্লান্ত করে দেওয়াই যাঁর স্বভাব। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে নতুন অঙ্ক কষা শুরু ঈশান পোড়েল, মুকেশ কুমার ও আকাশ দীপের।

পুজারার সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা আছে একমাত্র ঈশানের। ভারতীয় ‘এ’ দলের প্রতিনিধিত্ব করতে নিউজ়িল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন ঈশান। সেখানে নেটে পুজারাকে দীর্ঘক্ষণ বল করেছেন। কোথায় তাঁর দুর্বলতা, কী তাঁর শক্তি, সব কিছুই নখদর্পণে। এ বারের রঞ্জিতে ২২ উইকেট পাওয়া ঈশানের উপলব্ধি, ‘‘পুজারার ইনসুইংয়ে সমস্যা হয়। নিউজ়িল্যান্ড সফরে নেটে বল করে দেখেছি, ভিতরের দিকে বল এলে ও কোনও রকমে সামলায়। টেস্টে ট্রেন্ট বোল্টের বিরুদ্ধে তাই ব্যর্থ। দ্বিতীয় টেস্টে ওর ব্যাট ও পায়ের ফাঁক দিয়ে স্টাম্প ছিটকে দিয়েছে বোল্ট।’’ যোগ করেন, ‘‘কিন্তু ওর ধৈর্যই শক্তি। রান আটকে ওকে সমস্যায় ফেলা যায় না। বল নড়াচড়া না করলে পুজারাকে আউট করা কঠিন। তবে রাজকোটের উইকেট থেকে পেসারেরা সাহায্য পাচ্ছে। উনাদকাট দ্বিতীয় ইনিংসে সাত উইকেট পেয়েছে। পঞ্চম দিনেও স্লিপ পর্যন্ত বল পৌঁছচ্ছে। সেটা দেখে সাহস পাচ্ছি।’’

ম্যাচের পরের দিন পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটালেন বঙ্গ পেসার। চন্দননগরের বাড়িতে মায়ের হাতে বানানো এঁচোড়ের তরকারি, উচ্ছের চচ্চড়ি ও পনিরের ডালনা খেয়ে ঘুম দিয়েছেন। বিকেলে উঠে মায়ের সঙ্গে চা পান করেই চলে গিয়েছেন নিজের কোচিং ক্যাম্পে। রাতে সতীর্থ অর্ণব নন্দীর সঙ্গে নৈশভোজের প্ল্যান। অর্ণবের বাড়ি চুঁচুড়ায়। ছুটির দিনে এ ভাবেই আড্ডা চলে দু’জনের। বলছিলেন, ‘‘কাল সকালে চুচুঁড়ার মাঠে আমি আর অর্ণবদা ওয়ার্কআউট করব। বাড়িতে থাকলে এ ভাবেই অনুশীলন চলে দু’জনের।’’

এ দিকে কর্নাটকের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ইনিংসে ছয় উইকেট নেওয়া মুকেশ কুমার বাড়িতে বসে অরিজিৎ সিংহের গানে ডুবে ছিলেন। তিনি বেশি আড্ডা পছন্দ করেন না। সময় পেলেই একা থাকতে ভালবাসেন। আগে ডায়েরি লিখতেন। এখন তা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে প্রত্যেক দিন তাঁর প্রাপ্তি ও ব্যর্থতা এখনও লিখে রাখেন ব্যক্তিগত খাতায়। এ বারের রঞ্জিতে ৩০টি উইকেট হয়ে গিয়েছে মুকেশের। সেমিফাইনাল শেষে বাড়ি ফিরেই তা খাতায় লিখে রেখেছেন বঙ্গ পেসার। বুধবার দুপুরে তিনিও চোখ রেখেছেন সৌরাষ্ট্র-গুজরাত ম্যাচে। বিকেলে আনন্দবাজারকে বলছিলেন, ‘‘সৌরাষ্ট্রও আমাদের মতো দলীয় সংহতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু কর্নাটকের মতো দলকে যখন হারাতে পেরেছি, সৌরাষ্ট্রকেও পারব। রাহুল, মণীশ, করুণরা আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই পারেনি। পুজারাও পারবে না।’’ মুকেশ যদিও সতর্ক শেল্ডন জ্যাকসন ও অর্পিত বাসবদাকে নিয়ে। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন শেল্ডন। দ্বিতীয় ইনিংসে কঠিন পরিস্থিতিতে ১৩৯ রান করেন অর্পিত। মুকেশের কথায়, ‘‘দু’জনের ব্যাটিং দেখেছি হাইলাইটসে। বেশ ভাল ব্যাটসম্যান। উইকেটের সব দিকেই শট আছে। ওরাই দলকে টানছে।’’

আকাশ দীপ বিপক্ষ নিয়ে ভাবছেনই না। আসানসোলে নিজের বাড়ি যেতে পারেননি। তাই মন খারাপ। ম্যাচ দেখলেও সে ভাবে অঙ্ক কষা হয়নি। মায়ের হাতে বানানো ‘কারি-চাউল’ খুব মিস করছেন। কলকাতার রেস্তরাঁয় এই পদ সে ভাবে জনপ্রিয় নয়। তাই দুপুরে মুকেশ ও শ্রীবৎস গোস্বামীর সঙ্গে বাঙালি পদ দিয়েই মন ভরালেন। প্রিয় নায়ক হৃতিক রোশনের ছবি দেখতে পছন্দ করেন। অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে বিয়ে করে ঐশ্বর্য রাই তাঁর মন ভেঙেছেন। তার পর থেকে দেবদাস ছবিটি বেশ কয়েক বার দেখেছেন আকাশ। বর্তমানে তাঁর প্রিয় ছবি অক্ষয় কুমার অভিনীত কেশরী। আকাশ বলছিলেন, ‘‘যখনই মন খারাপ হয়, কেশরী দেখি। ছবিটি আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আলাদা শক্তি অনুভব করি।’’

এ বার পুজারার বিরুদ্ধে সেই শক্তি প্রয়োগের পালা। আকাশ যদিও বলে দিলেন, ‘‘গত ম্যাচেও রাহুল, করুণকে নিয়ে চিন্তা করিনি। এ ম্যাচেও পুজারাকে নিয়ে বেশি ভাবব না। আমার অস্ত্র ইনসুইং। সেটাই পুজারার দুর্বলতা। রাজকোট যাব। রঞ্জি ট্রফি নিয়ে বাড়ি ফিরব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy