লড়াই: বল দখলের চেষ্টা সুরাবুদ্দিনের। ছবি: সুমন বল্লভ
কলকাতা লিগের ডার্বি ড্র হওয়ার পরে জিততে না পারার হতাশা মোহনবাগান শিবিরে। কোচ কিবু ভিকুনা থেকে ম্যাচের সেরা জোসেবা বেইতিয়া—সকলেই মনে করছেন, জেতা ম্যাচ অমীমাংসিত রেখে ফিরতে হল তাঁদের। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে মোহনবাগান কোচ যেমন বলেই দিলেন, ‘‘ম্যাচটা আমরা ১-০ জিততেই পারতাম। তাই হতাশ তো লাগবেই।’’
কিবু সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘আমরা গোলের সহজ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারিনি। প্রথমার্ধে নিখুঁত পাস ও দুই প্রান্ত ধরে আক্রমণ করার সময়েই গোল চলে আসতে পারত। ভাগ্য খারাপ। তাই জেতা হল না।’’
হতাশার সুর বেইতিয়ার গলাতেও। ম্যাচ সেরা হওয়ার পুরস্কার স্বর্ণমুদ্রা হাতে স্টেডিয়াম ছাড়ার সময়ে তিনিও বলে গেলেন, ‘‘সেরা হলেও দল না জেতায় খারাপ লাগছে। এই পুরস্কার পরিবারকে উৎসর্গ করছি।’’
কিবু ও বেইতিয়া—দু’জনেই প্রথম ডার্বিতে নেমেছিলেন এ দিন। বর্ণময় মোহনবাগান সমর্থকদের দেখে দু’জনেই উচ্ছ্বসিত। মোহনবাগান কোচের কথায়, ‘‘মোহনবাগান সমর্থকরা দুর্দান্ত। এই ম্যাচটা নিয়ে ওদের আবেগটা আজ সশরীরে উপলব্ধি করলাম।’’ আর বেইতিয়া বললেন, ‘‘মাঠে নেমে মোহনবাগান গ্যালারির দিকে তাকিয়ে মনে হল পরিবেশ অনেকটা আমার দেশ স্পেনের এল ক্লাসিকোর মতোই।’’
ম্যাচের আগে তাঁর দলের রক্ষণ, ফিটনেস ও বিপক্ষের কোলাদো নিয়ে অনেক কথা শুনতে হয়েছিল মোহনবাগান কোচকে। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তাই কিবু পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘ফিটনেস, রক্ষণ নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই?’’ পরক্ষণেই বিপক্ষে কোলাদো না থাকায় সুবিধা হয়ে গিয়েছিল কি না তা জানতে চাইলে এ বার মোহনবাগান কোচ বলেন, ‘‘আমি নিজের বাগানের দেখভাল করি। প্রতিবেশীর বাগান দেখা আমার কাজ নয়। আলেসান্দ্রোর কাছে জানতে চেয়েছেন, আমাদের সালভা চামোরো না খেলায় ওদের সুবিধা হয়েছে কি না?’’
ইস্টবেঙ্গলের কোলাদোর মতোই এ দিন সালভা ছিলেন না মোহনবাগানে। যে প্রসঙ্গে কিবুর যুক্তি, দলের রক্ষণকে পোক্ত করতেই ফ্রান মোরান্তের নেতৃত্বে চার ডিফেন্ডারের সামনে দুই হোল্ডিং মিডফিল্ডার শেখ সাহিল ও ফ্রান গঞ্জালেসকে রেখেছিলেন। আর বেইতিয়াকে দিয়েছিলেন আক্রমণ ও রক্ষণের মধ্যে সেতুবন্ধন করতে। মোহনবাগান কোচ চামোরোর না খেলা সম্পর্কে অদ্ভুত যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘‘এক একটা দৌড়ের জন্য এক এক রকম ঘোড়া তৈরি থাকে। তিন দিন অন্তর ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। সালভা এর মধ্যেই বেশ কিছু ম্যাচ খেলে ফেলেছে। তা ছাড়া রক্ষণ পোক্ত করতে হত। তাই ওকে দলে রাখিনি।’’
বেইতিয়া ছাড়াও এ দিন সবুজ-মেরুনের অপর নায়ক শেখ সাহিল। কোচ কিবুও উচ্ছ্বসিত সাহিলের খেলা দেখে। তাঁর কথায়, ‘‘১৯ বছরের ছেলেটা দারুণ খেলল। মাথা শান্ত। অ্যাকাডেমি থেকে উঠে এসে বড়দের দলে দারুণ মানিয়ে নিয়েছে।’’ বেইতিয়াও তাঁর এই বঙ্গসন্তান সতীর্থ সম্পর্কে বলছেন, ‘‘সাহিল দুর্দান্ত। ও মাঝমাঠে দায়িত্ব নিয়ে খেলায় আমার সুবিধা হয়েছে।’’
সাংবাদিক সম্মেলনে উঠল দুই অর্ধে ভি পি সুহেরের সহজ দুই গোল নষ্টের প্রসঙ্গও। যা শুনে কিবু বলছেন, ‘‘সহজ সুযোগ নষ্ট করেছে ঠিকই। স্ট্রাইকারদের কাজই গোল করা। তবে এটা খেলারই অঙ্গ। শোধরাতে হবে।’’
চার ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট। লিগে সাত পয়েন্ট নষ্ট করেছে মোহনবাগান। ড্র হওয়ায় ইস্টবেঙ্গল এগিয়েই থাকল দুই পয়েন্টে। গত বছর জেতা কলকাতা লিগ মোহনবাগান তাঁবুতে কি লিগ শেষেও শোভা পাবে? মোহনবাগান কোচ বলছেন, ‘‘লিগের লড়াই খুব কঠিন। আমাদের পরের ম্যাচগুলো জিততেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy