মধ্যমণি: অধিনায়ক ধোনির দর্শনেই অনুপ্রাণিত তাঁর দল। ফাইল চিত্র।
২০০৮ থেকে চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু হয়েছে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির। তাঁকে চেন্নাইয়ের বাসিন্দা হিসেবেই দেখতে শুরু করেছেন সিএসকে সমর্থকেরা। ‘থালা’ নামকরণও হয় হলুদ জার্সিতে একের পর এক সাফল্য এনে দেওয়ার পরে। সমর্থকদের ভালবাসার টান ভাঙতে দেয়নি সিএসকে-মাহির বন্ধনকে। শুক্রবার পঞ্জাব কিংসকে হারানোর পরে সিএসকে কোচ স্টিভন ফ্লেমিং জানিয়ে দিলেন, ধোনি চেন্নাইয়ের হৃদস্পন্দন। দলে ধোনির প্রয়জনীয়তা কতটা তা প্রত্যেক পদক্ষেপে বুঝতে পারেন সিএসকে কোচ।
কে এল রাহুলদের ছয় উইকেটে হারানোর পরে সিএসকে কোচ ফ্লেমিং বলেছেন, “দুশো ম্যাচ খেলার পরেও ওর মধ্যে উন্নতি করার খিদে অপরিসীম। এই মনোভাব কিন্তু দল ও ক্রিকেটের প্রতি নিষ্ঠা ও ভালবাসার প্রতিফলন।” যোগ করেছেন, “ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ধোনি নিজেকেও গড়ে তুলেছে। ধোনির সঙ্গে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে কাজ করার মজাই আলাদা।”
চেন্নাই বিমানবন্দরে ধোনি নামলেই ভিড় জমে যায়। প্রিয় ‘থালা’-কে এক বার দেখার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন সমর্থকেরা। ফ্লেমিংয়ের তাই বলতে দ্বিধা নেই, “নিঃসন্দেহে ধোনিই চেন্নাই সুপার কিংসের হৃদস্পন্দন। শেষ চোদ্দো বছরে ওর পারফরম্যান্স নিয়েও প্রশ্ন তোলা সম্ভব নয়। এমনকি ওর নেতৃত্বও উদাহরণ হিসেবে থেকে যাবে। ধোনিকে যা-ই বলি, কম বলা হয়।” ধোনি নিজেও দু’শোতম ম্যাচ খেলে খুশি। তিনি বলেছেন, “২০০৮ সাল থেকে এই যাত্রা শুরু হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলেছি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে খেলতে হয়েছে। এ বার ভারতে আইপিএলও উপভোগ করছি। তবে কখনও আন্দাজ করতে পারিনি, মুম্বই আমাদের ঘরের মাঠ হতে পারে।”
ধোনির নেতৃত্বকে কেন উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা যায়, তার অন্যতম কারণ দেখা গিয়েছে পঞ্জাবের বিরুদ্ধেই। পঞ্জাবের শাহরুখ খানের পায়ে দীপক চাহারের ইনসুইং আছড়ে পড়ার পরে আবেদন করেন তরুণ পেসার। আম্পায়ার সেই আবেদন ফিরিয়ে দেওয়ায় ধোনিকে ডিআরএস (ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম) নেওয়ার অনুরোধ করেন চাহার। অধিনায়ক তাঁর অনুরোধ নাকচ করে দেন। ইঙ্গিত করে বুঝিয়ে দেন, বল স্টাম্পের উপর দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারত। রিপ্লেতে দেখা যায় সত্যি স্টাম্পের উপর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল বল। রিভিউ সম্পর্কে ধোনির এই সক্রিয়তার জন্যই ক্রিকেটমহলে ডিআরএস পদ্ধতিকে মজা করে বলা হয় ‘ধোনি রিভিউ সিস্টেম’।
ম্যাচ শেষে ধোনির কাছেও জানতে চাওয়া হয়, কেন তিনি রিভিউ নিতে বারণ করেছেন? ধোনির উত্তর, “দেখেই মনে হয়েছিল বল স্টাম্পের উপর দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে। তাই বারণ করেছি। তা ছাড়া ডিআরএস-এস দেওয়া হয়েছে সদ্ব্যবহার করার জন্য। অপব্যবহারের জন্য নয়। অহেতুক ঝুঁকি নেওয়ার তো কোনও অর্থ নেই। ম্যাচের শেষ ওভার অথবা বড় ব্যাটসম্যান হলে এ ধরনের ঝুঁকি নেওয়া যেতে পারে।”
অধিনায়ক উচ্ছ্বসিত দীপক চাহারের উন্নতিতে। ধোনি বলেছেন, “চাহার এমনই একজন বোলার, যে কোনও পরিবেশে অন্যদের চেয়ে বেশি সাহায্য পায়। দু’দিকেই সুইং করাতে পারে। শেষের দিকের ওভার করার মতোও তৈরি। তবে বিপক্ষকে শুরু থেকেই আক্রমণ করতে চাইলে প্রথম স্পেলেই চাহারের চার ওভার শেষ করে দেওয়া হয়। শেষের দিকে ব্র্যাভোও তো ভাল বল করে। তাই অসুবিধে হয় না।”
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে চার ওভারে ১৩ রান দিয়ে চার উইকেট নেওয়ায় চাহারের প্রশংসা করে গেলেন ফ্লেমিংও। তাঁর কথায়, “প্রথম ম্যাচে ব্যর্থতার পরে চাহার যে ভাবে ঘুরে দাঁডিয়েছে তা সত্যি প্রশংসার যোগ্য। উইকেট ও পরিবেশ থেকে কিছুটা সাহায্য পেলে দীপক ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। সুইং অনেকেই করাতে পারে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ রেখে সুইং করানো সহজ নয়। এত বছর ধরে নিয়ন্ত্রণ আনার পরিশ্রম করেছে চাহার। তার ফল পাচ্ছে এখন।”
ওপেনার ঋতুরাজ গায়কোয়াড় রান না পেলেও পাশে দাঁড়াচ্ছেন কোচ। ফ্লেমিংয়ের সাফ কথা, “আমরা দলে একজনকে নেওয়ার পরে তার পাশে থাকার চেষ্টা করি। ওর মধ্যে থেকে সেরাটা বার করে আনাই আমাদের কাজ। ঋতুরাজের উপরেও ভরসা রাখা হচ্ছে। ঠিক রান পাবে।”
চেন্নাইয়ের পরের ম্যাচ সোমবার। প্রতিপক্ষ রাজস্থান রয়্যালস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy