এক ফ্রেমে নারিন-ম্যাক্সওয়েল। নারিন শেষ ওভারে জেতালেন কলকাতাকে। পঞ্জাবকে জেতাতে পারলেন না ম্যাক্সওয়েল।
নাটকীয় জয়। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হাতের মুঠো থেকে জয় ছিনিয়ে নিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। টানটান উত্তেজনার মধ্যে জয় এল দুই রানে। কলকাতার ছয় উইকেটে ১৬৪ রানের জবাবে পঞ্জাব পাঁচ উইকেট হারিয়ে থামল ১৬২ রানে।
শেষ ওভারে সুনীল নারিনের বলে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের দরকার ছিল ১৪। ক্রিজে ছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মনদীপ সিংহ। পঞ্চম বলে মনদীপ (১ বলে ০) ক্যাচ দিয়ে ফেরার পর ষষ্ঠ বলে সাত রান দরকার ছিল পঞ্জাবের। সুপার ওভারের জন্য দরকার ছিল ছয় রান। কিন্তু ম্যাক্সওয়েলের (৫ বলে অপরাজিত ১০) শট সীমানার একটু আগে পড়ল। বল যে ভাবে উড়েছিল, সুপার ওভারই হতে চলেছে বলে মনে হচ্ছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের। কিন্তু তা সীমানার ঠিক আগে পড়ল। এবং কলকাতাকে জিতিয়ে দিল দুই রানে।
What a win this for @KKRiders. They win by 2 runs and register another win in #Dream11IPL #KXIPvKKR pic.twitter.com/hdNC5pHenc
— IndianPremierLeague (@IPL) October 10, 2020
পঞ্জাবের প্রথম উইকেট পড়েছিল ১৪.২ ওভারে, ১১৫ রানে। ৩৯ বলে ৫৬ রানে ফিরেছিলেন ময়াঙ্ক আগরওয়াল। সেখান থেকে এই ম্যাচ কলকাতা জিতবে, ভাবতে পারেননি অতি বড় সমর্থকও। আর সেই প্রতিকূুল পরিস্থিতি থেকেই দুর্দান্ত ভাবে ম্যাচে ফিরেছিল দীনেশ কার্তিকের দল। পঞ্জাবের ইনিংসের ১৭ থেকে ১৯, এই তিন ওভারে নিকোলাস পুরান (১০ বলে ১৬), প্রভসিমরন সিংহ (৭ বলে ৪) ও লোকেশ রাহুল (৫৮ বলে ৭৪) ফিরে যান। আর এই তিন ওভারেই পঞ্জাব ক্রমশ হারিয়ে গেল ম্যাচ থেকে। এই ম্যাচে আমিরশাহিতে প্রথম বার দলে আসা প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ (২৯ রানে তিন উইকেট) ও অভিজ্ঞ সুনীল নারিন (২৮ রানে দুই উইকেট) শেষের দিকে চাপে ফেললেন পঞ্জাবকে।
রাহুল ও ময়াঙ্ক, পঞ্জাবের দুই ওপেনার তার আগে শাসন করছিলেন মাঠ। লোকেশ রাহুলের হাফ সেঞ্চুরি এসেছিল ৪২ বলে, পাঁচ বাউন্ডারির সাহায্যে। ময়াঙ্ক আগরওয়ালের হাফ সেঞ্চুরি এসেছিল ৩৩ বলে, ছয়টি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে। তুলনায় বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন ময়াঙ্কই (৩৯ বলে ৫৬)। কিন্তু প্রসিধের বলে শুভমনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন পঞ্চাশের পরেই।
And his good friend joins the party. Another half-century for @mayankcricket. His 7th in IPL.#Dream11IPL pic.twitter.com/FybbePshDr
— IndianPremierLeague (@IPL) October 10, 2020
১৬৫ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লোকেশ রাহুল ও ময়াঙ্ক আগরওয়াল পাওয়ারপ্লে-র ছয় ওভারে তুলেছিলেন ৪৭। এই দুই ওপেনারই দলের ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা। আর এই ম্যাচেও ধারাবাহিক থাকলেন দু’জনে। পঞ্জাবের ৫০ এসেছিল ৩৯ বলে। ১০ ওভারের শেষে রান দাঁড়াল ৭৬। ১০০ এল ৭৪ বলে। দুই ওপেনার একই ওভারে পৌঁছলেন পঞ্চাশে। রাহুলের এটা এ বারের আইপিএলে চতুর্থ অর্ধশতরান। অরেঞ্জ ক্যাপের মালিক তিনি। দল সাফল্য না পেলেও ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি টানছেন দলকে। কলকাতার বিরুদ্ধেও তার ব্য়তিক্রম হল না। রাহুল শেষ পর্যন্ত ট্র্যাজিক নায়ক হয়েই থাকলেন। ছয়টি চারে সাজানো তাঁর ইনিংস দাম পেল না আরও এক বার।
FIFTY!@klrahul11 brings up his fourth half-century in #Dream11IPL 2020. This is also 19th in IPL.#KXIPvKKR pic.twitter.com/OeRGh9qU2m
— IndianPremierLeague (@IPL) October 10, 2020
কলকাতার বোলিংকে শুরুতে ভেদশক্তিহীন দেখানোর পিছনে আন্দ্রে রাসেলের চোটও একটা বড় কারণ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের বলে রাহুলের ক্যাচ ধরতে গিয়ে হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন তিনি। বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন মাঠ থেকে। ফলে বল হাতে তাঁকে মিস করেছিল কলকাতা। পরে মাঠে ফিরেও বেশিক্ষণ থাকতে পারলেন না তিনি। বেরিয়ে গেলেন আবার। ফলে নীতিশ রাণার হাতে বল তুলে দিতে হত কেকেআর অধিনায়ককে। কিন্তু পরের দিকে বোলাররাই লড়াইয়ে ফেরালেন কলকাতাকে। এবং থ্রিলারের ভঙ্গিতে ছিনিয়ে আনলেন জয়।
WATCH - Russell drops catch, injures knee
— IndianPremierLeague (@IPL) October 10, 2020
Failed to take a catch and hurt himself while saving a boundary. We hope Russell is fine.https://t.co/95hDIEDzXt #Dream11IPL
তার আগে ঝড় তুলেছিলেন দীনেশ কার্তিক। মাত্র ২২ বলে পৌঁছেছিলেন পঞ্চাশে। তার মধ্যে ছিল সাতটি চার ও দুটো ছয়। কার্তিকের দাপটেই শুরুর ধাক্কা সামলে ছয় উইকেটে ১৬৪ তুলেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। কেকেআর অধিনায়ক ২৯ বলে করেছিলেন ৫৮। তিনি যখন ইনিংস শেষে ফিরছেন, হাততালি দিতে দেখা গেল শাহরুখ খানকে।
টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে শুরুটা ভাল হয়নি। চতুর্থ ওভারের মধ্যেই পড়ে গিয়েছিল দুই উইকেট। পাওয়ারপ্লে-তেও উঠল না রান। কলকাতার ৫০ এসেছিল ৫৫ বলে। ১০০ এল ১৪.৫ ওভারে। সেখান থেকে পাল্টা আক্রমণ শুরু করলেন দীনেশ কার্তিক ও শুভমন গিল। তার জন্যই দেড়শোর ওপারে গেল রান।
Captain #KKR brings up a fine half-century off 22 deliveries.
— IndianPremierLeague (@IPL) October 10, 2020
This is his 19th FIFTY in IPL.#Dream11IPL pic.twitter.com/Hf51S7uCnR
তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। মহম্মদ শামির বলে উড়ে গিয়েছিল আগের ম্যাচের নায়ক রাহুল ত্রিপাঠীর স্টাম্প। এদিন একেবারেই ছন্দে দেখাল না তাঁকে। অর্শদীপ সিংহকে দিয়েছিলেন মেডেন। শেষ পর্যন্ত ১০ বলে ৪ করে ফিরেছিলেন রাহুল। ১২ রানে পড়েছিল প্রথম উইকেট।
আরও পড়ুন: গেল ঝড় রুখতে তৈরি কলকাতা, বললেন বোলিং কোচ
আরও পড়ুন: ধোনির মেয়েকে ধর্ষণের হুমকি, কড়া প্রতিক্রিয়া ইরফান পাঠানের
পরের ওভারে ভুল-বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়েছিলেন নীতিশ রাণা (৪ বলে ২)। ৩.৩ ওভারে ১৪ রানে পড়েছিল দ্বিতীয় উইকেট। পঞ্জাবের বোলারদের দাপটে প্রথম ছয় ওভারে উঠেছিল মাত্র ২৫ রান। যা এ বারের আইপিএলে পাওয়ারপ্লে-তে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। এই সময়ে মাত্র চার বার সীমানায় বল পাঠিয়েছিলেন কেকেআর ব্যাটসম্যানরা।
Just the kind of start #KXIP needed.
— IndianPremierLeague (@IPL) October 10, 2020
At the end of the powerplay, the scoreboard reads 25/2
Live - https://t.co/1hhn0mYJ1t #Dream11IPL pic.twitter.com/cRKrgJ5fes
চারে নামা অইন মর্গ্যান (২৩ বলে ২৪) চেষ্টা করেছিলেন রানের গতি বাড়ানোর। তৃতীয় উইকেটে শুভমন গিলের সঙ্গে যোগ করেছিলেন ৪৯ রান। কিন্তু, মারতে গিয়ে রবি বিষ্ণোইয়ের গুগলিতে লং অনে তুলেছিলেন সহজ ক্যাচ। ১০.৪ ওভারে ৬৩ রানে পড়েছিল তৃতীয় উইকেট।
Bishnoi gets rewarded for smart bowling and gets the breakthrough!
— IndianPremierLeague (@IPL) October 10, 2020
Morgan departs after scoring 24 runs.
Live - https://t.co/1hhn0mYJ1t #Dream11IPL pic.twitter.com/PtXWNs3pHk
শুভমনের পঞ্চাশ এসেছিল ৪২ বলে। পাঁচটি চারের সাহায্যে। যা আইপিএলে তাঁর ষষ্ঠ অর্ধশতরান। একটা দিক ধরে রেখে দলকে টানছিলেন তিনি। মর্গ্যান ফেরার পর কেকেআর অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের সঙ্গে তাঁর জুটিতে যোগ হয়েছিল ৮২ রান। এই জুটিই পাল্টে দিয়েছিল ম্যাচের চেহারা। লড়াইয়ে ফিরিয়েছিল কলকাতাকে। শুভমন (৪৭ বলে ৫৭) ফিরেছিলেন রান আউট হয়ে। ১৭.৫ ওভারে ১৪৫ রানে চতুর্থ উইকেট পড়েছিল কলকাতার। পঞ্চম উইকেট পড়েছিল ১৫০ রানে। আন্দ্রে রাসেল (৩ বলে ৫) ফিরেছিলেন অর্শদীপ সিংহের বলে।
FIFTY!
— IndianPremierLeague (@IPL) October 10, 2020
That's a well made half-century by @RealShubmanGill. His 6th in IPL.#Dream11IPL pic.twitter.com/ZseqCaOLlN
আগের ম্যাচে সাতে নামা কার্তিক শনিবার এসেছিলেন পাঁচে। এবং আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা গেল তাঁকে। এ বারের আইপিএলে একেবারেই ছন্দে ছিলেন না তিনি। আসছিল না রান। উঠছিল নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্নও। কিন্তু এ দিনের ইনিংসে তাঁকে দেখা গেল আগের ফর্মে। শেষ ওভারের শেষ বলে রান আউট হলেন তিনি। তার আগেই অবশ্য অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলে ফেলেছেন কার্তিক।
Innings Break!
— IndianPremierLeague (@IPL) October 10, 2020
Half-centuries by Gill and DK propel #KKR to a total of 164/6 on the board.
Will #KXIP chase this down?
Scorecard - https://t.co/1hhn0mYJ1t #Dream11IPL pic.twitter.com/Bn43bA0TrU
এই ম্যাচে ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলেন ক্রিস গেল। এ বারের আইপিএলে খেলতে দেখা যায়নি তাঁকে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে তাঁকে দেখতে পাওয়ার কথা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু, এই ম্যাচেও ‘ইউনিভার্স বস’ গেলকে খেলায়নি পঞ্জাব। টস হেরে অধিনায়ক লোকেশ রাহুল জানিয়েছিলেন, পেসার শেলডন কটরেলের পরিবর্তে ক্রিস জর্ডন খেলছেন।কলকাতার প্রথম এগারোতেও এদিন একটি বদল হয়েছিল। শিবম মাভির পরিবর্তে এসেছিলেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ।
এই সাক্ষাতের আগে ছয় ম্যাচের মধ্যে পাঁচটাতেই হেরেছিল লোকেশ রাহুলের দল। কিংস ইলেভেন পঞ্জাব দুই পয়েন্ট নিয়ে ছিল সবার শেষে। এদিনও হারল। আর কলকাতা পাঁচ ম্যাচে হেরেছিল দুটোতে। ছয় পয়েন্টে তারা ছিল চতুর্থ স্থানে। এই জয়ের ফলে আট পয়েন্টে নিয়ে তারা উঠে এল তিন নম্বরে।
#KKR have won the toss and they will bat first against #KXIP.#Dream11IPL pic.twitter.com/J2C8tF6TQH
— IndianPremierLeague (@IPL) October 10, 2020
What are your predictions for #KXIPvKKR ?#Dream11IPL pic.twitter.com/KiTACVgcV6
— IndianPremierLeague (@IPL) October 10, 2020
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy