ফাইল চিত্র।
ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ে ফিরে আসার লড়াইয়ে জো রুটের অস্ত্র সম্ভবত হতে চলেছে উপমহাদেশীয় দুই তরুণ প্রতিভা। এক জন, ভারতের এক গুজরাতি পরিবার থেকে উঠে আসা ওপেনিং ব্যাটসম্যান— হাসিব হামিদ। অন্য জন, পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পেসার— সাকিব মাহমুদ। যাঁর পরিবার একটা সময় থাকতেন রাওয়ালপিন্ডিতে।
চলতি সিরিজ়ে ইংল্যান্ড ওপেনারদের শোচনীয় ব্যর্থতার পরে দল থেকে ছেঁটে ফেলা হয় ডম সিবলিকে। তাঁর জায়গায় তৃতীয় টেস্টে দলে এসেছেন দাভিদ মালান। জানা গিয়েছে, মালান খেলবেন তিন নম্বরে। আর শুরুতে রোরি বার্নসের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে যাবেন হামিদ।
মাহমুদের সামনে টেস্টের দরজা খুলে যাওয়ার সম্ভাবনাটা হঠাৎ তৈরি হয়েছে সোমবারই। যখন জানা যায়, চোটের কারণে তৃতীয় টেস্টের দল থেকে ছিটকে গিয়েছেন ফাস্ট বোলার মার্ক উড। যে কারণে মাহমুদের টেস্ট অভিষেকের একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বুধবার থেকে লিডসের হেডিংলেতে শুরু হচ্ছে ভারত-ইংল্যান্ডের তৃতীয় টেস্ট। সিরিজ়ে ভারত এগিয়ে ১-০। বার্নস এবং হামিদকে কি এই টেস্টে ওপেন করতে দেখা যাবে? সোমবার হেডিংলে থেকে ‘ভার্চুয়াল’ সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্নের জবাবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক রুট বলেন, ‘‘হামিদ এবং বার্নস দু’ধরনের ব্যাটসম্যান। ওদের ব্যাট করার ধরনও আলাদা। আশা করব, ওরা আমাদের একটা ভাল মঞ্চ তৈরি করে দেবে। যার সুযোগ পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা নিতে পারবে।’’
ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা যে রকম ছন্দহীন অবস্থায় রয়েছেন, তা অবশ্যই চিন্তার কারণ রুটের কাছে। কিন্তু ইংল্যান্ড অধিনায়ককে আরও চাপে ফেলেছে তাঁর দুর্বল বোলিং। চোটের কারণে একের পর এক ছিটকে গিয়েছেন জফ্রা আর্চার, স্টুয়ার্ট ব্রড, ক্রিস ওক্স, অলি স্টোন এবং এখন উড। একমাত্র সেই জিমি অ্যান্ডারসনই ভরসা ইংল্যান্ড অধিনায়কের। প্রশ্ন হল, টানা তৃতীয় টেস্ট খেলার ধকল অ্যান্ডারসন কি নিতে পারবেন? উডের চোট নিয়ে রুট বলছিলেন, ‘‘আগের টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে চোট পেয়ে গেল উড। খেলতে না পারায় ও প্রচণ্ড হতাশ। উডের গতি ম্যাচে অনেক পার্থক্য গড়ে দেয়।’’ ২৪ বছর বয়সি মাহমুদের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কতটা? রুটের জবাব, ‘‘মাহমুদ দারুণ উন্নতি করেছে। যা সুযোগ পেয়েছে, সবই কাজে লাগিয়েছে। টেস্টে সুযোগ পেতেই পারে ও।’’
২৪ বছর বয়সি হামিদের পরিবার গুজরাত থেকে ইংল্যান্ডে চলে আসে। ২০১৬ সালে ভারতের বিরুদ্ধে রাজকোটে অভিষেক হয়েছিল হামিদের। সেই সিরিজে তিনটে টেস্ট খেলার পরে জাতীয় দল থেকে ছিটকে যান এই ওপেনার। তাঁর প্রত্যাবর্তন ঘটেছে লর্ডস টেস্টে। মাহমুদ এখনও টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায়। তবে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তিনি বেশি নজর কেড়েছেন। ঘণ্টায় ১৩৫-১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করার ক্ষমতা আছে এই পেসারের। মাহমুদের দক্ষতার প্রশংসা এর আগে করেছিলেন
শোয়েব আখতারও।
সদ্য সমাপ্ত লর্ডস টেস্টের চতুর্থ দিন থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। যখন কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন বিরাট কোহালি ও অ্যান্ডারসন। ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেটশিকারি এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ অন্য কারণে খবরের শিরোনামে। কেউ কেউ মনে করছেন, অ্যান্ডারসন ওই ভাবে মাথা গরম করায় আখেরে লাভ হয়েছে ভারতেরই। এর পরেও কি অ্যান্ডারসনরা ‘স্লেজ’ করতে যাবেন বিরাটদের? রুটের জবাব, ‘‘জানি, ম্যাচকে কেন্দ্র করে অনেক নাটক হয়। দেখতে হবে যে ভাবে চাইছি, সে ভাবেই যেন খেলতে পারি। যা সৎ নয়, তার থেকে দূরে থাকতে হবে।’’
এখানেই শেষ নয়। রুট আরও বলেন, ‘‘আমাদের এও নিশ্চিত করতে হবে, যেন আমরা নিজেদের প্রতি সৎ থাকি। বিরাটের দল ওদের মতো খেলবে। আমি চাই মাঠে নেমে আমাদের ছেলেরা যেন নিজেদের সেরা ভাবমূর্তিটা
তুলে ধরে।’’
লর্ডস টেস্টের পরেই রুট স্বীকার করে নিয়েছিলেন, তাঁর রণনীতি ভুল ছিল। এ দিন বললেন, ‘‘শেষ টেস্টের পরে আমরা অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। এখন মনে হচ্ছে, অধিনায়ক হিসেবে অন্য কিছু করা যেতেই পারত।’’ যোগ করেন, ‘‘আমরা কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া। যা হয়েছে তা ভুলে মাঠে
নামতে হবে।’’
ভারতীয় বোলিংয়ের বিরুদ্ধে তিনি রান পেলেও তাঁর দল ক্রমাগত ব্যর্থ হয়ে চলেছে। যশপ্রীত বুমরাদের নিয়ে ইংল্যান্ড অধিনায়কের মন্তব্য, ‘‘ভারতের বোলিং আক্রমণ নিঃসন্দেহে দারুণ। তার উপরে ওরা ইংল্যান্ডের পরিবেশটাও খুব ভাল কাজে লাগিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy