এরকম ফাঁকা স্টেডিয়ামেই কি হবে এ বারের আইপিএল?
এ বার কি আইপিএলের বল গড়াবে? করোনাভাইরাসের জেরে তেমনই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিদেশমন্ত্রক আইপিএল না করার পরামর্শ দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডকে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে বোর্ডকে। এমন পরিস্থিতিতে আইপিএল হওয়া নিয়ে বাড়ছে অনিশ্চয়তা।
বিদেশমন্ত্রক অবশ্য পরামর্শই দিয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। বোর্ডকেই সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। তবে সরকার যে আইপিএলের আয়োজনে আগ্রহী নয়, সেই বার্তা এতেই স্পষ্ট ভাবে দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া ভারতীয় ক্রীড়ামন্ত্রকও নির্দেশে দিয়েছে যে খেলাধুলোর কোনও ইভেন্টে বেশি দর্শকের উপস্থিতি কাম্য নয় এই মুহূর্তে। ফলে, বিদেশমন্ত্রক ও ক্রীড়ামন্ত্রক, উভয়েই আইপিএল আয়োজনের বিরুদ্ধে সুর তুলেছে।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার আইপিএল-এর গভর্নিং কাউন্সিলের মিটিং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। সেখানেই সম্ভবত এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও সচিব জয় শাহ থাকবেন বৈঠকে। মুম্বইয়ে হতে চলা এই বৈঠকে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ব্রিজেশ পটেলও থাকবেন। আইপিএলের ভবিষ্যৎ সেখানেই নির্ধারিত হবে।
বিদেশমন্ত্রক আইপিএল আয়োজনের বিরুদ্ধে পরামর্শ দেওয়ার আগে বোর্ডে অবশ্য় অন্য ভাবনা ছিল। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের এক কর্তা জানিয়েছিলেন যে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে হতে পারে আইপিএল। করোনাভাইরাসের জেরে বিশ্বজুড়ে যা অবস্থা, তাতে গ্যালারি ভর্তি অবস্থায় খেলার ঝুঁকি নিতে চাইছিল না বোর্ড। কিন্তু পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: ক্রীড়া সচিবের মন্তব্যে আরও সংশয়ে আইপিএলের ভবিষ্যৎ
একদিকে বিদেশমন্ত্রকের পরামর্শ, অন্যদিকে ক্রীড়ামন্ত্রকের বার্তা, বিসিসিআইকে এখন সবটাই মাথায় রাখতে হচ্ছে। আর যদি শেষ পর্যন্ত হয়ও, তা হলেও তো অনেক দিক ভাবতে হবে। যে প্রশ্নগুলো উঠে আসছে তা হল, বিদেশি ক্রিকেটারদের কবে থেকে পাওয়া যাবে? ভারত সরকার জানিয়ে দিয়েছে যে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিদেশিদের ভিসা দেওয়া হবে না। কিন্তু তার পরই যে ভিসা দেওয়া হবে, এমন নিশ্চয়তা এই মুহূর্তে নেই। ফলে, ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলো কবে থেকে বিদেশিদের পাবে, তা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। প্রত্যেক দলই বিদেশিদের নিয়েছে পরিকল্পনা করে। এখন হঠাৎ বিদেশিদের ছাড়়া খেলতে হলে তা দলের ভারসাম্য নষ্ট করে দেবে। তা ছাড়া পরে বিদেশিদের সবাই নাও আসতে পারেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে প্রতিটা দলেরই রয়েছে ঠাসা সূচি। ফলে দেশের খেলা বাদ দিয়ে কোনও ক্রিকেটারের পক্ষেই আইপিএল খেলা সম্ভব নয়। বিদেশিদের কতগুলো ম্যাচের জন্য পাওয়া যাবে, তাও পরিষ্কার নয়।
মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপে আবার আইপিএল পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। না হলে ম্যাচের টিকিট বিক্রি বন্ধ রাখার দাবি তুলেছিলেন। টিকিট বিক্রি না করার অর্থ হল, সাধারণ দর্শকরা মাঠে ঢুকতে পারবেন না। ফাঁকা মাঠে খেলা হলে তা কি আইপিএলের উন্মাদনা আনবে? তা ছাড়া টিকিট বিক্রি করে প্রত্যেক ফ্র্যাঞ্চাইজিরই আয় হয়। সেটা তাদের কোষাগারে ঢুকবে না সেক্ষেত্রে। সেই ক্ষতি কি তারা মেনে নেবে? বোর্ড কি সেই ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দেবে?
তা ছাড়া প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গেই জড়িত একাধিক স্পনসর। দর্শকঠাসা গ্যালারিতে খেলা হলে যেমন দলগুলোর লাভ, তেমনই উপকৃত হয় স্পনসররাও। ফাঁকা স্টেডিয়ামে খেলা হলে স্পনসরদের আগ্রহ কমতে বাধ্য। আইপিএল মানে কিন্তু শুধুই ম্যাচ নয়। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের তরফে থাকে প্রচারের নানা অনুষ্ঠান। স্পনসরদের তরফেও থাকে নানা অনুষ্ঠান। যদি ক্রিকেটপ্রেমীদের জমায়েতই না করা যায়, তা হলে সেগুলোও অর্থহীন হয়ে উঠবে।
অবশ্য ফাঁকা স্টেডিয়ামে যে খেলা হচ্ছে না, তা নয়। বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাসের আক্রমণে এর মধ্যেই অনেক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বাতিল হয়েছে বা পিছিয়ে গিয়েছে। অনেক খেলা হচ্ছে ফাঁকা স্টেডিয়ামেও। ২৯ মার্চ থেকে শুরু হতে চলা আইপিএল-এর ভবিতব্যও কি তাই? যদিও বোর্ডের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে কোনও নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি। শনিবারের বৈঠকেই সবদিক থেকেই হতে চলেছে গুরুত্বপূর্ণ। সেদিনই বোঝা যাবে আইপিএলের ভবিষ্যৎ কী। তবে এখন যা পরিস্থিতি, তাতে সৌরভের বোর্ডই কঠিন পিচে দাঁড়িয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy