হোসেবা বেইতিয়া। —ফাইল চিত্র
জোসেবা বেইতিয়াকে বলেই ফেললেন ফ্রান গঞ্জালেস, ‘‘তোমার তো দারুণ সুবিধা, একটাই কাজ। আমার মাথায় বল তুলে দিয়েই খালাস। গোল তো আমাকে করতে হয়।’’ সাংবাদিক সম্মেলনের মধ্যে স্বদেশীয় মিডিয়োর মন্তব্যে হেসে ফেলেন মোহনবাগান মাঝমাঠের ‘মায়েস্ত্রো’। তারপর বলেন, ‘‘আমার মতো একজন পাসার আছে বলেই তুমি সর্বোচ্চ গোলদাতার লড়াইতে আছ। ন’টা গোল করে ফেলেছ।’’ এর পরেই দুই স্পেনীয় একসঙ্গে হাসতে শুরু করে দেন।
বেইতিয়া-গঞ্জালেসের এই মজার প্রশ্নোত্তর পর্ব বুঝিয়ে দেয়, মোহনবাগানের আবহ। কিবু ভিকুনার দলের ড্রেসিংরুমের রসায়ন। রবিবার ট্রাউয়ের বিরুদ্ধে খেলবেন পালতোলা নৌকার সওয়ারিরা। খেতাবের দিকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইম্ফলের মাটিতে এই ম্যাচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার পরেই কল্যাণীতে পরপর দুটো ম্যাচ রয়েছে চেন্নাই এফসি এবং আইজল এফসি-র সঙ্গে। এর পরে ডার্বি। বড় ম্যাচের আগেই কি চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে আপনার দল? বেইতিয়া তাঁর কোচের মতোই সতর্ক। বললেন, ‘‘কবে, কোন ম্যাচ জিতলে চ্যাম্পিয়ন হব বলতে পারব না। অত অঙ্কও কষছি না। তবে এটা বলছি, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সে জন্য অপেক্ষা করছি।’’ যোগ করেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে জেতার ধারাবাহিকতাও রাখতে হবে। সেটাই এখন আমাদের লক্ষ্য। তবে এখন চাই ট্রাউয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিততে। তারপর পরের ম্যাচ নিয়ে ভাবব।’’
ড্যানিয়েল সাইরাসের খেলার সম্ভবনা নেই। রাইট ব্যাক আশুতোষ মেহতাও কার্ড সমস্যায়। তবে লালকার্ড দেখে বাইরে থাকা ধনচন্দ্র সিংহ ফিরেছেন দলে। বুধবার অবশ্য কোনও দল গঠন করে অনুশীলন করাননি কিবু। রক্ষণ সংগঠন, মাঝমাঠের ফুটবলারদের নিয়ে দীর্ঘক্ষণ অনুশীলন করিয়েছেন স্পেনীয় কোচ। চার দিকে চারটি ছোট গোল পোস্ট রেখে, পাসিং ফুটবলে শান দিয়েছেন। বেইতিয়াকে দিয়ে কর্নার করিয়েছেন নাগাড়ে। ফ্রান গঞ্জালেসকে দিয়ে পেনাল্টি মারার পাঠ দিয়েছেন। শুধু প্রথম একাদশ নয়, রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলারদের সমান প্রাধান্য দিয়ে অনুশীলন করিয়েছেন যুবভারতী সংলগ্ন মাঠে। কোচের সেই অনুশীলনের দিকে ইঙ্গিত করে বেইতিয়া বলে দিলেন, ‘‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য কী ভাবে, কত কঠোর পরিশ্রম করছি সেটা অনুশীলন দেখলেই বুঝতে পারবেন। টানা ১১ ম্যাচে অপরাজিত থেকে লিগ শীর্ষে থাকার রসায়ন এটাই।’’
ফ্রান গঞ্জালেস ন‘গোল করে দিপান্দা ডিকার সঙ্গে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার লড়াইতে রয়েছেন। পাপা বাবাকর দিয়োহারা সাত গোল করে ফেলেছেন শেষ ছয় ম্যাচে। দুই গোলদাতার পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পিছনের কারিগর বেইতিয়া। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাস বাড়িয়েছেন তিনি। প্রয়াত অমল দত্তের ডায়মন্ড ফর্মেশনে সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় যে কাজটা করতেন, কিবুর দলে সেই কাজটাই করছেন বেইতিয়া। তাঁর এক একটি পাস, কর্নার বা ফ্রি কিক প্রতিপক্ষের যাবতীয় প্রতিরোধ ভেঙে দেওয়ার অস্ত্র হয়ে উঠছে। তা সত্ত্বেও নিজেকে আলাদা করে দেখতে রাজি নন বাগানের নতুন ‘বস’ স্পেনীয় মিডিয়ো। বললেন, ‘‘ওটা তো আমার কাজ। দলকে জেতানোর জন্য এই কাজটা করে যাব আমি।’’ তিনটি হলুদ কার্ড দেখেছেন তিনি। আর একবার কার্ড দেখলেই একটি ম্যাচ বাইরে থাকতে হবে বেইতিয়াকে। তাতে তো দলের সমস্যা। প্রশ্ন শুনে বেইতিয়া বললেন, ‘‘বাকি যারা খেলবে, তারা ম্যাচ জিতিয়ে দেবে। সমস্যা হবে না।’’ তাঁর সেরা ম্যাচ কোনটা? সবুজ-মেরুনকে লিগ জেতার স্বপ্ন দেখানো বেইতিয়া থমকে যান। তারপর বলেন, ‘‘মনে হয় নেরোকা। তবে ডার্বিতে তো গোল করেছিলাম। ওটাকেই বা পিছিয়ে রাখব কী করে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy