বৈঠকের পর সৌরভ-জয়। পিটিআই
করোনাভাইরাসের জেরে পিছিয়ে যাওয়া আইপিএল যদি শেষ পর্যন্ত করা সম্ভব হয়, তা হলেও হয়তো প্রত্যেক বারের মতো লম্বা টুর্নামেন্ট করা সম্ভব হবে না। এমন ঘোষণা করে দিলেন স্বয়ং বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
শনিবার মুম্বইয়ে বোর্ডের দফতরে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক, কর্তাদের সঙ্গে বসেছিলেন সৌরভরা। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়, কী ভাবে করোনাভাইরাসের আক্রমণের জেরে আইপিএল করা যেতে পারে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিক শাহরুখ খান এসেছিলেন বৈঠকে। ছিলেন কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের নেস ওয়াদিয়া, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের আকাশ অম্বানি। সকলেই একমত হন, স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশ অনুসারে তাঁরা চলবেন। ক্রিকেটের আগে সুস্থতা রক্ষা করার দিকেই নজর দিতে হবে। তার জন্য যদি আইপিএলকে ছোট করতে হয়, মেনে নিতেই হবে। টিভি সম্প্রচারককেও জানিয়ে রাখা হয় যে, এ বারের আইপিএল ছোট হতে পারে।
কারও কোনও আপত্তি করার জায়গাই নেই যে-হেতু, সারা বিশ্ব জুড়ে এখন করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়াটাই সকলের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে। গোটা পৃথিবীতে প্রায় সব ধরনের কেলাধুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফুটবল থেকে ক্রিকেট, বাস্কেটবল, গল্ফ, টেনিস, সব বন্ধ। ইংল্যান্ডে প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বাতিল। স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি, সব দেশের ফুটবল লিগ বন্ধ। আমেরিকায় বিখ্যাত বাস্কেটবল লিগ এনবিএ স্থগিত। ক্রিকেটেও সব দেশ চলতি সিরিজ বাতিল করে দিয়েছে।
এই অবস্থায় আইপিএল পিছনো ছাড়া উপায়ও ছিল না সৌরভদের। ১৫ মার্চ থেকে শুরু করার পরিকল্পনা থাকলেও আদৌ তা সম্ভব হবে কি না, সেই সংশয় রয়েছে। সেই কারণেই সৌরভ এ দিন বলেছেন, ‘‘যদি আইপিএল ২০২০ হয়, তবে কাচছাঁট করে করতে হবে।’’ বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সামনে সৌরভের ঘোষণা, ‘‘যদি ১৫ এপ্রিল শুরু হয়, ১৫ দিন হাত থেকে চলে যাবে। তাই কাটছাঁট করতে হবে। কতটা কাটছাঁট হবে, কতগুলো ম্যাচ হবে, তা এই মুহূর্তে আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়।’’ যোগ করেন, মানুষের সুস্থতা এবং নিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে দেখতে হবে। ‘‘আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। ফের সব কিছু খতিয়ে দেখা হবে। সারা পৃথিবী এবং আমাদের দেশে যা হচ্ছে, তার কথা মাথায় রেখে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নিরাপত্তা এবং সুস্থতা সবার আগে। সরকারের নির্দেশিকা মেনে আমরা চলব।’’
ক্রিকেট বোর্ড এ দিন ঘরোয়া সব ম্যাচও স্থগিত রেখে দিয়েছে। যে কারণে ইরানি ট্রফি এখন হবে। চব্বিশ ঘণ্টা আগে আইপিএল পিছনোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আপাতত বাতিল করা হয়েছে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ান ডে সিরিজ। সারা পৃথিবীর স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে যে রকম ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে ১৫ এপ্রিল আইপিএল শুরু করা আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা কম, বরং খারাপের দিকে যাতে না যায়, সেই চেষ্টা চালাতে হবে। সৌরভ বলেন, ‘‘আমরা টিমের মালিকদের বলেছি, বর্তমানে পরিস্থিতি কী। কোন জায়গায় আমরা দাঁড়িয়ে। এই মুহূর্তে আইপিএল শুধু পিছিয়েছে। এর পর আবার সব কিছু খতিয়ে দেখা হবে। প্রত্যেক সপ্তাহে আমরা পরিস্থিতি যাচাই করব।’’ বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলে দিতে ভোলেননি, ‘‘আমরা সবাই চাই আইপিএল হোক। কিন্তু সবার আগে সুস্থতা এবং নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতেই হবে।’’
আইপিএলের কেন্দ্রের মধ্যে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক এবং দিল্লিতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ সব চেয়ে বেশি। যদি বা আইপিএল করা সম্ভব হয়, এই তিন রাজ্যে ম্যাচ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই বিকল্প কেন্দ্র ভেবে রাখা হচ্ছে। একই দিনে দু’টি ম্যাচ (যাকে বলা হয় ডাবল হেডার) বেশি করে দিয়ে ঘাটতি মেটানোর ভাবনাও রয়েছে সৌরভদের। তবে সবার আগে সবুজ সংকেত পেতে হবে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যে, করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ কেটেছে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যেতে পারে। সেই সবুজ সংকেত আগামী এক মাসের মধ্যে এসে যাবে, এমন নিশ্চয়তা এই মুহূর্তে কেউ দিতে পারছেন না। তাই আইপিএলের ভবিষ্যৎ
আপাতত মেঘাচ্ছন্নই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy