উদয়: বিদায় নিলেও সিএসকের আবিষ্কার ঋতুরাজ। ফাইল চিত্র
সংযুক্ত আরব আমিরশাহি পৌঁছনোর পরের দিনই সারা শরীরে ব্যথা অনুভব করতে শুরু করেছিলেন তিনি। করোনা পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত। ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের আইপিএল স্বপ্ন শুরু হওয়ার আগেই শেষ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল।
মরসুম শেষে তাঁর নামের পাশেই তিনটি ম্যাচ জেতানো হাফসেঞ্চুরি। রয়েছে দু’টি ম্যাচ সেরার পুরস্কারও। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার সুবাদে তাঁর অধিনায়ক কিন্তু জানতেন, চলার পথে ঝড়-ঝাপ্টা আসেই। মন শক্ত করে বেরিয়ে আসতে হয়। করোনায় যখন নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হচ্ছে, তখন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিই শক্তি দেন ঋতুরাজকে। চেন্নাই সুপার কিংস অধিনায়ক ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে তাঁকে বলেন, ‘‘১৪ দিনের ব্যাপার। দেখতে দেখতে কেটে যাবে। দেখবে দ্বিগুণ শক্তিশালী হয়ে তুমি ফিরবে।’’
ধোনির সেই বার্তা উদ্বুদ্ধ করেছিল ঋতুরাজকে। করোনা থেকে ফেরার কয়েক দিনের মধ্যেই ২৩ বছর বয়সি ব্যাটসম্যানকে সুযোগ দেয় সিএসকে। প্রথম তিন ম্যাচে রান ছিল ০, ৫, ০। ব্যর্থ হয়ে দল থেকে বাদ পড়েন। তবুও হাল ছাড়েননি ঋতুরাজ। আইপিএল অভিযান শেষ করে দেশে ফিরে আনন্দবাজারকে বৃহস্পতিবার ঋতুরাজ বললেন, ‘‘প্রথম দিকে সুযোগ পেয়ে খুবই উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু ম্যাচের জন্য একশো শতাংশ ফিট ছিলাম না। ক্লান্তি থেকে গিয়েছিল। মাহি ভাই জানতে চেয়েছিল, কোথায় সমস্যা হচ্ছে। আমি পরিষ্কার বলে দিই, মিডল অর্ডারে কখনও ব্যাট করিনি। উপরের দিকে ব্যাট করতে চাই।’’ যোগ করেন, ‘‘সঠিক সুযোগের অপেক্ষা করতে বলেছিল মাহি ভাই। জানতে চেয়েছিল, কে আমার অনুপ্রেরণা? তখন বলেছিলাম, বিরাট কোহালির মতো ধারাবাহিক হতে চাই। তার পরের দিন থেকেই ওয়াটসন ও ফ্যাফ (ডুপ্লেসি) ট্রেনিংয়ে আমাকে আলাদা সময় দিতে থাকে। সমস্যা হলে সাহায্য করছিল ওরা।’’ ওপেন করতে শুরু করার পরেই পাল্টে যায় ঋতুরাজের ফর্ম।
বাবা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থাকায় ছোটবেলায় তিনি শিখেছেন, হারার আগে হারতে নেই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পঞ্চাশের উপর গড় থাকা ঋতুরাজ শপথ নেন, আইপিএল যুদ্ধে হারবেন না। শেষ তিন ম্যাচে তিনিই হয়ে ওঠেন চেন্নাই ব্যাটিংয়ের মূল স্তম্ভ। আরসিবি-র বিরুদ্ধে অপরাজিত ৬৫। এর পর ৭২ রান করে নাইটদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান। অপরাজিত ৬২ রান করে ছিটকে দেন কিংস ইলেভেন পঞ্জাবকে। প্রত্যেকটি ইনিংসের পরে তাঁর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন ধোনি। ঋতুরাজের কথায়, ‘‘প্রথম হাফসেঞ্চুরি করার পরে ক্যাপ্টেন বলেছিল, পরের ম্যাচেও এ রকমই জ্বলে উঠতে হবে। আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই।’’
প্যাট কামিন্সকে মিড-অফ অঞ্চলের উপর দিয়ে মারা তাঁর ছয় দেখে ডুপ্লেসি বলে উঠেছিলেন, ‘‘জুনিয়র বিরাট’’। অগ্রজ সতীর্থের এই মন্তব্যে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন ঋতুরাজ। বলছিলেন, ‘‘আমি বিরাট কোহালির ভক্ত। ওর ধারাবাহিকতা, টেকনিক, রান তাড়া করার খিদে আমাকে অনুপ্রাণিত করে। তবে ওর সঙ্গে আমার তুলনা হোক, একেবারেই চাই না।’’
চেন্নাই শিবির সূত্রে খবর, পরের আইপিএলে ঋতুরাজকে রেখেই দল সাজানো হচ্ছে। তিনিই এ বারের আবিষ্কার। সেই খবর রয়েছে ঋতুরাজের কাছেও। যা শুনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ বার যে ভুলগুলো করেছি, তা আগামী বার হবে না। আইপিএলে কী ভঙ্গিতে ব্যাট করতে হয়, সেই জ্ঞানটুকু এসে গিয়েছে।’’ কথা শেষ করার আগে বলে উঠলেন, ‘‘একটাই প্রার্থনা থাকবে। মরসুমের শুরুতে যেন আবার করোনা আক্রান্ত না হই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy