ঐতিহাসিক: কোটলার সেই চিরস্মরণীয় দৃশ্য। দশ উইকেট নেওয়া কুম্বলেকে নিয়ে শ্রীনাথ-সৌরভদের (পিছন ফিরে) উচ্ছ্বাস।
জিম লেকারের পরে টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে ১০ উইকেট শিকারের বিরল কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর দখলে। অনিল কুম্বলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর টেস্ট জেতানো সেই ঐতিহাসিক বোলিংয়ের স্মৃতিচারণে উল্লেখ করলেন সতীর্থ জাভাগল শ্রীনাথের নাম।
ইনস্টাগ্রাম চ্যাটে জ়িম্বাবোয়ের প্রাক্তন টেস্ট ক্রিকেটার পমি বাঙ্গোয়াকে তিনি বলেছেন, তিনি ৯ উইকেট পাওয়ার পরে শ্রীনাথ অপর প্রান্ত থেকে বল করতে এসে কী ভাবে ইচ্ছা করেই ওয়াইড করছিলেন। কুম্বলের কথায়, ‘‘চতুর্থ দিন চা-পানের বিরতির পরেই আমি তুলে নেই ওদের সাত, আট ও ন’নম্বর উইকেট। এর পরেই আমার ওভার শেষ হয়ে যায়। অপর প্রান্ত থেকে বল করতে আসে শ্রীনাথ। সেটা ওর কাছে সম্ভবত জীবনের কঠিনতম ওভার ছিল।’’ যোগ করেছেন, ‘‘আমি যাতে ১০ উইকেট পাই তার জন্য সে দিন ও নিজের বোলিং দক্ষতা জলাঞ্জলি দিয়েছিল। আমি কিন্তু ওকে কিছুই বলিনি। ভেবেছিলাম, পরের ওভারেই আমাকে বাকি উইকেট তুলে নিতে হবে। কারণ শ্রীনাথকে এ রকম আরও একটা ওভার করতে হলে আমার খুবই অস্বস্তি হত।’’ যোগ করেছেন, ‘‘সে দিন ভাগ্য আমার সঙ্গে ছিল। সিরিজে পিছিয়ে থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এ রকম স্মরণীয় পারফরম্যান্স করে জয় ছিনিয়ে আনা সত্যিই এক বিশেষ মুহূর্ত।’’
১৯৯৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে সেটি ছিল ভারতের দ্বিতীয় টেস্ট। তার আগে সিরিজে ০-১ পিছিয়ে ছিল ভারত। দিল্লিতে কুম্বলে একাই ১০ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে শেষ করে দেন ২০৭ রানে। ভারত ২১২ রানে ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফেরায়।
দিল্লির এই টেস্টের আগে চেন্নাইয়ে জয়ের খুব কাছে গিয়েই ভারতকে ১২ রানে হারতে হয়েছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তাই সিরিজে সমতা ফেরানোর জন্য বাড়তি তাগিদ ছিল ভারতীয় দলে। দিল্লিতে জয়ের জন্য ৪২০ রান করতে হবে এই অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের দুই ওপেনার সইদ আনোয়ার ও শাহিদ আফ্রিদি ওপেনিং জুটিতে ১০১ তুলেছিলেন। বিপক্ষের দ্রুত উইকেট পতনের জন্য তাই ভারত অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিন সে দিন কুম্বলেকে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর থেকে চা পানের বিরতি পর্যন্ত টানা বল করিয়ে গিয়েছিলেন। আর কুম্বলে একাই ধসিয়ে দেন পাকিস্তান ইনিংস।
যে স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে কুম্বলের মন্তব্য, ‘‘মনে হয়, গতকালই এই ঘটনাটা ঘটেছে। এটা জীবনের একটা বিশেষ অভিজ্ঞতা। বহু বছর পরে ভারতে খেলতে এসে পাকিস্তান সিরিজে ১-০ এগিয়ে ছিল। তাই কোটলায় আমাদের জিততেই হত। উইকেটে বল থমকে আসছিল। এ ছাড়াও অসমান বাউন্স ছিল পিচে। যা আমাকে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলেছিল।’’ যোগ করেছেন, ‘‘মধ্যাহ্নভোজ পর্যন্ত পাকিস্তান দারুণ খেলছিল। আমি জানতাম, ওদের একটা উইকেট ফেলতে পারলেই বাকি কাজটা হয়ে যাবে। মধ্যাহ্নভোজের পরে আমি প্রান্ত পরিবর্তন করে বল করতে শুরু করি। প্রথম দু’টো উইকেটের পরে ওরা পর পর আউট হয়ে ফিরেছিল আমার বলে।’’
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ভারতের কিংবদন্তি লেগস্পিনার আরও বলেন, ‘‘ক্লান্ত হলেও টানা মধ্যাহ্নভোজের পর থেকে চা পানের বিরতি পর্যন্ত বল করে গিয়েছিলাম। বুঝতে পারছিলাম, আমার সামনে একটা বিরল সুযোগ এসেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy