Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
IPL 2020

২২ বলে ৫৫, রাজস্থানের বিরুদ্ধে অবিশ্বাস্য ইনিংসে জয় ছিনিয়ে আনলেন ডিভিলিয়ার্স

১৭৮ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি ব্যাঙ্গালোরের।

ছয় মেরে জিতিয়ে উচ্ছ্বসিত ডিভিলিয়ার্স। ছবি: আইপিএল।

ছয় মেরে জিতিয়ে উচ্ছ্বসিত ডিভিলিয়ার্স। ছবি: আইপিএল।

সংবাদ সংস্থা
দুবাই শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২০ ১৫:২৭
Share: Save:

দুরন্ত এবি ডিভিলিয়ার্স। অসাধারণ দক্ষতায় প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে জয় ছিনিয়ে আনলেন শেষ ওভারে। ২ বল বাকি থাকতে রাজস্থান রয়্যালসকে (১৭৭-৬) ৭ উইকেটে হারাল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (১৭৯-৩)। ২২ বলে আক্রমণাত্মক ৫৫ রানের ইনিংসে তফাত গড়ে দিলেন ডিভিলিয়ার্স। তাঁর ইনিংসে ছিল ৬টি ছয় ও ১টি চার।

রান তাড়ায় এক সময় প্রবল চাপে ছিল ব্যাঙ্গালোর। পর পর দু’বলে ফিরেছিলেন দুই সেট ব্যাটসম্যান দেবদত্ত পাড়িকল ও বিরাট কোহালি। প্রথমে ১৩তম ওভারের শেষ বলে রাহুল তেওয়াটিয়ার ডেলিভারিতে মারতে গিয়ে আউট হয়েছিলেন পাড়িকল (৩৭ বলে ৩৫)। তার পর ১৪তম ওভারের প্রথম বলে কার্তিক ত্যাগীকে মারতে গিয়ে আউট হয়েছিলেন বিরাট (৩২ বলে ৪৩)।

তাঁর ক্যাচ দুর্দান্ত ভাবে ধরেছিলেন তেওয়াটিয়া। ডিপ মিড উইকেটে মেরেছিলেন কোহালি। বল ধরে পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে শূন্যে ছুড়ে দিয়েছিলেন তিনি। ভারসাম্য ফিরে আসার পর তা ধরলেন। পাড়িকল ও বিরাট, দু’জনকে ফেরানোর ক্ষেত্রেই অবদান ছিল তেওয়াটিয়ার।

১৭৮ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি ব্যাঙ্গালোরের। চতুর্থ ওভারে শ্রেয়স গোপালের বলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছিলেন অ্যারন ফিঞ্চ (১১ বলে ১৪)। ২৩ রানে পড়েছিল প্রথম উইকেট। ৪ ওভারের শেষে বোর্ডে উঠেছিল ২৭ রান। পাওয়ারপ্লে-র ৬ ওভারের পর তা দাঁড়িয়েছিল ৪৭। ৯ ওভারে সেটাই হয়েছিল ৬৪। এই সময়ে রাজস্থান তুলেছিল ৩ উইকেটে ৭৬।

দেবদত্ত পাড়িকল ও বিরাট কোহালি এই সময়ে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বড় শট আসছিল না। চাপে পড়ে রাহুল তেওয়াটিয়াকে মারতে গিয়ে ফিরেছিলেন পাড়িকল ১০২ রানেই পড়েছিল তৃতীয় উইকেট। এবং আগের ম্যাচের মতো ছয়ে নয়, এ দিন চার নম্বরে এসেছিলেন এবি ডিভিলিয়ার্স। কিন্তু, তাঁর সামনে ছিল কঠিন লক্ষ্য। শেষ ৬ ওভারে দরকার ৭৪ রানের। সেটাই ক্রমশ দাঁড়াল ৩ ওভারে ৪৫, ১২ বলে ৩৫ রানে।

আর এই সময়েই ফের নিজেকে চেনালেন এবিডি। কেন তাঁকে ‘৩৬০ ডিগ্রি’ ব্যাটসম্যান বলা হয়, তা বোঝালেন। জয়দেব উনাদকাটকে মিড উইকেট, লং অন ও স্কোয়ার লেগে পর পর মারলেন তিন ছয়। ওই ওভারেই গুরকিরাতও মারলেন বাউন্ডারি। ওই ওভারে উঠল ২৫ রান।ফলে, শেয ওভারে ব্যাঙ্গালোরের দরকার ছিল ১০ রান। শেষ ওভারে জোফ্রা আর্চারের প্রথম তিন বলে এসেছিল ৫ রান। চতুর্থ বলে ছয় মেরে ম্যাচে দাঁড়ি টানলেন ডিভিলিয়ার্স।

তার আগে প্রথমার্ধের শেষে দুরন্ত ক্যাচ নিয়েছিলেন শাহবাজ আহমেদ। বাংলার অলরাউন্ডারের অবিশ্বাস্য ক্যাচে শেষ ওভারে ফিরেছিলেন রাজস্থান অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। প্রধানত তাঁর ৫৭ রানের ইনিংসের সুবাদেই টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ছয় উইকেট হারিয়ে রাজস্থান তুলেছিল ১৭৭।

৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা স্টিভ স্মিথ শেষ পর্যন্ত থাকলে রাজস্থান রান নিশ্চিত ভাবে বাড়ত। কিন্তু ক্রিস মরিসের বলে সুইপার কভারে থাকা শাহবাজ যে দক্ষতায় স্মিথের ক্যাচ ধরেছিলেন তা প্রশংসা কাড়ল ক্রিকেটমহলের। ঠিক ভাবে ক্যাচ নেওয়া হয়েছে কি না, তা পরে রিপ্লেতে দেখেও নেওয়া হয়। যাতে দেখা যায়, বল কোনও ভাবেই জমি স্পর্শ করেনি।

এদিন রাজস্থানে দেখা গিয়েছিল নতুন ওপেনিং জুটি। জস বাটলারকে ব্যাটিং অর্ডারে পিছনে নামিয়ে শুরুতে বেন স্টোকসের সঙ্গে এসেছিলেন রবিন উথাপ্পা। পছন্দের ওপেনিংয়ে ফিরে এসে পুরনো মেজাজে ব্যাট করেছিলেন তিনি। তৃতীয় ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরকে চার বার সীমানার বাইরে পাঠিয়েছিলেন তিনি। চতুর্থ ওভারে ইসুরু উদানার বলেও চার-ছয় হাঁকিয়েছিলেন। আইপিএলে ৪৫০০ রানও পূর্ণ করেছিলেন তাঁর। মূলত, উথাপ্পার দাপটেই ৫ ওভার শেষে ৪৭ তুলেছিল রাজস্থান। ৩২ বলে এসেছিল পঞ্চাশ।

আরও পড়ুন: থাকল মশাল, লাল-হলুদ রংও, সামনে এল এসসি ইস্টবেঙ্গলের নতুন লোগো

আরও পড়ুন: দাদাগিরি এ বার আইসিসির পথে

তার পরই পড়েছিল প্রথম উইকেট। বেন স্টোকস (১৯ বলে ১৫) ফিরেছিলেন ক্রিস মরিসের বলে। পাওয়ারপ্লে-র ছয় ওভারে এক উইকেটে ৫২ তুলেছিল রাজস্থান।

এই পরিস্থিতি থেকে হঠাৎই ৬৯ রানে তিন উইকেট হারিয়েছিল রাজস্থান। ম্যাচের অষ্টম ওভারে আক্রমণে এসেই দু’উইকেট নিয়েছিলেন লেগস্পিনার যুজভেন্দ্র চহাল। প্রথমে ফিরেছিলেন উথাপ্পা (২২ বলে ৪১)। উথাপ্পার ইনিংসে ছিল সাতটা চার ও একটা ছয়। পরের বলেই চহাল ফিরিয়েছিলেন তিনে নামা সঞ্জু স্যামসনকে (৬ বলে ৯)।

রাজস্থানের ১০০ এসেছিল ৭৬ বলে। তিন উইকেট পড়ার পর দলকে টেনেছিলেন অধিনায়ক স্মিথ ও বাটলার। যখন মনে হচ্ছিল এই জুটি বড় রানের দিকে নিয়ে চলেছে ইনিংসকে, তখনই ঘটেছিল ছন্দপতন। মরিসের বলে চহালকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন বাটলার (২৫ বলে ২৪)। চতুর্থ উইকেটে দু’জনের জুটিতে যোগ হয়েছিল ৫৮ রান।

ধীরে শুরু করে ক্রমশ গতি বাড়িয়েছিলেন স্মিথ। প্রতিযোগিতায় এটা তাঁর তৃতীয় পঞ্চাশ। কঠিন অবস্থা থেকে তিনি ভরসা দিয়েছিলেন দলকে। অধিনায়কোচিত ইনিংসে রাজস্থান রয়্যালসকে পৌঁছে দিয়েছিলেন স্বস্তির অবস্থানে। দুরন্ত ক্যাচে শাহবাজ আহমেদ তাঁকে না ফেরালে আরও ভাল জায়গায় থাকত তারা। স্মিথের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ১টি ছয়। রাহুল তেওয়াটিয়ার সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৪৬ রান যোগ করেছিলেন তিনি। তেওয়াটিয়া ১১ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকলেন। ব্যাঙ্গালোরের সেরা বোলার ছিলেন মরিস। ২৬ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। চহাল ৩৪ রানের বিনিময়ে নিয়েছিলেন ২ উইকেট।

শনিবার আইপিএলে অভিষেক হয়েছিল বাংলার অলরাউন্ডার শাহবাজ আহমেদের। এ দিন ব্যাঙ্গালোরের হয়ে কোটিপতি লিগে প্রথম বার নেমেছিলেন তিনি। টস হেরে দল ঘোষণার সময় আরসিবি অধিনায়ক বিরাট কোহালির তাঁকে আকর্ষণীয় প্রতিভা বলে চিহ্নিত করেছিলেন। তবে বাঁ-হাতি স্পিনে বিশেষ সাফল্য পেলেন না। দুই ওভারে দিলেন ১৮ রান। যদিও নিলেন দুরন্ত ক্যাচ।

টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। স্মিথ জানিয়েছিলেন, বড় স্কোর খাড়া করাই তাদের লক্ষ্য। রাজস্থান দলে কোনও পরিবর্তন হয়নি। তবে ব্যাঙ্গালোর দলে দুটো পরিবর্তন হয়েছিল। খেলেননি মহম্মদ সিরাজ ও শিবম দুবে। পরিবর্তে এসেছিলেন গুরকিরাত সিংহ ও শাহবাজ।

অন্য বিষয়গুলি:

Royal Challengers Bangalore IPL 2020 Rajasthan Royals Shahbaz Ahmed
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy