ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথদের নিয়ে উদ্বিগ্ন বিসিসিআই।
আইপিএল তো এ বারের মতো স্থগিত হয়ে গেল। কিন্তু প্রশ্ন হল আট দলের একাধিক বিদেশি ক্রিকেটার, প্রত্যেক দলে থাকা একাধিক বিদেশি প্রশিক্ষক ও সাপোর্ট স্টাফ, বিদেশি ধারাভাষ্যকার, বিদেশি আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারি এবং সর্বোপরি টেলিভিশন সম্প্রচারের সঙ্গে যুক্ত থাকা মানুষদের কীভাবে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে? কারণ দেশে ফেরার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলীয়দের সমস্যা অনেক বেশি।
এর জবাব খুঁজতে আনন্দবাজার ডিজিটাল আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ব্রিজেশ পটেল ও বিসিসিআই-এর কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। দুজন সাফ জানিয়ে দিলেন যে ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ, ক্রিস গেল, কাগিসো রাবাডা-রা একেবারে সুস্থ হয়ে নিজ নিজ দেশে ফিরতে পারবেন। তবে পুরো ব্যবস্থা করতে প্রায় এক সপ্তাহ সময় লাগবে।
এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে সমস্যায় রয়েছেন আইপিএল খেলতে আসা ১৪ জন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার, একাধিক প্রশিক্ষক, সাপোর্ট স্টাফ ও ব্রেট লি, মাইকেল স্লেটার, ম্যাথু হেডেনের মতো ধারাভাষ্যকাররা। করোনা আতঙ্কের জন্য আগামী ১৫ মে পর্যন্ত ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়ার যাওয়ার সব বিমান বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আবার সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন জারি করেছেন অদ্ভুত ফতোয়া। স্কট মরিসনের দাবি এই মুহূর্তে দেশে পা রাখলেই পাঁচ বছরের জেল কিংবা বিপুল আর্থিক জরিমানা হবে।
অস্ট্রেলিয়া সরকারের পুরো ব্যাপারটা জানেন ব্রিজেশ পটেল। তিনি টেলিফোনে বলেন, “এটা ঠিক যে অজি ক্রিকেটারদের সমস্যা বাকিদের থেকে অনেক বেশি। কিন্তু তাই বলে শুধু ওদের কথা ভাবতে গিয়ে তো অন্য দেশের ক্রিকেটারদের জলে ফেলে দিতে পারি না। আমরা প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। এর পাশাপাশি সবকটা দেশের সরকারের সঙ্গে কেন্দ্র সরকার ও বিসিসিআই যোগাযোগ রেখে চলেছে। এতগুলো বিদেশিদের ভিসা থেকে শুরু করে প্রতিটি দেশের নিয়ম মাফিক বিমানের ব্যবস্থা করতে তো কিছুদিন সময় লাগবেই। আশা করি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সবার দেশে ফেরার ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলতে পারব।” তিনি ফের যোগ করেন, “অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার ও বাকিদের দেশে ফেরানোর জন্য তাদের ক্রিকেট বোর্ড খুবই উদ্বিগ্ন। আর তাই সেই দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। যদি ১৫ মে-র পরে ওরা দেশের ফেরার অনুমতি পায় তাহলে সেটাই মানতে হবে। ততদিন পর্যন্ত অজি ক্রিকেটারদের দেখভালের দায়িত্ব তাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি নেবে।”
অইন মর্গ্যান, জস বাটলারদের তাঁদের দেশে পা রেখেই ১০ দিনের নিভৃতবাসে চলে যেতে হবে। সেই ১০ দিনের মধ্যে দুবার হবে কোভিড পরীক্ষা। সেই পরীক্ষার ফল নেগেটিভ হলে বহির্জগতে যেতে পারবেন মর্গ্যান, বাটলাররা। নিউজিল্যান্ডে পা রাখলে আবার ১৪ দিনের নিভৃতবাসে থাকা বাধ্যতামূলক। যদিও কেন উইলিয়ামসন, ট্রেন্ট বোল্টরা ভারত থেকে নিজেদের দেশ নয় বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে ইংল্যান্ড উড়ে যাবেন। বিরাট কোহলীর ভারতীয় দলের সঙ্গে একই বিমানে রানীর দেশে যাবে কিউয়িরা।
সেই বিমানে কি অজি ক্রিকেটারদের জায়গা হবে? কয়েক দিন আগে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল জানিয়েছিলেন বিসিসিআই যদি একই বিমানে তাঁদের চাপিয়ে দেয় তাহলে অজিদের কোনও আপত্তি থাকবে না। যদিও বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমাল এই তত্ব একেবারে উড়িয়ে দিলেন। বললেন, “সেই বিমানে শুধুমাত্র ভারতীয় দল ও নিউজিল্যান্ডের কয়েক জন ক্রিকেটার যাবেন। ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সেই বিমান ধরার কোনও সম্ভাবনা নেই। আশা করি অস্ট্রেলিয়া সরকার ১৫ মে-র পর দেশে ঢোকার অনুমতি দেবে। সেটা হলে এরপর ওয়ার্নার, স্মিথ, ম্যাক্সওয়েলরা বাকিদের সঙ্গে নিজেদের দেশে ফিরতে পারবে। তখন বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করে ওদের দেশে ফেরত পাঠাতে কোনও সমস্যা হবে না।”
জৈব বলয় ভেদ করে করোনা হানা দেওয়ার জন্য আইপিএল বন্ধ হলেও মাঠের বাইরে কিন্তু বিদেশি ক্রিকেটারদের এখনও লড়তে হচ্ছে। বাইরে কোভিড জাঁকিয়ে বসায় থাকতে হচ্ছে দিনের পর দিন নিভৃতবাসে। এর মধ্যে ওয়ার্নার, স্মিথ, ম্যাক্সওয়েল, ব্রেট লি-দের লড়াই আরও কঠিন। কারণ তাঁদের লড়াই তো নিজেদের দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy