মজিদা খাতুন। — নিজস্ব চিত্র।
জাতীয় অ্যারোবিক জিমন্যাস্টিক্সে তিনটি সোনাজয়ী খড়গপুরের মজিদা খাতুন অংশগ্রহণ করবেন দু’টি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়। বাংলা থেকে শুধু মজিদাই জাপান এবং ভিয়েতনামে যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছে। যদিও এই দুই প্রতিযোগিতায় তাঁর অংশগ্রহণ অনিশ্চিত। কারণ আর্থিক অনটন।
জাপানে আগামী ২৫ এবং ২৬ মে হবে বিশ্বকাপ। তার পর ভিয়েতনামে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে নামার কথা একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মজিদার। এই দুই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সুযোগ পেয়েও যাওয়া হবে কিনা, জানতেন না বাংলার অ্যারোবিক জিমন্যাস্ট।
মজিদার বাবা শেখ মজিদ ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করেন খড়গপুর শহরে। কোনও রকমে চলে তাঁদের সংসার। গত বছর জম্মু-কাশ্মীরে অনুষ্ঠিত জাতীয় অ্যারোবিক জিমন্যাস্টিক্সে তিনটি বিভাগে সোনা জিতেছিল মজিদা। জাপান এবং ভিয়েতনামের প্রতিযোগিতায় নামতে প্রয়োজন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই টাকার ব্যবস্থা করা কঠিন মজিদার চা বিক্রেতা বাবার পক্ষে। সমস্যার কথা শুনেছিলেন খড়গপুরের প্রাক্তন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায়। নির্বাচন শুরুর আগে তিনি বদলে হয়ে গিয়েছেন বোলপুরে। তবু মজিদার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। ফোনে কথা বলেছেন মজিদার সঙ্গে। আশ্বাস দিয়েছেন প্রয়োজনীয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যবস্থা করে দেওয়ার। মঙ্গলবার পুলিশ কর্তা জাপান এবং ভিয়েতনাম যাওয়ার বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বাকি টাকাও খুব দ্রুত ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। রানা বলেছেন, ‘‘আমি চাই না অর্থের অভাবে প্রতিভা নষ্ট না হয়ে যাক। খড়গপুরে ছিলাম দীর্ঘদিন। সমস্যার কথা জানতে পেরে কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলি। আমরা মজিদার সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছি। আশা করছি, বিদেশ থেকে সোনা নিয়েই ফিরবে মজিদা।’’
সাহায্যের আশ্বাস পেয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন মজিদাও। তিনি বলেছেন, ‘‘আগে বাবা দর্জির কাজ করতেন। লকডাউনে সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে সংসার চালাতে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করেন বাবা। পড়াশোনার পাশাপাশি নৈহাটিতে সম্রাট পালের কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছি। জাপান এবং ভিয়েতনামে দেশের মোট পাঁচ জন যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আর্থিক সমস্যার জন্য আমার অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। এখন মনে হচ্ছে যেতে পারব। অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি। সোনা জিতে ফিরতে চাই।’’
জাতীয় অ্যারোবিক জিমন্যাস্টিক্সে সোনা জয়ের পর রাজ্য সরকার ২ লাখ টাকা পুরস্কার দিয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারের দফতর থেকেও আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছিল। এবারও এক পুলিশ কর্তার সাহায্যেই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নামতে চলেছেন মজিদা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy