Advertisement
E-Paper

‘ঋতুকালীন ব্যথা নিয়েও খেলেছি’, ক্রীড়াজগতে মেয়েদের সমস্যা নিয়ে আরও সচেতনতা চান রানি

শাহাবাদের হকি অ্যাকাডেমিতে মাত্র ছ’বছর বয়সে হাতে স্টিক তুলে নেন রানি। তাঁর খেলায় ঋতুচক্রের প্রভাব যে পড়বে সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। কিন্তু সেই সমস্যা কী ভাবে কাটাবেন, বুঝতে পারছিলেন না।

Rani Rampal

শাহাবাদের হকি অ্যাকাডেমিতে মাত্র ছ’বছর বয়সে হাতে স্টিক তুলে নিয়েছিলেন রানি। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৩ ১৫:৩৪
Share
Save

রানি রামপালের বাড়ি হরিয়ানার গ্রাম শাহাবাদে। ছোটবেলায় ভারতের প্রাক্তন হকি অধিনায়ককে কেউ ঋতুচক্র নিয়ে কোনও কথা বলেনি। তাঁর শরীরে কী হতে পারে সেটাও বলেনি কেউ। প্রথম বার যে দিন তাঁর ঋতুচক্র শুরু হয়, মা এসে কাপড় ব্যবহার করতে বলেছিল। সেখানেই শেষ হয়ে যায় ঋতুচক্র নিয়ে যাবতীয় কথা। রানি মনে করেন ভারতের গ্রামে এটাই সমস্যার। মেয়েদের এই বিষয় কোনও শিক্ষা দেওয়া হয় না।

শাহাবাদের হকি অ্যাকাডেমিতে মাত্র ছ’বছর বয়সে হাতে স্টিক তুলে নিয়েছিলেন রানি। তাঁর খেলায় ঋতুচক্রের প্রভাব যে পড়বে সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। কিন্তু সেই সমস্যা কী ভাবে কাটাবেন, বুঝতে পারছিলেন না। তাঁকে শেখানোর মতো কাউকে পাশেও পাননি রানি। ২৮ বছরের হকি তারকা মনে করেন, তাঁর দায়িত্ব মেয়েদের এই বিষয়ে সচেতন করা এবং শিক্ষিত করা। রানি বলেন, “আমি যেটার সম্মুখীন হয়েছি, আমার দায়িত্ব দেখা যাতে সেটা আমার ভাইঝিদের হতে না হয়। তাই ঋতুচক্র নিয়ে ওদের সঙ্গে কথা বলি। ওদের বোঝাই যে, মেয়েদের শরীরে এটা হওয়া খুবই সাধারণ একটা ঘটনা। ওরা যাতে কোনও অশিক্ষার মধ্যে পড়ে না থাকে সেটার খেয়াল রাখি।”

খেলার জগতে সব মেয়েকেই এই ঋতুচক্রের সময়ে সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। টোকিয়ো অলিম্পিক্সের সময়ে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটি ঘোষণা করেছিল যে, ছেলে এবং মেয়েরা প্রায় সমান সমান সংখ্যায় অংশগ্রহণ করেছে। ১৯৭৬ সালে মাত্র ২০ শতাংশ মহিলা খেলোয়াড় অংশ নিয়েছিল। অংশগ্রহণ বাড়লেও মেয়েদের ঋতুচক্র নিয়ে স্পোর্টস মেডিসিনেও খুব বেশি কিছু নেই। মেয়েদের সমস্যা নিয়ে বেশি গবেষণা না থাকায় তাঁদেরই অসুবিধা হচ্ছে বলে মনে করেন রানি।

হকিতে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া রানি বিভিন্ন সময়ে ঋতুকালীন সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। কখনও অনুশীলন করতে গিয়ে, কখনও ম্যাচ খেলতে গিয়ে। রানি বলেন, “আমার কাছে ঋতুচক্র খুব যন্ত্রণার। এক এক সময় এমন ব্যথা হয় যে, মনে হয় দম নিতে পারছি না। কিন্তু নিজেকে বোঝাই যে, এটা সব মেয়ের হয়, এটা সাধারণ একটা ব্যাপার। আমি দেশের হয়ে খেলি। প্রতিটা অনুশীলনে এই মানসিকতা নিয়ে যাই যে, নিজের সেরাটা দেব।”

রানি মনে করেন অনুশীলনের সময় যদি ঋতুচক্রের জন্য পিছিয়ে আসা হয়, তা হলে সেটাই অভ্যেস হয়ে যাবে। রানি বলেন, “ঋতুচক্রের জন্য অনুশীলন করব না ভাবি, তা হলে সেটাই করতে থাকব। মানসিক ভাবে নিজেকে তৈরি করতে হবে। এটা কঠিন। অনেক বছর লেগেছে আমার এটা সামলাতে। ঋতুচক্রের প্রথম দিন সব থেকে বেশি যন্ত্রণা হয়। সেই দিন যদি কোনও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থাকে তা হলে সমস্যা হয়। সেই সময় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে কিছু ওষুধ খাই যা যন্ত্রণা কমায়। তাতে ম্যাচে নিজের সেরাটা দিতে সুবিধা হয়।”

রানি জানিয়েছেন, তাঁকে ছোটবেলায় যে ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে, তা অনেকটাই এখন বদলেছে। দলের সিনিয়র খেলোয়াড়েরা বুঝিয়ে দিয়েছেন ঋতুচক্রের সময় কী ভাবে তা সামাল দিতে হবে। রানি বলেন, “সিনিয়রেরা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের কথা বলত। ধীরে ধীরে ব্যাপারটা বুঝতে পারি। কিন্তু সেই সময় স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম নিয়ে চিন্তা করতে হত। সিনিয়ররা টাকা দিয়ে সাহায্য করত। এখন যদিও অনেক কিছু পাল্টে গিয়েছে। যদিও গ্রামের দিকে এখনও সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।”

rani rampal Indian Women Hockey menstrual cycle

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}