Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মুম্বইকে হারাতে হাবাসের অস্ত্র জয়েশ

এই মরসুমে আইএসএলের প্রথম পর্বে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে এগিয়ে গিয়েও হারের আতঙ্ক থাবা বসিয়েছিল এটিকে শিবিরে। শেষ মুহূর্তে গোল করে ত্রাতা হয়ে ওঠেন কৃষ্ণ।

পরীক্ষা: মুম্বই সিটিকে হারিয়েই কলকাতায় ফিরতে চান হাবাস। নিজস্ব চিত্র

পরীক্ষা: মুম্বই সিটিকে হারিয়েই কলকাতায় ফিরতে চান হাবাস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৪৫
Share: Save:

বড়দিনে বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে দুরন্ত জয়ের পরেই ছুটি কাটাতে এটিকে কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস গিয়েছিলেন মায়ানমারে। রয় কৃষ্ণ ছিলেন চেন্নাইয়ে। ডেভিড উইলিয়ামস সপরিবার দুবাই গিয়েছিলেন। তবে ছুটির মধ্যেও এটিকে কোচ নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন মুম্বই সিটি এফসিকে হারানোর রণকৌশল তৈরি করতে।

এই মরসুমে আইএসএলের প্রথম পর্বে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে এগিয়ে গিয়েও হারের আতঙ্ক থাবা বসিয়েছিল এটিকে শিবিরে। শেষ মুহূর্তে গোল করে ত্রাতা হয়ে ওঠেন কৃষ্ণ। শনিবার দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে তাদের ঘরের মাঠে খেলতে হবে। তাই যেন কিছুটা উদ্বিগ্ন হাবাস। বৃহস্পতিবার সকালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে মুম্বইকে হারানোর প্রস্তুতি সেরেছেন স্পেনীয় কোচ। বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে হাবাস বললেন, ‘‘মুম্বই ভয়ঙ্কর প্রতিপক্ষ। ওদের আক্রমণভাগ দুর্দান্ত। আমাদের রক্ষণকে যে কোনও মুহূর্তে সমস্যায় ফেলতে পারে। রক্ষণও একই রকম শক্তিশালী। ম্যাচটা একেবারেই সহজ হবে না।’’ তিনি আরও বললেন, ‘‘মুম্বইয়ের পাওলো মাচাদোকে দীর্ঘ দিন ধরেই চিনি। অসাধারণ ফুটবলার। ওর মতো ফুটবলারের জন্য খেলা আরও আকর্ষণীয় হয়।’’

তা হলে কি মুম্বই রওনা হওয়ার আগেই মানসিক ভাবে পিছিয়ে পড়েছে এটিকে? স্পেনীয় কোচ বললেন, ‘‘মুম্বই ম্যাচের জন্য আমরা তৈরি। ফুটবলারেরাও ছুটি কাটিয়ে তরতাজা। এই বিশ্রামটা ওদের জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল।’’ তবে রক্ষণ নিয়ে তিনি যে চিন্তিত, গোপন করেননি। বলছিলেন, ‘‘জন জনসন চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছে। কার্ল ম্যাকহিউকে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের আগে পাওয়া যাবে না। তবে জনসনের পরিবর্তে ভিক্তর মনখিলকে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, ও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে।’’

১০ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে আইএসএলে টেবলের শীর্ষে এই মুহূর্তে এফসি গোয়া। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এটিকের পয়েন্ট ১০ ম্যাচে ১৮। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে সুনীল ছেত্রীরা। চতুর্থ স্থানে থাকা মুম্বইয়ের ১০ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট। কিন্তু গোল পার্থক্যে চতুর্থ স্থানে নেমে গিয়েছে বলিউড তারকা রণবীর কপূরের দল। যদিও লিগ টেবলের অবস্থান নিয়ে একেবারেই ভাবতে চান না প্রথম আইএসএলে এটিকে-কে চ্যাম্পিয়ন করা কোচ। তাঁর লক্ষ্য মুম্বইকে স্বাভাবিক খেলা খেলতে না দেওয়া। এই রণনীতিতে হাবাসের অন্যতম ভরসা হতে চলেছেন এক মুম্বইকর। তিনি, জয়েশ রানে।

প্রতিশ্রুতিমান ভারতীয় এই উইঙ্গারকে দুই স্ট্রাইকারের পিছনে খেলাচ্ছেন হাবাস। আইএসএলের অন্যান্য দলের কোচেরা এই জায়গায় বিদেশি ফুটবলারদের উপরেই আস্থা রাখছেন। ব্যতিক্রম হাবাস। এটিকে কোচের ব্যাখ্যা, ‘‘সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে খেলার যোগ্যতা রয়েছে জয়েশের। গতি রয়েছে। বলের উপরে দারুণ নিয়ন্ত্রণ। আমার মতে দুই স্ট্রাইকারের পিছনে সেন্ট্রাল মিডফিল্ডই ওর সেরা জায়গা।’’ অভিভূত জয়েশ সাংবাদিক বৈঠকে হাবাসের পাশে বসেই বললেন, ‘‘কোচ আমাদের মানসিকতা সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছেন। ওঁর দেখানো পথেই আমরা চলছি। এই কারণেই এ বারের আইএসএলে এটিকে অন্যতম ভারসাম্যযুক্ত দল।’’

বছর তিনেক আগে আইজল এফসির আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল জয়েশের। তখন অবশ্য উইঙ্গার হিসেবেই খেলতেন। এটিকেতেও একই ভূমিকা ছিল তাঁর। কিন্তু এই মরসুমে হাবাস তাঁর জায়গা বদলে দিয়েছেন। নতুন ভূমিকা পালন করতে সমস্যা হয়নি শুরুর দিকে? জয়েশ বললেন, ‘‘না, উইংয়ে নিজের ইচ্ছে মতো অনেক কিছু করা যায়। কিন্তু এখন আমি যে জায়গায় খেলছি, তাতে দায়িত্ব অনেক বেশি।’’

জয়েশ উত্তেজিত ম্যাচ মুম্বইয়ে হওয়ায়। বললেন, ‘‘মুম্বইয়ের সান্তাক্রুজে আমি বড় হয়েছি। তাই এই ম্যাচটা নিয়ে আমি দারুণ উত্তেজিত।’’ এর পরেই এটিকে মিডফিল্ডার দাবি করলেন, ‘‘আমি এখন কলকাতার। তাই আমার লক্ষ্য যে কোনও মূল্যে তিন পয়েন্ট অর্জন করে মাঠ ছাড়া।’’

কোরোমিনাস বনাম সুনীল আজ: এটিকের বিরুদ্ধে হারের যন্ত্রণা ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া এফসি গোয়া। কিন্তু সুনীল ছেত্রীদের জয়ের পথে কাঁটা হয়ে উঠতে পারেন ফেরান কোরোমিনাস। সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে এই মুহূর্তে শীর্ষ স্থানে এটিকের রয় কৃষ্ণ। ৮ ম্যাচে ১০ গোল তাঁর। দ্বিতীয় স্থানেই কোরোমিনাস। ৭ ম্যাচে ৭ গোল করেছেন গোয়ার স্পেনীয় স্ট্রাইকার।

এই মরসুমে গোল করতে না পারার ব্যর্থতাই সব চেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে বেঙ্গালুরুকে। এখনও পর্যন্ত ১০ ম্যাচে ১১ গোল করেছে গত বারের চ্যাম্পিয়নেরা। এর মধ্যে সুনীল একাই করেছেন ৫টি। ঘরের মাঠে লিগ টেবলের শীর্ষে থাকা গোয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে হতাশ বেঙ্গালুরু কোচ কার্লেস কুদ্রাত বলেছেন, ‘‘মিকু এ বার নেই। আর এক স্ট্রাইকার মানুয়েল ওনউকে সাতটি ম্যাচে পাইনি। কিছু করার নেই। প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও শেষ চারে খেলা নিশ্চিত করার জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’ গোয়ার সহকারী কোচ জেসুস তাতো বলেছেন, ‘‘আইএসএলের সেরা দলের বিরুদ্ধে আমরা খেলব। চাপে থাকবে বেঙ্গালুরুই। কারণ, আমাদের চেয়ে পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে ওরা।’’

শুক্রবার আইএসএলে: বেঙ্গালুরু এফসি বনাম এফসি গোয়া (সন্ধে ৭.৩০, স্টার স্পোর্টস টু চ্যানেলে)।

অন্য বিষয়গুলি:

Football ATK Mumbai City FC ISL 2019-20
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy