এত দিন পরে হলেও নেতা হিসেবে ক্ষুরধার বুদ্ধি প্রয়োগ করে ম্যাচ জয়ের দক্ষতায় মরচে পড়েনি ধোনির। ছবি: পিটিআই।
মারণ ভাইরাসের সংক্রমণে অস্থির, দোলাচল অবস্থা কাটিয়ে বহু প্রতীক্ষিত আইপিএল অবশেষে শুরু হল। আবুধাবির দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে আইপিএল ফেরার দিনে গত বছরের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে দেখতে মুখিয়েছিলাম একজনকেই। সে হল চেন্নাই সুপার কিংস অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।
গত বছর বিশ্বকাপের সেই সেমিফাইনালের ৪৩৭ দিন পরে শনিবার প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরল ধোনি। স্বাধীনতা দিবসের দিন ভারতীয় সময় সন্ধে সাতটা ২৯ মিনিটে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরে শনিবার সাতটা তিরিশ মিনিটে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরল ধোনি। মুখে দাঁড়ি। এত দিন পরে হলেও নেতা হিসেবে ক্ষুরধার বুদ্ধি প্রয়োগ করে ম্যাচ জয়ের দক্ষতায় মরচে পড়েনি ওর। ফিটনেসটাও ধরে রেখেছে।
টস জিতে মুম্বইকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল সিএসকে অধিনায়ক। ২০ ওভারে ১৬২-৯ করেছিল মুম্বই। জবাবে, চার বল বাকি থাকতে ১৬৬-৫ করে পাঁচ উইকেটে জিতে গত বছর ফাইনালে হারের মধুর প্রতিশোধ নিল ধোনির সিএসকে।
আরও পড়ুন: বোলিং ডোবাবে? আনন্দবাজার ডিজিটালের প্রশ্নে কী বললেন নাইট কোচ
আইপিএল স্কোর
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স - ১৬২-৯ (২০ ওভারে)
চেন্নাই সুপার কিংস - ১৬৬-৫ (১৯.২ ওভারে)
আইপিএলে গত এক যুগে চেন্নাই সুপার কিংস এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের দ্বৈরথ এমন জায়গায় পৌঁছিয়েছে যে এই ম্যাচটাকে এখন সংবাদমাধ্যম আইপিএলের ‘এল ক্লাসিকো’ বলতে শুরু করেছে। দু’দলের শেষ পাঁচ সাক্ষাতের প্রতিটিতেই জিতেছিল রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। অন্য দিকে, আমিরশাহিতে এই নিয়ে ছ’বার সাক্ষাতে পাঁচ বারই মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে জিতল সিএসকে।
আমার মতে, এই সব পরিসংখ্যানকে ছাপিয়ে গিয়েছে দু’জন। প্রথম জন অবশ্যই অধিনায়ক ধোনি। দ্বিতীয় জন এ দিন ৪৪ বলে ৫৮ রানে অপরাজিত থেকে চেন্নাইকে ম্যাচ জেতানো ফ্যাফ ডুপ্লেসি।
আরও পড়ুন: এ বার কি আইপিএলে চার-ছয় কমবে? তেমনই প্রশ্ন উঠছে তিন স্টেডিয়াম দেখে
সিএসকের হয়ে প্রথম বল শুরু করেছিল দীপক চাহার। প্রথম বল খাটো লেংথের। কিন্তু রোহিত কভার অঞ্চল দিয়ে সেই বল মাঠের বাইরে পাঠিয়ে শুরু করেছিল নিজের মেজাজেই। ঠিক এখানেই ফের দেখা গেল অধিনায়ক ধোনিকে। পেসারদের বিরুদ্ধে রোহিত ও কুইন্টন ডি’কক প্রথম চার ওভারেই বিনা উইকেটে ৪৫ রান দেওয়ার পরে ধোনি বল করতে নিয়ে এল লেগস্পিনার পীযূষ চাওলাকে। যাকে এ দিন সিএসকে অধিনায়ক খেলিয়ে দিল ইমরান তাহিরকে বসিয়ে। চাওলার লেগস্পিন ঘোরে না। সোজা যায়। বরং গুগলিটা ভিতরে ঢোকে। নিজের সীমাবদ্ধতা বুঝে তাই ও বেশি উপরে বা খাটো লেংথের বল করতে যায় না। বরং উইকেট টু উইকেট বল করে। এতে ওকে সহজে মারা যায় না। সেই অস্ত্র কাজে লাগিয়েই ও আউট করল রোহিতকে। ধোনি কিন্তু তার পরে চাওলাকে টানা বল করিয়ে যায়নি। বরং বোলিং বৈচিত্র কাজে লাগিয়ে রবীন্দ্র জাডেজা, লুনগি এনগিডিদের ব্যবহার করল বুদ্ধি করে। শেষ ৩২ বলে ৩৮ রান করল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। শেষ ৬ ওভারে পড়ল ওদের ছয় উইকেট। সবই ধোনির বুদ্ধি করে বোলিং ব্যবহার করা।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সৌরভ তিওয়ারি ভাল ব্যাট করল। এই সময়েই ফ্যাফ ডুপ্লেসি লং অনে প্রান্ত সীমার ধারে দাঁড়িয়ে দুরন্ত দুই ক্যাচ ধরে প্যাভিলিয়নে পাঠায় সৌরভ এবং হার্দিক পাণ্ড্যকে। এখানেও সেই ধোনির নেতৃত্ব। সৌরভেরা লং অন অঞ্চল দিয়ে বল মাঠের বাইরে পাঠিয়ে স্কোরবোর্ডে দ্রুত রান যোগ করবে, বুঝতে পেরেই ১৫ ওভারে জাডেজা বল করার সময়ে ডুপ্লেসিকে কভার অঞ্চল থেকে সরিয়ে লং অঞ্চলে ডুপ্লেসিকে পাঠিয়েছিল ধোনিই। এর পরেই লড়াই শেষ মুম্বইয়ের।
চেন্নাই ইনিংসে শেন ওয়াটসন ও মুরলী বিজয় ভাল শুরু করতে পারেনি। ওয়াটসন বোঝাল যে এখন নিজের ছন্দের ধারেকাছে নেই। কিন্তু মুরলী বিজয় কেন বলা সত্বেও রিভিউ নিল না তা বুঝলাম না। বরং আমার ভাল লাগল অম্বাতি রায়ডুর খেলা। ও এদিন বুমরাকে ছন্দ পেতে দেয়নি। এ বারের আইপিএলের প্রথম অর্ধশতরান করে গেল। ব্যাটিং অর্ডারও চমৎকার সাজিয়েছে ধোনি। তিনে ডুপ্লেসি। চারে রায়ডু। এতে ব্যাটিং গভীরতা বেড়েছে। নিজে আগে না এসে পাঠিয়েছিল স্যাম কারেনকে। ওর ছ’ বলে ১৮ রান ম্যাচ তুলে দেয় চেন্নাইয়ের হাতে।
অধিনায়ক ধোনি একই আছে। এ বার বাকি ম্যাচে ব্যাটসম্যান ধোনিকে দেখার পালা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy