মুখোমুখি: ফাইনালে উঠে পাওলিনি ও (ডান দিকে) ক্রেচিকোভা। ছবি: রয়টার্স।
উইম্বলডনে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে মেয়েদের সিঙ্গলসের ফাইনালে উঠলেন জাসমিন পাওলিনি। বৃহস্পতিবার ২ ঘণ্টা ৫১ মিনিটের উইম্বলডনের ইতিহাসে দীর্ঘতম শেষ চারের লড়াইয়ে তিনি হারান ক্রোয়েশিয়ার ডোনা ভেকিচকে। ফল ২-৬, ৬-৪, ৭-৬ (৮)। ইটালির প্রথম মহিলা হিসেবে সিঙ্গলসের ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়লেন পাওলিনি।
২০১৬ সালে কিংবদন্তি সেরিনা উইলিয়ামসের পরে একই মরসুমে ফরাসি ওপেন ও উইম্বলডনের ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব দেখালেন ২৮ বছর বয়সি তারকা। যিনি এ মরসুমের আগে উইম্বলডনে একটিও ম্যাচ জেতেননি। খেলোয়াড় জীবনের বেশির ভাগ সময়টাই বিশ্ব র্যাঙ্কিং ৫০-এর আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। কিন্তু এ বার তিনি সপ্তম বাছাই হিসেবে ঘাসের কোর্টের গ্র্যান্ড স্ল্যামে নেমে শুরু থেকেই ভয়ডরহীন টেনিস খেলে গিয়েছেন। ছয় ম্যাচে মাত্র দুটি সেট হারিয়েছেন। এর আগে উইম্বলডনের দীর্ঘতম সিঙ্গলস সেমিফাইনাল ছিল ২০০৯ সালে সেরিনা বনাম এলেনা দিমেনতিয়েভার। ২ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট চলেছিল সেই ম্যাচ। সে বার তিন সেটে জিতেছিলেন সেরিনা।
‘‘এই ম্যাচটা জীবনে কোনও দিন ভুলতে পারব না। অবিশ্বাস্য টেনিস খেলেছে ও। কোর্টের সর্বত্র উইনার মেরে গিয়েছে,’’ ম্যাচের পরে কোর্টে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেন ইটালির পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির তারকা। ‘‘আমি শুধু ভেবে যাচ্ছিলাম প্রতিটা পয়েন্টে কী ভাবে লড়াইটা এগিয়ে নিয়ে যাব। আর এর চেয়ে ভাল লড়াইয়ের জায়গা আর কী হতে পারে,’’ বলেছেন তিনি। সেরিনার মতো পরপর দুটো গ্র্যান্ড স্ল্যামে তাঁর ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, ‘‘আমার মনে হয় গত কয়েক মাস অভাবনীয় ভাবে কাটছে। তবে এ সব কিছু মাথায় না রেখে আমি এখন শুধু সামনের দিকে তাকাচ্ছি। কোর্টে কী করতে হবে সেটাই ভাবি, আর যাই হচ্ছে সেটা দারুণ ভাবে উপভোগ করছি।’’
একটা সময় তিনি স্বপ্ন দেখতেন উইম্বলডনে এ ভাবেই দাপট দেখানোর। সেই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার অনুভূতি কেমন? পাওলিনি বলেন, ‘‘টেনিস আমার জীবন, স্বপ্ন। যখন ছোট ছিলাম, তখন থেকেই উইম্বলডনের ফাইনাল দেখছি। এ বার ফাইনালে ওঠার অনুভূতিটা উপভোগ করছি।’’
ফাইনালে তাঁর সামনে চেক প্রজাতন্ত্রের বার্বোরা ক্রেচিকোভা। গত বছর মার্কেতা ভন্দ্রৌসোভার পরে আর এক চেক প্রজাতন্ত্রের তারকা ফাইনালে উঠলেন। ৩১তম বাছাই ক্রেচিকোভা পিছিয়ে গিয়েও হারান চতুর্থ বাছাই ও প্রাক্তন উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন এলেনা রেবাকিনাকে। ফল ৩-৬, ৬-৩, ৬-৪।
ক্রেচিকোভা ২০২১ সালে ফরাসি ওপেন জিতলেও এর আগে কখনও চতুর্থ রাউন্ডের বেশি এগোতে পারেননি উইম্বলডনে। যদিও ডাবলসে তিনি দু’বার উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। এ দিন প্রথম বার সিঙ্গলসের ফাইনালে উঠে আবেগরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি। ‘‘প্রথম সেটে পিছিয়ে পড়ার পরে প্রতিটা পয়েন্টে লড়াই করে যাওয়ার কথা বলছিলাম নিজেকে। সেটাই করেছি,’’ বলেন ক্রেচিকোভা। তাঁর মেন্টর ও প্রাক্তন উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন প্রয়াত ইয়ানা নভোৎনার কথাও বলেন তিনি। ‘‘আমি এখানে ডাবলসে চ্যাম্পিয়ন হলেও কখনও ভাবিনি সিঙ্গলসে ফাইনালে উঠব। ১৯৯৮ সালে ইয়ানা উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। আমাকে যখন ও নিজের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা বলত, আমিও স্বপ্ন দেখতাম। আজ আমি ফাইনালে। ভাবতেই পারছি না,’’ বলতে গিয়ে চোখ ছলছল করে ওঠে ক্রেচিকোভার।
ফাইনালে তাঁর প্রতিপক্ষ পাওলিনিকে নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেছেন, ‘‘দারুণ লড়াই করতে পারে ও। আমিও তাই। আমরা দু’জনেই এখন ভাল টেনিস খেলছি। আশা করি দারুণ একটা ফাইনাল উপহার দিতে পারব।’’ শনিবার কার স্বপ্ন পূরণ হয়, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy