হিটম্যান: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রাজকোটে বিধ্বংসী রোহিত।—ছবি এএফপি।
একশোতম ম্যাচে একাই একশো রোহিত শর্মা। সেঞ্চুরি হয়তো ১৫ রানের জন্য আসেনি, কিন্তু বৃহস্পতিবার ভারত অধিনায়ক একাই হারিয়ে দিল বাংলাদেশকে। নিজের একশোতম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এমন একটা ইনিংস খেলল যা সেঞ্চুরির চেয়ে কম নয়।
রাজকোটে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ আটকে যায় ২০ ওভারে ছয় উইকেটে ১৫৩ রানে। জবাবে ২৬ বল বাকি থাকতে আট উইকেটে ম্যাচ জিতে নিল ভারত। যার ফলে টি-টোয়েন্টি সিরিজ এখন ১-১ অবস্থায়। রোহিত আউট হয় ৪৩ বলে ৮৫ রান করে। মারে ছ’টি চার, ছ’টি ছয়।
গত কয়েক দিন ধরে শুনছিলাম, রাজকোটে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় ‘মহা’। এ দিন দেখলাম, ‘মহা’ নয়, আছড়ে পড়ল রোহিত-ঝড়। যে ঝড়ে উড়ে গেল বাংলাদেশ। আমরা যখন রোহিতের সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিলাম, মারতে গিয়ে ফিরে গেল ও।
রোহিতের ইনিংসটা দেখার পরে একটা কথা বলব। ও কিন্তু ছয় মারার ব্যাপারে ক্রিস গেলকেও টপকে গিয়েছে। কেন বলছি এ কথা? ক্যারিবিয়ান ওপেনারকে বেশি বিধ্বংসী দেখায় টি-টোয়েন্টি লিগগুলোয়। দেশের হয়ে অতটা নয়। রোহিত কিন্তু ক্লাব দল হোক বা দেশ, যে জার্সিই পরুক না কেন, সমান বিধ্বংসী।
কোনও সন্দেহ নেই, রাজকোটের বাইশ গজে ব্যাটসম্যানরা সাহায্য পেয়েছে। কিন্তু তাতেও বাকি ব্যাটসম্যানরা রোহিতের ধারে কাছে আসতে পারেনি। শিখর ধওয়ন আর রোহিত যখন ব্যাট করছিল, দু’জনের দক্ষতার তফাতটা বোঝা যাচ্ছিল। বাংলাদেশের সেরা বোলার পেসার আল আমিন। ওকে খেলতে ধওয়ন সমস্যায় পড়ছিল। কিন্তু রোহিত নয়। রোহিতের দুটো শট এখনও ভাসছে চোখের সামনে। একটা মুস্তাফিজুর রহমানকে মারা মিড অফের উপর থেকে ছয়। আর একটা আল আমিনের বল শেষ মুহূর্তে ব্যাটে আলতো করে ছুঁইয়ে থার্ডম্যান দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠানো। মোসাদ্দেক হোসেনও সম্ভবত এই ম্যাচটা ভুলবে না। বাংলাদেশের এই অফস্পিনারের পরপর তিনটে বলে তিনটে ছয় মারল রোহিত।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে তরুণদের এখন দেখে নিতে চাইছে ভারত। বাংলাদেশ সিরিজেও সেই পরীক্ষাটা চলছে। যে পরীক্ষায় দীপক চহারকে কিন্তু ভাল নম্বর দিতেই হবে। নতুন বলে তো সুইংটা ভালই করায়, এ দিন দেখলাম পুরনো বলে ডেথ ওভারেও ভাল বল করে গেল।
কিন্তু এই জয়ের মধ্যেও দুটো কাঁটা খচখচ করছে। এক, ঋষভ পন্থের উইকেটকিপিং। দুই, খলিল আহমেদের বোলিং। ঋষভ কিন্তু এ দিনও একেবারে ছেলেমানুষের মতো একটা ভুল করল। কিপিংয়ের প্রাথমিক পাঠ শেখায় বল উইকেট পেরনোর আগে ধরা যাবে না। যদি না ব্যাটসম্যানের প্যাডে বা গায়ে লাগে। বল ধরার সময় উইকেটকিপারের গ্লাভসের কোনও অংশ যদি উইকেটের ও-পারে চলে যায়, তা হলে বল নো হয়ে যাবে। এ দিন যেমন হল। যুজবেন্দ্র চহালের বলে লিটন দাস স্টাম্পড হয়েও যে কারণে বেঁচে গেল তৃতীয় আম্পায়ার নো বল ডাকায়। ঋষভের মতোই অনেক সুযোগ পাচ্ছে খলিল আহমেদও। কিন্তু কাজে লাগাচ্ছে কোথায়! এ দিন ওর ২৪টা বলের মধ্যে ২১টাই শর্ট অব লেংথ ডেলিভারি। যার জেরে চার ওভারে ৪৪ রান দিয়ে সমস্যা বাড়িয়ে ফেলেছিল।
স্কোরকার্ড
বাংলাদেশ ১৫৩-৬ (২০)
ভারত ১৫৪-২(১৫.৪)
বাংলােদশ
লিটন রানআউট (পন্থ) ২৯•২১
নইম ক শ্রেয়স বো ওয়াশিংটন ৩৬•৩১
সৌম্য স্টা পন্থ বো চহাল ৩০•২০
মুশফিকুর ক ক্রুণাল বো চহাল ৪•৬
মাহমুদুল্লা ক শিবম বো চাহার ৩০•২১
আফিফ ক রোহিত বো খলিল ৬•৮
মোসাদ্দেক ন.আ ৭•৯
আমিনুল ন.আ ৫•৫
অতিরিক্ত ৬
মোট ১৫৩-৬ (২০)
পতন: ১-৬০ (লিটন, ৭.২), ২-৮৩ (নইম, ১০.৩), ৩-৯৭ (মুশফিকুর, ১২.১), ৪-১০৩ (সৌম্য, ১২.৬), ৫-১২৮ (আফিফ, ১৬.৩), ৬-১৪২ (মাহমুদুল্লা, ১৮.৩)।
বোলিং: দীপক চাহার ৪-০-২৫-১, খলিল আহমেদ ৪-০-৪৪-১ ওয়াশিংটন সুন্দর ৪-০-২৫-১, যুজবেন্দ্র চহাল ৪-০-২৮-২, শিবম দুবে ২-০-১২-০, ক্রুণাল পাণ্ড্য ২-০-১৭-০।
*স্কোর অসম্পূর্ণ
ভারত
রোহিত ক মিঠুন বো আমিনুল ৮৫•৪৩
ধওয়ন বো আমিনুল ৩১•২৭
রাহুল অপরাজিত ৮•১১
শ্রেয়স অপরাজিত ২৪•১৩
মোট ১৫৪-২ (১৫.৪)
পতন: ১-১১৮ (ধওয়ন, ১০.৫), ২-১২৫ (রোহিত, ১২.২)।
বোলিং: মুস্তাফিজ়ুর রহমান ৩.৪-০-৩৫-০, শইফুল ইসলাম ২-০-২৩-০, আল-আমিন হুসেন ৪-০-৩২-০, আমিনুল ইসলাম ৪-০-২৯-২, আফিফ হোসেন ১-০-১৩-০, মোসাদ্দেক হোসেন ১-০-২১-০।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy