উৎসব: গোলদাতা কৃষ্ণকে নিয়ে উল্লাস সতীর্থদের। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
এটিকে ৫ • হায়দরাবাদ ০
ফিরে এসেছে সেই কালো প্যান্ট, সাদা টি-শার্ট। যা আইএসএল শুরুর বছরে হয়ে উঠেছিল কলকাতা ফুটবলের অন্যতম ‘ব্র্যান্ড’।
আন্তোনিয়ো লোপেজ় হাবাসের চার বছর আগের সেই রিজার্ভ বেঞ্চের সামনে ‘বাঘ’-এর মতো পায়চারিও ফিরেছে যুবভারতীতে।
প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন করা কোচের ছোঁয়ায় ঝিমিয়ে পড়া কলকাতা হঠাৎ-ই চাঙ্গা। অনেকদিন পরে লাল-সাদা জার্সি আগুন ঝরাচ্ছে। পাসের বৈচিত্র, আচমকা ডাউন দ্য মিডল রানের ঝলকে অন্যরকম দেখাচ্ছিল হাবাসের দলকে। ভবিষ্যতে কী হবে তা বলা কঠিন, তবে এ দিনের এটিকে যে মসৃণভাবে হায়দরাবাদকে নাস্তানাবুদ করল তা বহুদিন দেখেননি এটিকে সমর্থকরা। গত পাঁচ বছরে কখনও পাঁচ গোলে জেতেনি কলকাতা। যদিও স্পেনীয় কোচ বলছেন, ‘‘পাঁচ গোল বড় ব্যাপার নয়, দল প্রথম ম্যাচের ছন্দই ধরে রেখেছে। এতেই খুশি। এই গতি ধরে রাখতে হবে।’’
নিম্নচাপের অকাল বৃষ্টিতে দীপবলির রোশনাইয়ে যখন ভাটা, তখন শুক্রবার রাতে বিরতির আগেই যুবভারতীতে ছাব্বিশ হাজার সমর্থক উৎসবে মাতলেন। অস্ট্রেলিয়া লিগের দাপুটে জুটির যুগলবন্দিতে গোলের রোশনাই। রয় কৃষ্ণ আর ডেভিড উইলিয়ামস। গত বছর অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ লিগের দল ওয়েলিংটন ফিনিক্সের দুই স্ট্রাইকার বিরতির আগে তিন গোল করলেন। ম্যাচ শেষের দু’মিনিট আগে এবং সংযুক্ত সময়ে জোড়া গোল স্পেনীয় এদু গার্সিয়ার।
হাবাস বরাবর রক্ষণাত্মক মোড়কে দলকে পাল্টা আক্রমণের তত্ত্বে বিশ্বাসী। মাদ্রিদের আতলেতিকো থেকে যখন এসেছিলেন এরকম মনোভাব নিয়েই মাঠে নামতেন তিনি। ফলে বেশিরভাগ ম্যাচ ড্র করত তখনকার আতলেতিকো দে কলকাতা। মাদ্রিদের ক্লাবের সঙ্গে কলকাতার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর নাম পাল্টেছে। দলের নাম এটিকে। হাবাসও বদলে ফেলেছেন রণনীতি। বদলের অন্যতম কারণ রয় ও উইলিয়ামসের মতো দুই স্ট্রাইকারকে এক সঙ্গে পেয়ে যাওয়া। হাভিয়ার হার্নান্দেজের মতো অ্যাটাকিং মিডিয়ো রয়েছেন। সব চেয়ে বড় কথা, সোসাইরাজের মতো একজন রয়েছেন, যিনি আদতে উইং-মিডিয়ো হয়েও একটু নীচু থেকে খেলে ভাঙতে পারেন প্রতিপক্ষ রক্ষণকে। হাবাসের সহকারী সঞ্জয় সেন তাঁকে নিয়ে আসেন এটিকেতে। হাবাসের সব অস্ত্রই এ দিন ঝলসে উঠল যুবভারতীতে।
উদ্বোধনী ম্যাচে কোচিতে প্রচুর গোল নষ্ট করে হেরেছিল এটিকে। এদিন শুরু থেকে ভয়ঙ্কর এটিকে। বিরতির আগে তিন গোল। হতে পারত আরও তিনটি। জোড়া গোল করা উইলিয়ামস হ্যাটট্রিকও করতে পারতেন। ম্যাচের পর বললেন, ‘‘হ্যাটট্রিক হল না বলে আফসোস হচ্ছে। দল জেতায় খুশি।’’
হায়দরবাদের দলটি খারাপ নয়। আদিল খান-সহ তিন ভারতীয় ফুটবলার দলে। সঙ্গে মার্সেলিনহোর মতো বিদেশি। তা সত্ত্বেও পল ব্রাউনের দল দাঁড়াতেই পারল না। এটিকে গোলকিপার অরিন্দম ভট্টাচার্যকে একবারও বিপদে। বিরতির পর একটু নড়াচড়া করেছিল মহম্মদ হাবিবের শহরের দল। কিন্তু মাঝমাঠে প্রণয় হালদারকে নামিয়ে রক্ষণ জমাট করে দেন হাবাস।
হাবাসের হাত ধরে ফের ট্রফি কলকাতায় আসবে কি না সেটা সময় বলবে। তবে আজ প্রবীর দাসরা যা খেলেছেন, তা বজায় রাখতে পারলে স্বপ্ন দেখতেই পারেন এটিকে-প্রেমীরা।
এটিকে: অরিন্দম ভট্টাচার্য, প্রীতম কোটাল, আগুস্টিন গার্সিয়া, আনাস এথানোডিকা, সোসাইরাজ, প্রবীর দাস, কার্ল জেরার্ড, ফ্রান্সিসকো জেভিয়ার হার্নান্ডেজ (এদু গার্সিয়া), জয়েস রানে (প্রণয় হালদার), ডেভিড উইলিয়ামস, রয় কৃষ্ণ (কোমল থাটাল)।
হায়দরাবাদ এফসি: কমলজিৎ সিংহ, সুনীল পওয়ার, রাফেল গোমেজ (মার্কো স্টোভিক), ম্যাথু কিনগ্যালন, গিরিশ সিংহ, আশিস রাই (লালদানমুইয়া রালতে), আদিল খান, নিখিল পুজারি, রবিন সিংহ, মার্সেলিনহো পেরিরা (গানি আহমেদ নিগম), গর্ডন বার্নেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy