ফাইনালে ওঠার উল্লাস। (বাঁ দিকে) জেসমিন পাওলিনি, বারবোরা ক্রেচিকোভা (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
সপ্তম বাছাই জেসমিন পাওলিনি ইটালির প্রথম মহিলা টেনিস খেলোয়াড় যিনি ওপেন এরায় উইম্বলডনের ফাইনালে উঠলেন। সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার ডোনা ভেকিচকে তিন সেটের (২-৬, ৬-৪, ৭-৬) টান টান লড়াইয়ে হারিয়েছেন তিনি। ২ ঘণ্টা ৫১ মিনিটের লড়াই জিতে ফাইনালে উঠেছেন পাওলিনি। এক মাস আগেই ফরাসি ওপেনের ফাইনালে রানার্স হয়েছিলেন পাওলিনি। মহিলাদের শীর্ষ বাছাই ইগা শিয়নটেকের কাছে হেরেছিলেন তিনি। এ বার উইম্বলডন জেতার সুযোগ পাওলিনির সামনে। ফাইনালে তাঁর সামনে বারবোরা ক্রেচিকোভা। সেমিফাইনালে চতুর্থ বাছাই এলিনা রিবাকিনাকে তিন সেটের লড়াইয়ে হারান তিনি। পিছিয়ে পড়েও অঘটন ঘটিয়েছেন ক্রেচিকোভা। অর্থাৎ, এ বার নতুন মহিলা চ্যাম্পিয়ন পেতে চলেছে উইম্বলডন।
মহিলাদের উইম্বলডনের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী সেমিফাইনাল খেললেন পাওলিনি ও ভেকিচ। প্রথম সেট জেতেন ভেকিচ। দ্বিতীয় সেটে ফিরে আসেন পাওলিনি। তৃতীয় সেট টাইব্রেকারে যাওয়ার আগে দু’বার ম্যাচ পয়েন্ট পেয়েছিলেন তিনি। এক বার ৫-৪ গেমে থাকাকালীন। দ্বিতীয় বার ৬-৫ গেমে থাকাকালীন। দু’বারই ভেকিচ ম্যাচ বাঁচান। খেলা টাইব্রেকারে নিয়ে যান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হারতে হয় তাঁকে।
২০১৬ সালে সেরিনা উইলিয়ামস শেষ বার মহিলা টেনিস খেলোয়াড় হিসাবে একই বছরে ফরাসি ওপেন ও উইম্বলডনের ফাইনালে উঠেছিলেন। এ বার তা করে দেখিয়েছেন ২৮ বছরের পাওলিনি। সেরিনা (২০০২, ২০১৫, ২০১৬) ও পাওলিনি (২০২৪) ছাড়া এই কৃতিত্ব আর তিন জনের রয়েছে। তাঁর হলেন স্টেফি গ্রাফ (১৯৯৯), ভিনাস উইলিয়ামস (২০০২) ও জাস্টিনে এনা আর্দেন (২০০৬)।
২০২৪ সালে ঘাসের কোর্টে পাওলিনির রেকর্ড অনবদ্য। ৮টি ম্যাচ জিতেছেন। ১টি হেরেছেন। দারিয়া কাসাতকিনা ছাড়া কেউ হারাতে পারেননি তাঁকে। এ বারের উইম্বলডনের ফাইনালে ওঠায় আগামী সপ্তাহে প্রথম পাঁচে ঢুকে পড়বেন পাওলিনি।
ম্যাচের শুরুটা ভাল হয়নি পাওলিনির। প্রথম সেটে অবাছাই ভেকিচ দাপট দেখান। পাওলিনিও কিছু আনফোর্সড এরর করেন। তার লাভ পান ভেকিচ। ৬-২ গেমে প্রথম সেট জিতে নেন তিনি। দ্বিতীয় সেটে পেরেন পাওলিনি। প্রথম আটটি গেমে দু’জনেই নিজেদের সার্ভিস ধরে রাখেন। নবম গেমে ভেকিচের সার্ভিস ভাঙেন পাওলিনি। পরের গেমে সার্ভিস ধরে রেখে ৬-৪ গেমে জেতেন দ্বিতীয় সেট। তৃতীয় সেটেও টান টান লড়াই। প্রতিটি পয়েন্টের জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপাচ্ছিলেন দুই প্রতিযোগী।
তৃতীয় সেটে একটা সময় পরে ক্লান্ত দেখাচ্ছিল ভেকিচকে। ফলে দু’বার ম্যাচ পয়েন্টে পান পাওলিনি। ক্লান্ত হলেও লড়াই ছাড়েননি ক্রোয়েশিয়ার অবাছাই খেলোয়াড়। বার বার ফিরে আসেন তিনি। টাইব্রেকারেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছিল। এই পাওলিনি ম্যাচ পয়েন্ট পাচ্ছিলেন, তো পরের মুহূর্তেই ভেকিচ খেলায় ফিরছিলেন। শেষ পর্যন্ত ৮-৯ পিছিয়ে থাকার সময় ভেকিচের একটি শট লাইনের বাইরে পড়ে। জিতে যান পাওলিনি। সেন্টার কোর্টের দর্শকেরা উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানান দুই খেলোয়াড়কে।
অপর সেমিফাইনালে শুরুটা ভাল করেছিলেন রিবাকিনা। প্রথম সেটে এগিয়ে যান তিনি। ক্রেচিকোভা কিছুটা চাপে ছিলেন। রিবাকিনা আগেও এই পরিস্থিতিতে খেলেছেন। কিন্তু ক্রেচিকোভার কাছে পরিস্থিতি নতুন হওয়ায় চাপ সামলাতে সমস্যা হচ্ছিল তাঁর। দুই প্রতিযোগীই নিজেদের সার্ভিস ধরে রাখতে সমস্যায় পড়ছিলেন। তবে রিবাকিনা প্রতিপক্ষের সার্ভিস বেশি ভাঙেন। ফলে ৬-৩ গেমে প্রথম সেট জেতেন তিনি।
দ্বিতীয় সেটে ফেরেন ক্রেচিকোভা। শুরুতেই রিবাকিনার সার্ভিস ভেঙে দেন তিনি। নিজের সার্ভিস ধরে রাখেন। কোর্টের এক দিকে সূর্যের আলো খুব বেশি পড়ায় মাঝে মাঝে রিবাকিনার সমস্যা হচ্ছিল। ৩-৫ পিছিয়ে থাকা অবস্থায় সেট বাঁচানোর খুব চেষ্টা করেন রিবাকিনা। কিন্তু পারেননি। ৬-৩ গেমে দ্বিতীয় সেট জিতে সমতা ফেরান ক্রেচিকোভা। খেলা গড়ায় তৃতীয় সেটে।
নির্ণায়ক সেটে প্রথম ছয় গেমে দুই প্রতিযোগীই নিজেদের সার্ভিস ধরে রাখেন। সপ্তম গেমে ভুল করে বসেন রিবাকিনা। সেই ভুল কাজে লাগান ক্রেচিকোভা। রিবাকিনার সার্ভিস ভেঙে দেন তিনি। এক বার পিছিয়ে পড়ার পরে অনেক চেষ্টা করেও ফিরতে পারেননি রিবাকিনা। নিজের সার্ভিস ধরে রেখে ৬-৪ গেমে তৃতীয় সেট জিতে ম্যাচ জিতে যান ক্রেচিকোভা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy