মহড়া: গোয়ায় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে এটিকে-মোহনবাগান। আক্রমণে প্রধান ভরসা রয় কৃষ্ণ (২১ নম্বর)। টুইটার
করোনা অতিমারি, মনের মধ্যে বাড়তে থাকা আতঙ্ক, দেশ জুড়ে চলা লকডাউন, স্তব্ধ হয়ে পড়া জনজীবন। প্রায় আট মাস ধরে চলা অনিশ্চয়তা আর উদ্বেগের বাতাবরণে ক্রিকেটের আইপিএল হয়েছে মরুভূমিমুখী। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে সফল টি-টোয়েন্টি মহাযজ্ঞের পরে ভারতীয় ফুটবল ফিরছে আজ, শুক্রবার, গোয়ায় আইএসএলের হাত ধরে।
মরুভূমি থেকে সমুদ্রসৈকত। ক্রিকেট থেকে ফুটবল। সেই এক দৈনন্দিন পরীক্ষা। সেই জৈব সুরক্ষা বলয়, এসওপি হাতে নিয়ে ঘোরা আর সুরক্ষা বিধি লঙ্ঘন না করার শপথ। এ বারের আইএসএল মানে নতুন রূপের আইএসএল। যেখানে কলকাতার দুই প্রধান প্রথম বার যুক্ত হয়েছে। যদিও তা সম্ভব হয়েছে অন্য ক্লাব বা লগ্নিকারীর সঙ্গে সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে। মোহনবাগান গাঁটছড়া বেঁধেছে এটিকের সঙ্গে। তারা এখন এটিকে-মোহনবাগান। শ্রী সিমেন্টকে লগ্নিকারী হিসেবে পেয়ে একেবারে শেষ মুহূর্তে আইএসএলে ঢুকেছে ইস্টবেঙ্গল। তারা এখন এসসি ইস্টবেঙ্গল। তবে দু’দলের লগ্নিকারীরাই ঐতিহ্যের সেই জার্সির রং ধরে রেখেছে, তাই সমর্থকদের আবেগ জড়িত না হয়ে উপায় কোথায়!
আজ, বোধনেই নামছে এটিকে-মোহনবাগান। যেখানে দুই চাণক্যের দ্বৈরথ ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। দু’জনেই স্পেনীয়। প্রথম জন এটিকে কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস কলকাতার দলে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েই আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন রয় কৃষ্ণ, প্রীতম কোটালদের। অপর স্পেনীয় কোচ কিবু ভিকুনা মোহনবাগানকে গত বার চ্যাম্পিয়ন করেন আই লিগে।
দ্বৈরথের চব্বিশ ঘণ্টা আগে কিবু বলে ফেললেন, ‘‘মোহনবাগান সদস্য, সমর্থকেদের মধ্যে অনেকেই আমার বন্ধু। গত মরসুম খুব ভাল কাটিয়েছি ওখানে।’’ পরক্ষণেই শক্ত চোয়াল, ‘‘তবে এই মুহূর্তে আমি কেরল ব্লাস্টার্স এবং শুক্রবারের ম্যাচ নিয়েই ভাবছি।’’
হাবাস আবেগের ধার ধারেন না। চিরাচরিত শীতল স্বরেই সতর্কবার্তা শুনিয়ে রাখলেন, ‘‘গত মরসুমটা কিবুর দুর্দান্ত গিয়েছে মোহনবাগান কোচ হিসেবে। কিন্তু ওঁকে মনে রাখতে হবে, আইএসএল অন্য প্রতিযোগিতা। আমি সব কোচকেই শ্রদ্ধা করি। কিবুকেও। কিন্তু মাঠে ওকে হারিয়ে তিন পয়েন্ট পেতে চাই।’’ কোনও প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলেই নেমে পড়ছে মোহনবাগান। হাবাস স্বীকার করেছেন, কম প্রস্তুতি নিয়েই নামতে হচ্ছে। তবে অজুহাত হিসেবে দেখাতে চান না।
কেরলের দলটি দু’বারই এটিকে-র কাছে হেরে রানার্স হয়েছে আইএসএলে। তবে এ বারের দলটিতে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। টটেনহ্যাম হটস্পার অ্যাকাডেমি ও সেল্টিকের হয়ে খেলা গ্যারি হুপার তুরুপের তাস। কিবু ভিকুনার বড় ভরসা অস্ট্রেলিয়ার ‘এ’ লিগে ওয়েলিংটন ফিনিক্সের হয়ে খেলে আসা এই স্ট্রাইকার। যে ক্লাবের প্রাক্তনী হাবাসের জোড়া গোলমেশিন রয় কৃষ্ণ এবং ডেভিড উইলিয়ামসও। এ বারের লিগে অস্ট্রেলিয়ায় খেলে আসা ফুটবলারের ভিড় নিয়ে প্রসঙ্গ উঠলেই এটিকে-মোহনবাগান কোচ টিপ্পনী কাটছেন, ‘‘আন্তোনিয়ো হাবাসই তো প্রথম এই ধারা দেখিয়েছে। আর এখন তা অনুসরণ করছে সকলে।’’ কেরল ব্লাস্টার্স দলে রয়েছেন, লা লিগার দল দেপোর্তিভো লা করুনার প্রাক্তন মিডফিল্ডার ভিসেন্তে গোমেস, আর্জেন্টিনা থেকে আসা আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার ফাকুন্দো পেরেরা, অস্ট্রেলীয় ফরোয়ার্ড জর্ডান মারে। রক্ষণে জিম্বাবোয়ের কোস্তা নামোইনেসু এবং বারকিনা ফাসোর ফুটবলার বাকাহি কোনে প্রাচীর তুলে দাঁড়াতে পারেন রয় কৃষ্ণ, এদু গার্সিয়াদের সামনে।
এটিকে-মোহনবাগান রক্ষণে সন্দেশ ঝিঙ্ঘন চোট সারিয়ে দীর্ঘ দিন পরে খেলতে নামছেন প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে। আর প্রথমেই প্রতিপক্ষ তার প্রাক্তন আইএসএল দল। হাবাসের রক্ষণকে দেশের সেরা বলা হচ্ছে। গত বারও রক্ষণ সামলানোর দিক থেকে এটিকে ছিল লিগের দ্বিতীয় সেরা। হাবাস আত্মবিশ্বাসী, কেরলের হুপার-মারে-সামাদের ত্রিভুজ আক্রমণ রুখে দিতে পারবেন তিরি-প্রীতম-সন্দেশরা। পাশাপাশি, আক্রমণে কৃষ্ণ, উইলিয়ামসের সঙ্গে সুসাইরাজের গতিতেও কেরল রক্ষণে তুফান তুলতে চান তিনি। বলছেন, ‘‘প্রথম ম্যাচে জেতাটা জরুরি। সমর্থকেরা তো রোজ সমর্থন করে একটা জিনিসই চায়। তিন পয়েন্ট।’’
ডার্বি? হাবাসের দ্রুত জবাব, ‘‘আপাতত কেরল ব্লাস্টার্স নিয়ে ভাবছি। ডার্বি নিয়ে পরে ভাবা যাবে!’’ ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজার অপেক্ষায় কলকাতা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy