ঝুলন গোস্বামী। নিজস্ব চিত্র।
প্রহর গোনা চলছিলই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের আনিসা মহম্মদের ক্যাচ তালুবন্দি হতেই মেয়েদের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির পালক জুড়ে গেল ‘চাকদহ এক্সপ্রেস’ ঝুলন গোস্বামীর তাজে। প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত হলেন স্বয়ং সুনীল গাওস্কর।
সেই উচ্ছ্বাসের ঢেউ এসে লেগেছে চাকদহেও। শনিবার হ্যামিল্টনে ঝুলন ওই উইকেট নিতেই মেয়েদের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে তাঁর সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪০। ভেঙে যায় অস্ট্রেলিয়ার লিন ফুলস্টনেপর ৩৯ উইকেটের রেকর্ড। বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচেই সেই রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছিলেন ঝুলন। এ বার তিনিই বিশ্বের শীর্ষে।
চাকদহ শহরের পূর্ব পারে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়িতে বসে একগাল হেসে ঝুলনের মা ঝর্ণা গোস্বামী অবশ্য জানান, তাঁরা ভীষণ খুশি ঠিকই, তবে আরও খুশি হবেন ঝুলনেরা বিশ্বকাপ পেলে। পাঁচ বছর আগে বিশ্বকাপ জিততে না পারার আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে। ২০১৭ সালে ফাইনালে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল ঝুলনদের। সে দিন খেলা দেখার জন্য এলাকার মানুষ তাঁদের চাকদহের বাড়িতে ভিড় জমিয়েছিলেন। হতাশ হয়ে তাঁদের ফিরতে হয়েছিল। সেই ছবিটা এ বার বদলে যাক, চাইছেন তাঁরা।
শুক্রবার সকালে মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে মায়ের। তাঁর কথা, “মেয়ে বলছিল, ‘বৃহস্পতিবার আমরা দাঁড়িয়ে থেকে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে গেলাম।’ মেয়ের মুখে এ কথা শুনে আমার কষ্ট হচ্ছিল। আবার রাগও হচ্ছিল। আমি ওকে বললাম, ‘ঠিক মতো না খেলতে তো হেরেই যাবি।’ আবার এ-ও বলেছি, ‘দেখ বাকি খেলাগুলো যাতে ঠিক মতো খেলতে পারিস, সে দিকে তোরা সবাই
নজর দে।”
একটু থেমে ঝর্ণা গোস্বামী বলেন, “করোনার কারণে অনেক কিছুর মতো খেলারও ক্ষতি হয়েছে। ওরা মাঠে অনুশীলন করতে পারেনি। সেই সময়ে বাড়িতেই ছিল মেয়ে। এখানে জিম করেছে। ঘরের মধ্যে থেকে যেটুকু শরীরচর্চা করার, সেটুকু করেছে।”
তিন দশক আগে বাড়ির সামনে একফালি উঠোনে খেলা শুরু হয়েছিল ছোট্ট ঝুলনের। ছেলেদের সঙ্গে পাড়ার মাঠে খেলা করেছে। ছেলেদের সঙ্গে বিভিন্ন মাঠে খেলা দেখতে গিয়েছে। সেই সময়ে অনেকে তা ভাল ভাবে নেয়নি। কিন্তু ঝুলন থেমে থাকেনি। লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। পাড়ার মাঠ ছেড়ে কলকাতার মাঠে অনুশীলন করতে গিয়েছে। মেয়েদের বিশ্বকাপে ট্রফি ছুঁতে পারা শুধু তাঁর নয়, গোটা পরিবারের, নিজের শহর চাকদহের, হয়তো বা গোটা দেশের স্বপ্ন।
এ বার ঝুলনদের বিশ্বকাপ জেতা নিয়ে কিন্তু বেশ আশাবাদী ঝুলনের বাবা নিশীথ গোস্বামী। তিনি বলেন, “আমার মনে হচ্ছে, এবার ভারতের মেয়েরাই বিশ্বকাপ জিতবে। তবে এটা তো খেলা। হারজিত তো রয়েছেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy