Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
ফাইটার
Laxmi Ratan Shukla

শাহরুখকে দুরন্ত জয় উপহার দিয়ে নায়ক বোলাররাই

যদিও চাপের মধ্যে থেকেই নিজের সেরাটা বেরিয়ে আসছে শুভমনের। শেষ দু’টি ইনিংসে প্রমাণ করে দিয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য ও তৈরি।

উচ্ছ্বাস: শাহরুখের উদ্দেশে হাত নাড়ছেন রাসেল ও কার্তিক। আইপিএল

উচ্ছ্বাস: শাহরুখের উদ্দেশে হাত নাড়ছেন রাসেল ও কার্তিক। আইপিএল

লক্ষ্মীরতন শুক্ল
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৪৯
Share: Save:

২০১৪ সালের আইপিএলের প্রথম কয়েকটি ম্যাচ হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। সে বার নাইটদের ড্রেসিংরুমের অন্যতম সদস্য ছিলাম আমি। কেকেআরের ম্যাচ হলে দর্শকাসনে একটি জায়গাও খালি থাকত না। এই ভিড় কিন্তু কোনও ক্রিকেটারকে দেখার জন্য নয়। শাহরুখ খানকে এক ঝলক দেখার জন্য মাঠে আসতেন দর্শকেরা।

কিন্তু এ বারের আইপিএলে সমর্থকদের প্রবেশ নিষেধ। না হলে বুধবার দুবাইয়ে বলিউডের বাদশাকে দেখার জন্য নিশ্চয়ই ভিড় করতেন তাঁর ভক্তেরা। শাহরুখকে অনেক দিন পরে দেখে মন ভাল হয়ে গেল। ওঁর সঙ্গে কাটানো কত মুহূর্ত মনে পড়ে যাচ্ছে একে একে। এসআরকে-র আগমনকে দারুণ ভাবে স্বাগতও জানাল নাইটরা। ম্যাচ শেষে শাহরুখকেও দেখা গেল উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছেন। আমরাও জিতে ফেরার সময় একই ভাবে অভিনন্দন জানাতেন শাহরুখ।

কেকেআরের ১৭৪-৬ দুবাইয়ের মাঠে বেশ ভাল স্কোর। সেটা আরও ভাল বোঝা গেল প্যাট কামিন্সরা বল করতে আসার পরে। নাইট পেসাররা দুরন্ত আক্রমণে চাপে ফেলে দিল রাজস্থান রয়্যালসকে। পর পর দু’টো ম্যাচ জিতে দারুণ ছন্দে থাকা সঞ্জু স্যামসন আর রাহুল তেওটিয়াকে বেশি দূর এগোতে দেয়নি নাইট বোলাররা। কামিন্স তো বটেই, তাঁর সঙ্গে দুই ভারতীয় তরুণ পেসার কমলেশ নাগারকোটি এবং শিবম মাভি— এই পেস ত্রয়ীর আগুন সামলাতেই সমস্যায় পড়ল রয়্যালস।

দুবাইয়ের পিচ দেখে মনে হয়েছে, শুরুর দিকে কিছুটা সাহায্য পাচ্ছিল পেসাররা। জফ্রা আর্চার ছিল স্বমহিমায়। ১৪৫ কিমি প্রতি ঘণ্টার বিষাক্ত ডেলিভারিও যেমন ওর হাত থেকে ধেয়ে আসছিল, তেমনই কার্তিককে ফিরিয়ে দিল সুন্দর লেগকাটারে। আর্চার ওর প্রথম তিন ওভারে মাত্র চার রান দিয়ে তুলে নেয় শুভমন গিল ও অধিনায়ক কার্তিকের উইকেট। সেখান থেকে নাইটদের ম্যাচে ফেরায় ‘ক্যাপ্টেন মর্গ্যান’। এবং অবশ্যই আন্দ্রে রাসেলের ইনিংস। রাসেল এ দিন ভয়ঙ্কর হতে হতেও থেমে গেল। তবে ১৪ বলে ২৪ এবং তিনটি ছক্কা নাইট ভক্তদের আশার আলো দিয়ে গেল যে, রাসেল ঝড় আসছে। ও আউট হওয়ার পরেও ইনিংসকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দিল অইন মর্গ্যান ২৩ বলে ৩৪ রান।

রয়্যালস ব্যাট করার সময়ে পাওয়ার প্লে-তে কামিন্সকে তিন ওভার টানা বল করানোটা আবার মাস্টারস্ট্রোক কার্তিকের। স্টিভ স্মিথের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট কামিন্স তুলে নেওয়ায় রান তাড়া করার মন্ত্রটাই হারিয়ে ফেলে রয়্যালস। তেওটিয়াও আগের দিনের দুরন্ত ইনিংস খেলতে পারেনি। বরুণ চক্রবর্তীর বিস্ময় স্পিনের সঙ্গে লড়াই করতে ব্যর্থ বিপক্ষের পাওয়ারহিটিং বিভাগ। চার ওভারে ২৫ রানে তুলে নিল তেওটিয়া ও আর্চারের উইকেট। অনবদ্য মাভি ও নগরকোটি। দুই তরুণ পেসারকে বোলিং করার সময় যে রকম চনমনে দেখিয়েছে, ফিল্ডিংয়েও এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়েনি। দুই ওভার বল করার পরে লং-অন অঞ্চল থেকে দৌড়ে গিয়ে নগরকোটি যে ক্যাচ নিয়ে আর্চারকে ফেরায়, তা আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সেরা। এক সময় ভারতীয় ক্রিকেটার তুলে আনার জন্যই শুরু হয়েছিল এই ক্রিকেট লিগ। যেটা এখন ফুলে-ফলে সমৃদ্ধ হতে দেখে আমি মুগ্ধ।

নাইটদের ব্যাটিংয়ে শুভমনের প্রশংসা করতেই হচ্ছে। সুনীল নারাইনের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে অসাধারণ খেলল। সুনীল গাওস্করও বলছিলেন, ‘‘এই ছেলেটা যেন আউট না হয়।’’ তবুও ওপেনিং জুটি নিয়ে ভাবতে হবে নাইট রাইডার্সকে। প্রতিযোগিতার শুরু থেকেই নারাইনকে দিয়ে এ রকম পরীক্ষা করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। রাহুল ত্রিপাঠির মতো ওপেনার বাইরে বসে আছে। কার্তিক ও রানা দু’জনেই ওপেন করতে পারে। তাদের মধ্যে কেউ শুভমনের সঙ্গে ব্যাট করতে নামলে তরুণ ব্যাটসম্যানের উপরে এতটা চাপ সৃষ্টি হয় না।

যদিও চাপের মধ্যে থেকেই নিজের সেরাটা বেরিয়ে আসছে শুভমনের। শেষ দু’টি ইনিংসে প্রমাণ করে দিয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য ও তৈরি। মাঝে রাসেলের ঝলক আর তার পরে শেষের দিকে মর্গ্যানের পরিণত ব্যাটিংয়ের জন্যই লড়াকু স্কোরে পৌঁছে গিয়েছিল কেকেআর। সেই পরিস্থিতির সদ্ব্যবহার করে রাজস্থানের বিধ্বংসী রূপকে নির্বিষ করে দিল কামিন্সরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy